• লা নিনার কামালে চরম গরম থেকে রেহাই! আসছে প্রবল ঝড়বৃষ্টি
    এই সময় | ০৪ মে ২০২৪
  • ভয়াবহ তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ মানুষ। তাপমাত্রার পারদ চড়তে চড়তে ৪৩ ডিগ্রিতে পৌঁছেছে। প্রচণ্ড গরম আর লুয়ের কারণে নজেহাল মানুষ। বৃষ্টিক কোনও দেখাই নেই। খরার মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে বৃষ্টির আশা জাগিয়েছে লা নিনা।এর প্রভাবে চলতি বছরে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে মৌসম ভবন। তবে জলবায়ুর পরিবর্তন অর্থাৎ এল নিনো পর্যায়ের শেষ এবং লা নিনা পর্যায়ের শুরুর কারণে আবহাওয়ার চরম উত্তেজনা দেখা দেবে বলে আগাম সতর্ক করছেন আবহবিদরা। অতিবৃষ্টির পাশাপাশি হারিকেনের আকার ধারণ করতে পারে লা নিনা। এমনটাই বলছেন আবহবিদরা।

    স্প্যানিশ শব্দ এল নিনো এবং লা নিনা দুজনই দক্ষিণ আমেরিকার উপকূলের বাসিন্দা। প্রায় ১০০ বছর আগে সেখানকার জেলেরা সমুদ্রে মাছ ধরার সময় ওদের দেখতে পায় এবং সেই থেকেই তাদের এমন নামকরণ।

    স্বভাবে একদমই বিপরীতধর্মী। এল নিনো উষ্ণ এবং লা নিনা শীতল। সমুদ্রের সঙ্গে দুজনেরই গভীর সম্পর্ক। দিজনই হলো প্রাকৃতিকভাবে তৈরি জলবায়ুর একটি ধরণ।

    সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা এবং বায়ুমণ্ডলীয় চাপের ক্রামাগত পরিবর্তন থেকে এদেরকে চিহ্নিত করা হয়। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জলবায়ু তিনটি ধাপের মাধ্যমে একটি চক্র অতিক্রম করে। এই চক্রকে বলা হয় এনসো চক্র। আর তিনটি ধাপ হলো এল নিনো, লা নিনা এবং এই দুটি যখন প্রবল থাকে না তখন তাকে বলা হয় এনসো নিউট্রাল।

    ২০২৩ সাল থেকে এল নিনোর প্রভাব দেখছে গোটা দক্ষিণ এবং মধ্য এশিয়া। গত বছর তো বটই চলতি বছরেও এল নিনোর ভয়ঙ্কর প্রভাব পড়ছে ভারত সহ একাধিক দেশে। তপ্ত তাপপ্রবাহ, শুষ্ক মরশুম, স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টি, অতিরিক্ত তাপমাত্রা সই সব কিছুই সহ্য করতে হচ্ছে একাধিক দেশকে।

    তবে আবহবিদরা মনে করছেন যে প্রশান্ত মহাসাগর জুড়ে উষ্ণ জল পশ্চিম দিকে পিছু হটতে শুরু করবে, যা লা নিনাতে স্থানান্তরিত হবে। ম্যাকফ্যাডেন বলেছিলেন যে লা নিনার ফলে প্রশান্ত মহাসাগরের একটি বৃহৎ অঞ্চলে ভূপৃষ্ঠের জলের তাপমাত্রা তিন মাস বা তার বেশি সময়ের জন্য ঐতিহাসিক গড় থেকে কমপক্ষে ০.৫ ডিগ্রি কমে যায়।

    লা নিনাতে স্থানান্তরের সবচেয়ে বড় পরিণতি গুলিরমধ্যে একটি হল আটলন্টিক মমহাসাগরে বড় হারিকেনের সম্ভাবনা। জলেরতাপমাত্রা এবং বায়ুর স্থিতিশীলতার কারণে তৈরি হয় হারিকেনের সম্ভাবনা। হরিকেন তৈরির জন্য সমু্দ্রকে প্রায় ৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা আরো গরম হতে হবে এবং এর উপরের বাতাসকে স্থির রাখতে হবে।

    এল নিনোর কারণে আটলান্টিক গতবছর এোটাই অস্বাভাবিক গরম ছিলযে এটি একটি গড় হারিকেনের মরসুমে জ্বালানি দিয়েছিল। আর তারই ফল ভুগছে ভারত সহ অন্যান্য দেশগুলি। ভারতের বিভিন্ন রাজ্য তো বটেই এল নিনোর প্রভাব থেকে বাদ যায়নি বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড, ব্যাংককের মতো দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলি।

    তবে লা নিনা সমুদ্রের উপরের বাতাসকে স্থিতিশীল করতে পারে এবং হারিকেনের জন্য একটা বেস তৈরি করে।

    আবহবিদরা মনে করছেন, ২০২৪ সালের ১ জুন থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে হারিকেন মরশুম। এর ফলে গড়ে ১৪ থেকে ২৪ টি ঝড় দেখা দেবে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন জায়গায়। হারিকেনের প্রভাব পড়বে ভারতেও।
  • Link to this news (এই সময়)