দীপালি সেন: মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ হতেই স্কুলে স্কুলে একাদশ শ্রেণিতে পড়ুয়া ভর্তির প্রক্রিয়া চালু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু, মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পরদিন, শুক্রবারই উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফে বিষয় সম্পর্কিত কিছু পরিবর্তিত সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। যা নিয়ে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে স্কুলগুলির মধ্যে। তাদের প্রশ্ন, এতো শেষ মুহূর্তে কেন? এর ফলে ভর্তি প্রক্রিয়ায় জটিলতা তৈরি হচ্ছে বলেও অভিযোগ তাদের।
শুক্রবারের বিজ্ঞপ্তিতে সংসদ জানিয়েছে, ১২টি বিষয় নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে পড়াশোনা করার জন্য মাধ্যমিকে পড়ুয়াকে কোনও বিষয়ে ন্যূনতম কত নম্বর পেতে হবে। যেমন, গণিত, স্ট্যাটিস্টিকস, কম্পিউটার সায়েন্স, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, ডেটা সায়েন্স, সাইবার সিকিউরিটি, অ্যাকাউন্টেন্সি, কস্টিং অ্যান্ড ট্যাক্সেসন-এই বিষয়গুলিকে ঐচ্ছিক বিষয় হিসাবে নিতে গেলে গণিতে ন্যূনতম ৩৫ শতাংশ নম্বর পাওয়া বাধ্যতামূলক বলে জানানো হয়েছে। এর মধ্যে অ্যাকাউন্টেন্সি ও কস্টিং অ্যান্ড ট্যাক্সেসন বিষয়ের জন্য আগে এই শর্ত ছিল না বলেই জানাচ্ছে স্কুলগুলি।
বড়িশা জনকল্যাণ বিদ্যাপীঠ ফর গার্লসের প্রধান শিক্ষিকা শর্মিলা সেনগুপ্ত বলেন, “অন্য বিষয়গুলো নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু, কমার্সের অ্যাকাউন্টেন্সি ও কস্টিং অ্যান্ড ট্যাক্সেসনের জন্য গণিতে ৩৫ শতাংশ নম্বর পাওয়া বাধ্যতামূলক ছিল না। ফল প্রকাশের পরে সেটা জানানো হচ্ছে। এটা ঠিক নয়। এতে খুব অসুবিধা হচ্ছে। কমার্স নিতে ইচ্ছুক অনেক বাচ্চার উপরেও এর প্রভাব পড়বে।” শর্মিলাদেবী জানিয়েছেন, মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের দিন, বৃহস্পতিবার থেকেই একাদশে ভর্তির জন্য ফর্ম দেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। এই ফর্ম ছাপানো হয়ে গিয়েছে আগেই। ফলে, একটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। তাই বিষয় সম্পর্কিত নতুন শর্ত সংসদ কিছুদিন আগে জানালে এই জটিলতা এড়ানো যেত বলেই মত তাঁর। নদিয়ার কল্যাণীর পান্নালাল ইন্সটিটিউশনের সহ-প্রধান শিক্ষক সৌদীপ্ত দাসের কথায়, “নিয়মের পরিবর্তন হতেই পারে। কিন্তু, সংসদের সিদ্ধান্তে দেরির জন্য স্কুল শুধু অপ্রস্তুত হয়ে পড়েছে তাই নয়, তাদের অভিভাবকদের বিরক্তির শিকার হতে হচ্ছে। এসব সিদ্ধান্ত ও সংশোধনী অনেক আগে ওয়েবসাইটে দিতে হত।”
এই ধরনের বহু অভিযোগ সংসদের কাছেও পৌঁছেছে। তাই দুই বিষয়ের ক্ষেত্রে পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে বলেই জানিয়েছেন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “আমরা অনেক অনুরোধ পেয়েছি ওই দুটো বিষয় নিয়ে। তাই এ বছরের জন্য ওই বিষয় দুটির ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।”