এককালে অনাহারে থাকা কালাহান্ডিতে কোটিপতি প্রার্থী, বিজেপির মালবিকা দেবীর সম্পত্তির পরিমাণ ৪১ কোটি
এই সময় | ০৫ মে ২০২৪
আগামী ১৩ মে চতুর্থ দফার লোকসভা নির্বাচনে ওড়িশার চারটি আসনে ভোট হতে চলেছে। পরীক্ষা হতে চলেচে কোরাপুট, বেরহামপুর, নবরঙ্গপুরএবং কালাহান্ডি এই চারটি লোকসভা আসনে। তালিকায় থাকছেন মোট ৩৭ জন প্রার্থী। এবার অসরকারি সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড অফ ডেমোক্র্যাটিক রিফর্ম নথিপত্র পরীক্ষা করে জানিয়েছে, এই তালিকার ৩৭ জনের মধ্যে ১৭ জনের সম্পত্তি এক কোটি টাকা বা তারও বেশি।তাদের রিপোর্ট বলছে, এই কোটিপতি প্রার্থীদের মধ্যে কালাহান্ডি আসনের বিজেপি প্রার্থী মালবিকা দেবী সবচেয়ে ধনী। তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৪১.৮৯ কোটি টাকা। কালাহান্ডি এমনিতে বিজেপির ভাল ঘাঁটি। বিদায়ী সাংসদ বসন্ত কুমার পণ্ডাও বিজেপির। ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন বেরহামপুর থেকে দাঁড়ানো নির্দল প্রার্থী ভি চন্দ্রশএখর। তাংর সম্পত্তি ২৮.৭০ কোটির কাছাকাছি। তৃতীয় স্থানে রয়েছেন বেরহামপুর থেকেই দাঁড়ানো ভারতীয় বিকাশ পরিষদের প্রার্থী রাজেন্দ্র দলবেহেরা। ইনি নিজের সম্পত্তি জানিয়েছেন ১০.৩০ কোটি।এই তালিকার দরিদ্রতম প্রার্থীর কথাও জানা গিয়েছে। তিনি কোরাপুট আসন থেকে এসইউসিআই প্রার্থী প্রমীলা পূজারি। তিনি নিজের সম্পত্তি দেখিয়েছেন মাত্র ২০ হাজার ৬২৫ টাকা।উল্লেখ্য, ওড়িশার কালাহান্ডি বহুদিন ধরে দারিদ্র্য ও অনাহারের জন্য কুখ্যাত। এককালে কালাহান্ডিকে বলা হত দেশের মধ্যে সবচেয়ে গরিব জেলা। খোদ দেশের পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রকের তরফে অন্যতম অনগ্রসর জেলা হিসেবে কালাহান্ডিকে চিহ্নিত করা হয়েছিল। বিশেষ করে কালাহান্ডির উপজাতি জনসংখ্যার মধ্যে দারিদ্র লাগামছাড়া। প্রায়ই বৃষ্টির অভাবে খরা দেখা যায়।১৯৮৫ সালে অনাবৃষ্টিতে কালাহান্ডি জুড়ে খরা দেখা দেয়। চালের আকাল, চাষের সামান্য় জলটুকুও ছিল না। কালাহান্ডির বাসিন্দারা দখলেন ধোপদুরস্ত গাড়িতে করে অচেনা লোকজনের দল এসেছে গ্রামে। তাঁদের জিজ্ঞেস করা হয় অবস্থার কথা। সেখানকার মানুষ সাফ জানায় চাল তাঁদের জোটে না। একজাতের আগাছা সেদ্ধ করেই পেট চলে তাঁদের। অথবা চয়েচিন্তে খানিক ফ্যান জোগাড় করতে পারলে আরও ভালো। এমনকি কেউ কেউ পেটের জ্বালায় নিজেদের বাড়ির শিশুদেরও বিক্রি করে দিয়েছেন। যাকে বিক্রি করেছেন তার কাছে থেকে বদলে মিলেছে খাবার এবং একটি শাড়ি।গ্রামবসীদর মুখে এসব কথা শোনার পর স্তম্ভিত হয়ে যান সেই নেতা। নয়াদিল্লিরক্ষমতার অলিন্দে গিয়ে পৌঁছেছিল পূর্ব ভারতের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া জেলার নাম। কারণ সেদিনের সেইনেতা আর কেউ নন, খরা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন খোদ ভারতের প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী।তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল রাজনতিক মহলে। তড়িঘড়ি কালাহন্ডির উন্নয়নে ব্যাপক উদ্যোগ নেন রাজীব গান্ধী। পরবর্তী দুই দশকে কালাহান্ডিতে চাষের উন্নতি, সেচ, ফলন বাড়ানো ইত্যাদি নানান পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্র সরকার। আজ সেখানে খনিজ শিল্পেও বিনিয়োগ হচ্ছে। যা নিয়ে প্রকৃতি ধ্বংসের অভিযোগ তুলেছেন অনেকে। তবে এতোকিছুর মাঝেও সেই দারিদ্রের ছায়া আজও বেশ ভাল রকম রয়ে গেছে।