বেঙ্গালুরু ও নয়াদিল্লি: কর্ণাটকে যৌন কেলেঙ্কারি মামলায় ইতিমধ্যেই বিপাকে এনডিএ শিবির। হাসান কেন্দ্রের জেডিএস প্রার্থী প্রোজ্জ্বল রেভান্না ও তাঁর বিধায়ক বাবা এইচ ডি রেভান্নার বিপদ বাড়ছিলই। তারই মধ্যে এবার অপহরণের একটি মামলায় গ্রেপ্তার করা হল এইচ ডি রেভান্নাকে। শনিবার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবেগৌড়ার বাসভবন থেকে তাঁর পুত্রকে গ্রেপ্তার করে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)। এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই চাপ বাড়ল জেডিএসের জোটসঙ্গী বিজেপিরও। রাজু নামে ২০ বছরের এক তরুণের অভিযোগ ছিল, তাঁর মাকে অপহরণ করা হয়েছে। তাঁরা দু’জনেই রেভান্নার ফার্মহাউসে পরিচারকের কাজ করতেন। এই মামলায় ৫০টি জায়গায় তল্লাশি চালায় তদন্তকারী সংস্থা। অপহরণের এই মামলায় গ্রেপ্তারি এড়াতে স্থানীয় একটি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এইচ ডি রেভান্না। যদিও জেডিএস বিধায়কের আর্জি খারিজ করে দেয় আদালত। তারপরই দেবেগৌড়ার বাসভবন থেকে তাঁর ছেলেকে হেফাজতে নেয় সিট।
এদিকে, দেবেগৌড়ার নাতি প্রোজ্জ্বলের বিরুদ্ধে সিবিআই ‘ব্লু কর্নার নোটিস’ জারির আবেদন জানাতে পারে বলে খবর। এর আগে এদিন এইচ ডি রেভান্নার নামে ‘লুক আউট নোটিস’ জারি হয়। আর যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনায় ৭০০ জন নাগরিক জাতীয় মহিলা কমিশনকে খোলা চিঠি লিখে প্রোজ্জ্বলের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানান।
হাসান কেন্দ্রের বিজেপি সমর্থিত জেডিএস প্রার্থী প্রোজ্জ্বলের বিরুদ্ধে সম্প্রতি যৌন হেনস্তার অসংখ্য ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে। চাপের মুখে বিজেপি এখন শরিক দলের থেকে দূরত্ব তৈরির চেষ্টা করছে। যদিও তাতে চিঁড়ে ভিজছে না। কর্ণাটকের কংগ্রেস সরকারের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়াকে চিঠি লিখে রাহুল গান্ধীর অনুরোধ, নির্যাতিতারা যাতে ন্যায়বিচার পান সেজন্য সব ধরনের সাহায্য করুন। রাহুলের অভিযোগ, কুকর্মে জড়িত প্রোজ্জ্বলের মাথায় হাত ছিল স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহের। মোদি-শাহের ‘আশীর্বাদে’ই সম্পূর্ণ রক্ষাকবচ পেয়েছেন প্রোজ্জ্বল।
শনিবার পুলিস ও তদন্তের দায়িত্বে থাকা সিটের অফিসারদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়া। সিটের অফিসাররা মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, সিবিআই প্রোজ্জ্বলের বিরুদ্ধে ‘ব্লু কর্নার নোটিস’ জারি করতে পারে। পাশাপাশি প্রোজ্জ্বলের বাবা এইচ ডি রেভান্না যাতে দেশ ছাড়তে না পারেন, সেজন্য তাঁর নামেও ‘লুক আউট নোটিস’ জারি করা হয়েছে।
তদন্তের কাজে এদিন এইচ ডি রেভান্নার বাড়িতেও গিয়েছিলেন সিটের সদস্যরা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন পুলিসের দুই অফিসার ও এক কনস্টেবল। সেই সময় সেখানে চলে আসেন এইচ ডি রেভান্নার সমর্থকেরা। তদন্তকারীদের তাঁরা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ঘটনা ঘটে বলেও খবর। দেবেগৌড়ার বাসভবন থেকে তাঁর পুত্র এইচ ডি রেভান্নাকে গ্রেপ্তার করে সিট।