উথালপাথাল সমুদ্র! আছড়ে পড়বে প্রবল ঢেউ, উইকএন্ডে বাংলা সহ একাধিক রাজ্যে হাওয়া বদল
এই সময় | ০৫ মে ২০২৪
দ্য ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল সেন্টার ফর ওশান ইনফরমেশন সার্ভিসেস (INCOIS) শুক্রবার জানায়, চলতি উইকএন্ডে দেশের একাধিক রাজ্যের উপকূলবর্তী এলাকায় আছড়ে পড়ছে জলোচ্ছ্বাস। ইতিমধ্যেই সমুদ্রে জলোচ্ছ্বাস শুরু হয়েছে গোয়া, মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ, ওডিশা, তামিলনাড়ু, কেরালা, লাক্ষাদ্বীপ, কর্নাটক, গুজরাট এবং আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে। এই প্রবল জলোচ্ছ্বাসকে বলা হচ্ছে, 'সোয়েল ওয়েভস'।দ্য ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল সেন্টার ফর ওশান ইনফরমেশন সার্ভিসেস মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করছে। পর্যটকদেরও সি বিচে না যাওয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। এই স্ফীত তরঙ্গ বা সোয়েল ওয়েভসের কারণে কেরালায় গত মার্চ মাসে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। আলাপ্পুঝা, কোল্লাম এবং তিরুবনন্তপুরম সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। কেরালায় এই বন্যা পরিস্থিতিতে বলা হয় কল্লাক্কাদল।
কী এই সোয়াল ওয়েভস?আচমকা সমুদ্রে জলোচ্ছ্বাস হওয়ায় তা ফুঁসে ওঠে। এতেই তৈরি হয় স্ফীত তরঙ্গ বা সোয়েল ওয়েভস। স্থানীয়ভাবে হাওয়ার জেরে সমুদ্রে জলোচ্ছ্বাস হয় না। দূরবর্তী কোনও এলাকায় ঝড়ের প্রভাব হিসেবে সমুদ্রে এই সোয়েল ওয়েভস হতে পারে। এই ঘটনার সময় বায়ু থেকে জলে প্রবল শক্তি সঞ্চয় হয়। এতে বড় বড় ঢেউ তৈরি হয়। যে এলাকায় ঝড় হয় সেখান থেকে ঢেউ উঠতে শুরু করে এবং বেশ কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত ঝড় বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
ভারত মহাসাগরের দক্ষিণ অংশে এই ধরণের জলোচ্ছ্বাস তৈরি হয়, এর জেরে কেরালা সোয়েল ওয়েভসের সাক্ষী থাকে। এই ঝড় দু'তিন দিনে উত্তর দিকে বয়ে যাওয়ার ক্ষমতা রাখে। দক্ষিণ আটলান্টিক সাগর থেকে বয়ে আসা একটি নিম্নচাপের কারণে গত মার্চ মাসে কেরালার উপকূলীয় অঞ্চলে এই ধরণের সোয়েল ওয়েভস তৈরি হয়েছিল। ভারত মহাসাগরের ১০ হাজার কিলোমিটার দূর থেকে বয়ে এসেছিল এই সোয়েল ওয়েভসের উৎস। এর জেরে ঝোড়ো হাওয়া বইতে শুরু করে। ১১ মিটার উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস তৈরি হয়েছিল সমুদ্রে। কেরালা এবং লাক্ষাদ্বীপে সোয়েল ওয়েভস আছড়ে পড়েছিল।
২০২০ সালের INCOIS এই মর্মে একটি সোয়েল সার্জ ফোরকাস্ট সিস্টেমও তৈরি করে। সাতদিন আগে থেকে এই সোয়েল ওয়েভসের পূর্বাভাস দেয় সেটি।
সোয়েল ওয়েভস এবং সুনামির মধ্যে কী পার্থক্য?সুনামির ঢেউ পর পর আছড়ে পড়ে। যা সোয়েল ওয়েভসের থেকে অনেকটাই আলাদা। সুনামি তৈরি হয় জলের তলদেশে তৈরি কম্পনের জেরে। সোয়েল ওয়েভসের থেকে ১০ গুণ বেশি শক্তিশালী হয় সুনামি। সোয়েল ওয়েভস এবং সুনামি দু'টিই উপকূলে এসে আছড়ে পড়ে। সুনামির গতিবেগ হয় ঘম্টায় ৩০ থেকে ৫০ কিলোমিটার।