Amit Shah Mamata Banerjee : মমতাজিও বিরোধী মুখ্যমন্ত্রী, জেলে তো যাননি: অমিত শাহ
এই সময় | ০৪ মে ২০২৪
এই সময়: ভোটের ঠিক আগে বিজেপি বিরোধী শিবিরের দুই মুখ্যমন্ত্রীকে জেলে পাঠানো হলো! গণতন্ত্রের এ কোন ছবি ধরা পড়ছে দেশের ভোট-পটে? এই প্রশ্ন যাঁকে করা হয়েছিল, তিনি দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বৃহস্পতিবার 'টাইমস নাও' এবং 'নবভারত টাইমস নাও'-এর গ্রুপ এডিটর-ইন-চিফ নভিকা কুমারকে দীর্ঘ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন শাহ। সেই সাক্ষাৎকার পর্বে 'ইন্ডিয়া' জোটের সদস্য দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের জেল যাত্রা থেকে সন্দেশখালি মামলা-এমনকী, হাইকোর্টের বিচারপতির বিজেপির হয়ে ভোটে দাঁড়ানো নিয়েও তাঁর মতামত জানিয়েছেন অমিত শাহ।লোকসভা ভোটের মুখে কেজরিওয়াল এবং হেমন্ত সোরেনের জেল যাত্রা প্রতিহিংসার রাজনীতি কি না-এই প্রশ্নে তাৎপর্যপূর্ণভাবে শাহ টেনে এনেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ। শাহ বলেন, 'তাঁরা (কেজরি ও হেমন্ত) যদি ঠিক সময়ে তদন্তকারী এজেন্সির সঙ্গে সহযোগিতা করতেন, তা হলে অনেক আগেই তাঁদের জেলে যেতে হতো। যেহেতু তাঁরা দু্র্নীতি করেছেন, সেই জন্যই তাঁদের জেলে যেতে হয়েছে।' শাহের যুক্তি, 'দেশে বিরোধী মুখ্যমন্ত্রী তো আরও আছেন। মমতাজিও (বন্দ্যোপাধ্যায়) আছেন, হিমাচল প্রদেশেও (কংগ্রেসের সুখবিন্দর সিং সুখু) আছেন। কেন আর কাউকে জেলে যেতে হচ্ছে না?'
এ প্রসঙ্গেই প্রশ্ন ওঠে, আপনারা তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সন্দেশখালি এবং ইডি ইস্যুতে বিরোধ চালিয়েই যাচ্ছেন। গণতন্ত্রে এটা কি খুব ফলদায়ী? শাহের জবাব, 'আমরা এখানে কোথায়? সন্দেশখালি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। স্বতঃপ্রণোদিত মামলাও তারাই করেছে। একটা বিষয় বুঝুন, যেখানে তোষণের রাজনীতি চলছে, সেখানে মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর নাকের ডগায় তাঁর পার্টির লোকেরাই মহিলাদের সম্ভ্রমহানি করেছে! এই অবস্থায় হাইকোর্ট এগিয়ে এসেছে। এখন মমতাজি যদি বলেন রাজনীতি হচ্ছে, তা হলে তাঁকে বলতে হবে হাইকোর্ট রাজনীতি করছে!'
সেই হাইকোর্টেরই এক জন বিচারপতি যদি বিজেপির প্রার্থী হয়ে যান, তার পরেও জনতা প্রশ্ন তুলবে না? শাহের উত্তর, 'ইন্দিরার (গান্ধী) জমানায় তাঁর মন্ত্রিসভার অনেকে, এমনকী মন্ত্রীরাও এটা করেছেন। সেই প্রসঙ্গ বাদ দিলেও বলা যায় যে, কোনও বিচারপতি তাঁর চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে যে কোনও পার্টিতে যোগ দিতে পারেন। এটা প্রথমবার হলো না। যেহেতু এটা আমরা করেছি, সেজন্যই এখন এই সব প্রশ্ন উঠছে।' যদিও কর্নাটকে এনডিএ-র জোটসঙ্গী দলের সাংসদের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের অভিযোগ প্রসঙ্গে শাহের বক্তব্য, 'এই ইস্যুতে আমরা নিজেদের স্ট্যান্ড আগেই স্পষ্ট করেছি। যদি কর্নাটক সরকার পদক্ষেপ না করতে পারে, তা হলে ওরা ছেড়ে দিক। আমরা পদক্ষেপ করব।'
রাজ্যের বিষয়ে কেন্দ্রের নাক গলানো, ফেডেরাল স্ট্রাকচার নিয়েও প্রশ্ন করা হয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে। তাঁর জবাব, 'এটা খুবই বোকাবোকা অভিযোগ। কিছু বিষয় আছে, সংবিধান অনুযায়ী যেগুলি প্রথম থেকেই পুরোপুরি কেন্দ্রের এক্তিয়ারভুক্ত। নাগরিকত্ব তেমনই একটি বিষয়। এটা ওদের জানা উচিত।' আর বিজেপি-র বিরুদ্ধে যে 'ওয়াশিং মেশিন' তত্ত্বের অভিযোগ উঠছে? শাহের বক্তব্য, 'তা হলে বিরোধীরা এটা স্বীকার করে নিচ্ছে যে, ওদের পোশাকে ময়লা আছে। সেই জন্যই আমাদের ওয়াশিং মেশিনের দরকার হচ্ছে। ওরা যদি নিজেই তা স্বীকার করে, আমার আর বলার কী থাকতে পারে!'