জিমে নিয়মিত ঘাম ঝরাচ্ছেন? বডি ফিট রাখতে ট্রেডমিলে দৌড়? মাজবয়সীদের এবার জিম যাওয়া নিয়ে সাবধান করলেন চিকিৎসকরা। ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সীদের জিম যাওয়া নিয়ে সতর্ক করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। জিমে ভর্তি হওয়ার আগে চিকিৎসকদের পরামর্শে হেলথ চেক আপ করিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।ভারতে অল্পবয়সীদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা বেড়েছে সম্প্রতি। মাত্র ২৪ ঘণ্টা জিম করতে করতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে চারটি। গুজরাট এবং উত্তর প্রদেশে এই ধরণের ঘটনার মিলেছে। ফলে এই নিয়ে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে দেশজুড়ে। কোভিড অতিমারি পর্বের বিভীষিকার পর যেন নতুন করে আশঙ্কা বাড়িয়েছে ঘন ঘন হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু।
চারটি আলাদা আলাদা ঘটনায় গত বুধবার থেকে বৃহস্পতিবারের মধ্যে উত্তর প্রদেশের বারাণসীতে ৩২ বছরের এক ব্যক্তি, রাজকোটের ১৭ বছরের তরুণ, হনুমান মাণ্ডি চকের ৪০ বছরের যুবকের মৃত্যু হয়েছে হার্ট অ্যাটাকে। তাঁরা প্রত্যেকেই সে সময় জিম করছিলেন বলে খবর। এ ছাড়াও গুজরাটের নবসরি এলাকায় বাইক চালাতে চালাতে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন ৩৪ বছরের এক ব্যক্তি। তাঁকেও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। জানা যায়, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
এ প্রসঙ্গে PSRI হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের বরিষ্ঠ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. মণীশ আগরওয়াল বলেন , 'আমরা যখন শরীরচর্চা করব বা জিমে কসরত করব তা ধীরে ধীরে করা উচিত। কিছুটা আস্তে শুরু করে তারপর সহ্য করার ক্ষমতা অনুযায়ী বাড়ানো উচিত।' হৃদযন্ত্রের সমস্যা, ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশনের মতো রোগ থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে জিম বা শরীরচর্চা করা উচিত বলে মনে করছেন তিনি। এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জানাচ্ছেন, ধূমপান, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, জাংক ফুড, মিষ্টিজাতীয় খাদ্যদ্রব্য, অতিরিক্ত তেলের খাবার এবং কোনও শরীরচর্চা না করাই হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলছে। গত বছর গুজরাটে নবরাত্রি অনুষ্ঠানের সময় নাচতে নাচতে অনেকজন সংজ্ঞাহীন হয়ে যান। কমপক্ষে ১০ জনের মৃত্যুর খবর আসে এবং প্রত্যেকেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এই তালিকায় সবচেয়ে কমবয়সী মৃত ছিল ১৭ বছরের।
সম্প্রতি করোনা টিকা কোভিশিল্ডের প্রস্তুতকারী সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকা স্বীকার করেছে, এই টিকাগ্রহীতাদের মধ্যে জটিল থ্রম্বসিস বা থ্রম্বসাইটোপেনিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তারপর থেকেই সম্প্রতি বৃদ্ধি পাওয়া হার্ট অ্যাটাকের ঘটনাগুলি নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যদিও চিকিৎসকদের দাবি, কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন নেওয়ার পর এ দেশে কারও মধ্যে জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার কোনও উদাহরণ প্রকাশ্যে আসেনি। অতএব এই হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা ভ্যাকসিনের সঙ্গে যুক্ত করা অপ্রয়োজনীয়।