• American University Protests: ম্যানহাটনেও চলছে ধরপাকড়, বিক্ষোভ ছড়াল অস্ট্রেলিয়াতেও
    এই সময় | ০৪ মে ২০২৪
  • নিউ ইয়র্ক: আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ধরপাকড় থামল না শুক্রবারেও। উল্টে ক্যাম্পাস অস্থিরতার জের এসে পৌঁছে গেল ডাউনটাউন ম্যানহাটনে। এ দিন ভোর থেকে ম্যানহাটনে নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস থেকে প্যালেস্তাইনপন্থী ১৩ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কাছেই নিউ স্কুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও ৪৩ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে NYPD (নিউ ইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্ট)। বৃহস্পতিবার UCLA ক্যাম্পাসে ব্যাপক ধরপাকড়ের পর এ দিন সেখানে পরিস্থিতি অনেকটা শান্ত ছিল। তবে ইজরায়েল বিরোধী বিক্ষোভের আঁচ আমেরিকা ইউরোপের সীমানা পেরিয়ে আছড়ে পড়েছে অস্ট্রেলিয়াতেও।শুক্রবার ভোর থেকেই নিউ ইয়র্কের দু'টি ক্যাম্পাসে বাড়তে থাকে পুলিশের আনাগোনা। কলম্বিয়া, ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার মতো এখানেও ক্যাম্পাসে তাঁবু খাটিয়ে গত কয়েকদিন ধরে গাজায় যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন প্রতিবাদী পড়ুয়ারা। গত ১৭ এপ্রিল কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর তা ছড়িয়ে পড়ে আমেরিকার অন্তত ৪০টি ক্যাম্পাসে। তার মধ্যে রয়েছে ইয়েল, এমআইটি, প্রিন্সটন, নিউ ইয়র্কের মতো আইভি লিগের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি। মঙ্গলবার রাত থেকে নিউ ইয়র্কের বিভিন্ন ক্যাম্পাস থেকে ২৮২ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আর দেশ জুড়ে সংখ্যাটা ২২০০ ছাড়িয়েছে। এই বিপুল সংখ্যক গ্রেপ্তারির মধ্যে কতজন ছাত্রছাত্রী, তা জানানোর জন্য চাপ বাড়ছিল নিউ ইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামসের উপর।

    এই পরিস্থিতিতে UCLA-র ঘটনারই পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে দ্রুত ক্যাম্পাস থেকে প্রতিবাদকারীদের হটিয়ে দেওয়ার পথ বেছে নেয় পুলিশ। এ দিন NYPD-র ডেপুটি কমিশনার কাজ় ডট্রি বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসকে দখলমুক্ত করার আর্জি জানিয়েছিলেন। আমরা তাই সেখানে ঢুকেছি।' এ দিন পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে দেশজুড়ে গ্রেপ্তার হওয়া বিক্ষোভকারীদের ২৯% সরাসরি কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত নন। তাতেও অবশ্য বিপুল সংখ্যক ছাত্রছাত্রীর গ্রেপ্তারির আশঙ্কা কমেনি। পুলিশের দাবি, বহিরাগতদের উস্কানিতে এই ধরনের বিক্ষোভে মেতেছে পড়ুয়ারা।

    এর মধ্যেই মঙ্গলবার রাতে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভকারীদের হটাতে গিয়ে এক পুলিশ অফিসারের গুলি চালানোর ঘটনা সামনে আসায় উত্তেজনা বেড়েছে। সেই ঘটনার সাফাই দিতে গিয়ে পুলিশ জানিয়েছে নিজের সার্ভিস রিভলভারের সঙ্গে থাকা ফ্ল্যাশগান চালাতে গিয়ে ট্রিগারে হাত পড়ে যায় ওই অফিসারের। নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে গোটা ঘটনায় তীব্র অস্বস্তিতে জো বাইডেনের সরকার। সেই অস্বস্তি আরও বেড়েছে এ দিন পুলিৎজার পুরস্কার বোর্ডের এক বিবৃতিতে। কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়েই পুলিৎজার প্রাইজ বোর্ডের অফিস। শুক্রবার ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে উপলক্ষ্যে সেই বোর্ডের জারি করা এক বিবৃতিতে পুলিশি হিংসা ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে ক্যাম্পাস থেকে বেরনো পত্রপত্রিকার ছাত্র-সাংবাদিকদের ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে। নিজেদের জীবন ও কেরিয়ারের ঝুঁকি নিয়েও গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা ক্যাম্পাস বিক্ষোভের হাল হকিকত যে ভাবে ওই পড়ুয়া-সাংবাদিকরা তুলে ধরেছেন, তারই স্বীকৃতি দিয়েছে পুলিৎজার কমিটি।

    এর মধ্যে আমেরিকার অস্বস্তি বাড়িয়ে ক্যাম্পাস বিক্ষোভের বিষয়টিকে চরম গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করছে চিন, রাশিয়া, ইরান ও গোটা আরব দুনিয়া। এর মধ্যেই ক্ষোভের আগুন ছড়িয়েছে ইউরোপে। শুক্রবারই সেই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে অস্ট্রেলিয়াতেও। সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে প্যালেস্তাইনে যুদ্ধবিরোধী ছাত্রগোষ্ঠীর সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয় বিরুদ্ধ ছাত্রগোষ্ঠীর। দেশের আরও বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়েও ছড়িয়েছে বিক্ষোভের আগুন।
  • Link to this news (এই সময়)