• ছেলের মনোনয়নপত্র জমা, ‘শক্তি প্রদর্শন’ ব্রিজভূষণের
    বর্তমান | ০৫ মে ২০২৪
  • কাইসারগঞ্জ: জড়ো হয়েছেন ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ। প্রায় ৭০০টি এসইউভি গাড়ির ভিড়। ‘দবদবা প্রদর্শন’ (শক্তি প্রদর্শন)-এর মঞ্চ। শনিবার উত্তরপ্রদেশের কাইসারগঞ্জ সাক্ষী থাকল এমনই আড়ম্বরের। নেপথ্যে ছ’বারের সাংসদ ব্রিজভূষণ শরণ সিং। যাঁর বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেছিলেন আন্তর্জাতিক পদকপ্রাপ্ত মহিলা কুস্তিগিররা। তাঁকে এবার লোকসভা ভোটের প্রার্থী করেনি বিজেপি। ‘লোক দেখানো’ পদক্ষেপে টিকিট পেয়েছেন ছেলে করণভূষণ সিং। তবে ক্ষমতা যে ব্রিজভূষণের হাতেই থাকবে, তার প্রমাণ মিলল এদিনের দবদবা প্রদর্শনেই। রাজনৈতিক স্পর্শ থেকে দূরে থেকেও তিনি হয়ে উঠলেন ‘নায়ক’। অন্যদিকে, আবারও ‘গুরুত্বহীন’ হয়ে উঠল কুস্তিগিরদের অবরোধ, প্রতিবাদ, চোখের জল। বিরোধীরা বলছেন, মেধা বা শ্রম নয়, শেষ পর্যন্ত জয় হল ক্ষমতা ও অর্থের। 

    এদিন ওই সভায় ছিলেন বিধায়ক, জেলা পঞ্চায়েতের প্রধানরা, বিজেপির স্থানীয় নেতৃত্ব। এছাড়াও এসেছিল ধর্মীয় নেতারাও। যদিও হলুদ কুর্তা, কমলা স্কার্ফ ও ধুতি পরে মাইক হাতে ক্ষমতার ‘এপিসেন্টার’ হয়েছিলেন ব্রিজভূষণ নিজেই। বাকিরা সাধারণ চেয়ারে বসলেও তাঁর জন্য ছিল সোফার ব্যবস্থা। যদিও বিতর্ক এড়াতে উত্তরপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী কেশবপ্রসাদ মৌর্য বা ছেলে করণের কাছে ঘেঁষেননি তিনি। বরং সভার দিকেই নজর ছিল তাঁর। সমগ্র অনুষ্ঠানে তাঁকে ঘিরে রেখেছিলেন নিরাপত্তা আধিকারিকরা। এমনকী, ছেলের মনোনয়নপত্র জমা দিতেও যাননি তিনি। এ প্রসঙ্গে অবশ্য তাঁর যুক্তি, ‘পাঁচজনকে ভিতরে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তাই ওরা যখন মনোনয়ন জমা দিতে গেল, আমি সভার ব্যবস্থাপনার দিকে নজর রাখছিলাম।’ এরই মধ্যে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেখানে মিছিলে ধোঁয়া উঠতে দেখা গিয়েছে। এই ঘটনায় কেউ বলছেন, গুলি ছোড়া হয়েছে। কেউ অবশ্য বলেছেন, গুলি নয়, পটকা ফাটানো হয়েছিল।

    বিজেপির একটি অংশ বলছে, উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে ব্রিজভূষণ যে জাঠ ভোট টানতে ‘অদ্বিতীয়’, তা জানেন শীর্ষ নেতৃত্ব। আবার কুস্তিগিরদের প্রতিবাদের দিকে নজর ছিল সারা দেশের। তাই শাঁখের করাতের দশা থেকে বাঁচতে করণকে টিকিট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কুস্তিগির সাক্ষী মালিক এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছিলেন, ‘দেশের মেয়েরা হেরে গেলেন। জয়ী হলেন ব্রিজভূষণ’। কংগ্রেসের তরফে বলা হচ্ছে, যে দল ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও-এর কথা বলে, সেই দলের প্রথম সারিতে বসে রয়েছেন ব্রিজভূষণের মতো নেতারা। আবার প্রোজ্জ্বল রেভান্নার মতো ব্যক্তিদের হয়ে ভোট চান প্রধানমন্ত্রী!’ অন্যদিকে, ব্রিজভূষণ-পুত্র টিকিট পাওয়ায় এনডিএর অন্দরেও যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে, তার প্রমাণ মিলেছে আরএলডির মুখপাত্র রোহিত জাখরের পদত্যাগে। 
  • Link to this news (বর্তমান)