• শাহের আসনেও ১৬ বিরোধী প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহার!
    বর্তমান | ০৫ মে ২০২৪
  • নয়াদিল্লি: বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের ছক কষেছিলেন অমিত শাহও? কারণ, তাঁর নির্বাচনী কেন্দ্র, গুজরাতের গান্ধীনগরে দেখা গিয়েছে সুরাতের মতো বিরোধী প্রার্থীদের সরে দাঁড়ানোর ঢল। মোদি সরকারের ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’-এর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামা ন’জনের মনোনয়ন প্রথমে বাতিল হয়েছিল। তারপর মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন মোট ১৬ জন। এর মধ্যে ১২ জনই নির্দল। চারজন ছোট রাজনৈতিক দলের প্রার্থী। কিন্তু কেন এমন সিদ্ধান্ত? প্রার্থী পদ প্রত্যাহার করা কয়েকজনের দাবি, শাসক দল বিজেপির চাপের মুখে তাঁরা সরে দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছেন। এমনই এক প্রার্থী জিতেন্দ্র চৌহান। গত ২১ এপ্রিল, সুরাতের বিজেপি প্রার্থীর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হওয়ার দিন সন্ধ্যাতেই তাঁর একটি ভিডিও সামনে এসেছিল। সেখানে ৩৯ বছরের জিতেন্দ্রকে কান্নাভেজা গলায় বলতে শোনা যায়, ‘গান্ধীনগর আসনে প্রার্থী পদ প্রত্যাহারের জন্য চাপ দিচ্ছে অমিত শাহর লোকজন। টাকার প্রস্তাবও দেওয়া হয়। এমনকী অপহরণ পর্যন্ত করা হয়েছিল।’ প্রাণহানির আশঙ্কাও প্রকাশ করেন তিনি। আরও বলেন, ‘সকলের কাছে আমার আর্জি—দেশ বিপদের মুখে। দেশকে রক্ষা করুন।’ পরদিনই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন জিতেন্দ্র। সম্প্রতি একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, এর জন্য তাঁকে চাপ দিয়েছিলেন আমেদাবাদের বাপুনগরের বিজেপি বিধায়ক দীনেশ সিং কুশওয়া। যদিও দীনেশ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

    আগামী ৭ মে লোকসভা নির্বাচনের তৃতীয় দফায় গুজরাতের ২৬ আসনের মধ্যে ২৫টিতে ভোটগ্রহণ হবে। সুরাতে কংগ্রেস সহ অন্যান্য প্রার্থীরা সরে দাঁড়ানোয় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গিয়েছে বিজেপি। বাকি আসনগুলিতে তাদের টার্গেট পাঁচ লক্ষেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে জয়। গান্ধীনগরও তার ব্যতিক্রম নয়। ১৯৮৯ সাল থেকে এখানে একবারও হারেনি গেরুয়া শিবির। ২০১৯ সালে সাড়ে পাঁচ লক্ষেরও বেশি ভোটে জিতেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। মোদি-শাহের রাজ্য বিজেপির শক্তঘাঁটি বলে পরিচিত হলেও এবার ক্ষত্রিয়-রাজপুত অসন্তোষ, প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতার মতো ইস্যুতে অস্বস্তি রয়েছে। এরইমধ্যে শাহের আসনের প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারে চাপ দেওয়ার অভিযোগ স্বাভাবিকভাবেই শোরগোল ফেলে দিয়েছে। অন্তত তিনজন প্রার্থী ভয় দেখিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহারে বাধ্য করার অভিযোগ তুলেছেন। জিতেন্দ্র এও বলেছেন, ‘মনোনয়ন প্রত্যাহারের অনেক কারণ রয়েছে। বাড়িতে তিন কন্যাসন্তান রয়েছেন। আমার কিছু হলে ওদের কী হবে? তাই জলে নেমে কুমীরের সঙ্গে বিবাদ চলে না।’ বাকি দু’জনের অভিযোগ আবার সরাসরি পুলিসের বিরুদ্ধে। রাজ্য পুলিসের ডিজি বিকাশ সহায় অবশ্য এব্যাপারে এখনো মুখ খোলেননি।

    মনোনয়ন প্রত্যাহার করা বাকি ১৩ জন অবশ্য ভয় দেখানো বা চাপ দেওয়ার কথা জানাননি। তবে প্রজাতন্ত্র আধার পার্টির প্রার্থী সুমিত্রা মৌর্যকেও ভয় দেখানো হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। নিট ফল? গান্ধীনগরে ৩৯ জন মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে এখন লড়াইয়ে মাত্র ১৪ জন। 
  • Link to this news (বর্তমান)