'বাংলাকে তছনছ করেছে তৃণমূল! বাঙালির হৃদয়ে এখন BJP', বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত মোদীর
এই সময় | ০৪ মে ২০২৪
বাংলায় অনেক বড় পরিবর্তন হবে। খুব শীঘ্রই তা হবে। এখন কেবলমাত্র সময়ের অপেক্ষা। লোকসভা ভোটের মাঝে এমনটাই মন্তব্য করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, 'তৃণমূলের কারণে বাংলা নষ্ট হয়ে গিয়েছে।' তবে BJP-র হাত ধরেই যে বাংলার পুনর্জাগরণ হবে, তা নিয়ে সম্পূর্ণ আশাবাদী নরেন্দ্র মোদী। লোকসভা নির্বাচনে BJP বাংলা থেকে ভালো ফল করবে বলেই জানিয়েছেন তিনি।টিভি-৯ নেটওয়ার্ককে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে বাংলা প্রসঙ্গে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে নরেন্দ্র মোদীকে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে তিনি বলেন, 'BJP-কে যতই গালি দিক, নোটের তাড়া কোথায় লুকোবে? সকলের চোখের সামনে থেকে কাঁড়ি কাঁড়ি নোট বেরিয়েছে। খাটের তলা থেকে নোট বেরিয়েছে। গোটা দেশ সেই দৃশ্য দেখেছে। সরকারের বিরুদ্ধে ওঠা এই পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতির অভিযোগে মানুষের মনে ঘৃণা তৈরি হয়েছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে পুরো শক্তি নিয়ে লড়াই করছে মোদী সরকার।'
মোদীর মুখে বারবার শোনা যায় নারী ক্ষমতায়নের কথা। তিনি বলেন, 'ভারতের ৫০ শতাংশ জনসংখ্যা দেশের উন্নতিতে অবদান রাখলে উন্নতির পথ আরও সুগম হবে। মহিলাদের ক্ষমতায়নের জন্য সবথেকে বেশি চেষ্টা করি আমরা। দেশের মহিলাদের ক্ষমতা আছে ভারতকে বদলানোর। গুজরাটে মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময়ও আমি মহিলাদের গুরুত্ব দিতাম। আমূল কিংবা লিজ্জত পাপড় যে কোনও বড় ব্র্যান্ডের সঙ্গে পাল্লা দেয়। দুটি সংস্থাই মহিলারা চালায়।' এ প্রসঙ্গে সন্দেশখালির প্রসঙ্গ টেনে মোদী আরও বলেন, 'সন্দেশখালিতে এবার প্রতিবাদী মুখ রেখা পাত্রকে প্রার্থী করা হয়েছে। রেখা দেবীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছি।' রেখা পাত্রর প্রশংসায় পঞ্চমুখ মোদী বলেন, 'আমি মনে করি এক নারীর হাত ধরে যে অত্যাচার চলছে বাংলায় তার উত্তর দেবে নারী শক্তিই। একজন নারী মসনদে বসে থাকার পরেও বাংলার যা অবস্থা তাতে হতাশ মহিলারা। পুরুষরাও হতাশ। বাংলায় অনেক বড় পরিবর্তন হবে। শুধু সময়ের অপেক্ষা।'
গোটা দেশের পাশাপাশি লোকসভা ভোটের আবহে রাজনৈতিক উত্তেজনার পারদ চড়েছে বাংলাতেও। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই বাংলার ৪২ আসনের মধ্যে ১৮ আসন পেয়েছিল BJP। পদ্ম শিবিরের বিজয়রথ এবার আরও এগোবে বলেই আশাবাদী মোদী। এবার বাংলা থেকে ৩০ থেকে ৩৫ আসন চাইছে মোদী ব্রিগেড। বাংলায় এসে বঙ্গ BJP-র জন্য টার্গেট সেট করে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তবে মোদী অবশ্য বাংলা থেকে ফুল মার্কস চাইছেন। তিনি আশাবাদী বাংলায় এবার ৪২-এ ৪২ পাবে গেরুয়া শিবির। বিগত কয়েক সপ্তাহে দফায় দফায় বাংলায় এসেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী।
তৃণমূলকে তোপ দাগার পাশাপাশি নরেন্দ্র মোদী ফুঁসে উঠেছেন বামেদের বিরুদ্ধেও। মোদীর সাফ দাবি, 'বর্তমানে তৃণমূলের জন্যই শেষ হয়ে যাচ্ছে বাংলা। কিন্তু, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে বাংলাকেই সবার আগে এগিয়ে আসতে হবে। ভারতকে বিকশিত করতে হলে দেশের কিছু রাজ্যর ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে যে রাজ্যগুলির সবথেকে বেশি ক্ষমতা রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম বাংলা। ভারতের ইতিহাসের দিকে তাকালেও দেখা যাবে সামাজিক দিক থেকে উন্নতি বাংলার হাত ধরে হয়েছে। ভারতের বিপ্লবী আন্দোলন, স্বাধীনতা আন্দোলনে পুরোভাগে দেখা গিয়েছে বাংলাকে। বিশ্বে ভারতের নাম ছড়ানোর পিছনেও বাংলার বড় হাত আছে। এ ক্ষেত্রে আপনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পাশাপাশি বিবেকানন্দ, জগদীশ চন্দ্র বসুর নাম করতে পারেন। কিন্তু, এই বাংলার এই পরম্পরাকে আগে বামেরা এখন তৃণমূল শেষ করে দিয়েছে। দেশকে এগিয়ে যেতে হলে বাংলার পুনর্জাগরণ দরকার।'
নরেন্দ্র মোদীর কথায়, 'যে অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে মমতাজি সংসদে কাগজ উড়িয়ে তুলকালাম কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন, এখন তিনিই সেই অনুপ্রবেশকারীদের রক্ষা করছেন। এখন তা সোনার থালার মতো। ওঁর জনকল্যাণমুখী প্রকল্পগুলিও ভোটব্যাঙ্ককে মাথায় রেখে। ভোটব্যাঙ্কের কথা মাথায় রেখে সিন্দুক খোলেন উনি। বিশ্বের দরবারে বাংলা আবারও শ্রেষ্ঠ আসন নিতে পারে। কিন্তু তার জন্য বাংলাকে ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি থেকে বের করে আনতে হবে। দেশকে এগোতে হলে বাংলার নতুন করে জাগরণ দরকার। তবে দুঃখের বিষয় বাংলায় ক্ষমতালোভীরা মসনদে। তবে শীঘ্রই এর পরিবর্তন হবে। কারণ বাংলার মানুষ মন থেকে BJP-কে স্বীকার করে নিয়েছে।'