Lok Sabha Election 2024: এক-দু'টো নয়, লোকসভায় তিন আসনে লড়াইয়ের রেকর্ড বাজপেয়ীর! ক'টিতে জয়?
এই সময় | ০৫ মে ২০২৪
গত ২৬ এপ্রিল দ্বিতীয় দফার ভোটে সব হিসেব মিটে গিয়েছে ওয়েনাড়ে। এই কেন্দ্রে ভাগ্য পরীক্ষায় নেমেছেন রাহুল গান্ধী। ২০১৯ সালে এই আসনে জিতেই সাংসদ হন তিনি। এই আসনে ভোট মেটার পর কংগ্রেস ঘোষমা করে রায়বরেলি আসন থেকেও লড়বেন রাহুল। অমেঠি আসনটি গিয়েছে দলের অনুগত কিশোরীলাল শর্মার কাছে। কিন্তু সনিয়া গান্ধী রায়বরেলির দায়িত্ব অন্য কারও হাতে ছাড়তে চাননি। ভরসা রেখেছেন পুত্রের উপরই।দীর্ঘ ২০ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম অমেঠি থেকে লড়ছে না গান্ধি পরিবারের কোনও সদস্য৷ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতার এই সিদ্ধান্তকে রীতিমতো কটাক্ষ ছুঁড়লেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মোদির সাফ কথা, ওয়ানড়ে হারের ভয়েই দ্বিতীয় নিরাপদ আসন খুঁজছেন রাহুল। আবার আমেঠিতে জিততে পারবেন না, সেই ভয়ও কাজ করেছে। সেকারণেই তিনি দাঁড়িয়েছেন রায়বরেলিতে।
এইবার একটা বড় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে ওয়েনাড় নিয়ে। নিয়ম বলে, কোনও প্রার্থী একইসঙ্গে দুটো আসন থেকে লড়তে পারেন। কিন্তু উভয় আসনেই জিতলে যে কোনও একটা আসন ছেড়ে দিতে হবে তাঁকে। তবে বিজেপির তরফে রাহুল গান্ধীকে আক্রমণ করা হলেও এটি প্রথম ঘটনা নয় যখন কোনও নেতা দু'টি আসন থেকে প্রার্থী হয়েছে। একসময় অটল বিহারী বাজপেয়ীও একই সঙ্গে তিনটি আসন থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।
জনপ্রতিনিধিত্ব আইন, ১৯৫১-এর ৩৩ ধারায় বলা হয়েছে যে একজন ব্যক্তি একাধিক আসন থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন। একই আইনের ৭০ ধারায় বলা হয়েছে, একবার কোনও আসনে একজন প্রার্থী একবারই প্রতিনিধিত্ব করতে পারবেন। একাধিক আসন থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও বিজয়ী হলে প্রার্থীকে মাত্র একটি আসন থেকে প্রতিনিধিত্ব গ্রহণ করতে হয়। ১৯৯৬ সালে ১৯৫১-এর জনপ্রতিনিধিত্ব আইন সংশোধন করা হয় এবং সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় কোনও প্রার্থী সর্বাধিক দুই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন।
একাধিক আসন থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার দৌড়ে যিনি এগিয়ে রয়েছেন তিনি হল অটল বিহারী বাজপেয়ী। লখনউ আসনের ১৯৫২ সালের উপনির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর, তিনি ১৯৫৭ সালের নির্বাচনে তিনটি আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। লখনউ, মথুরা ও বলরামপুর আসন থেকে লড়েন ভারতীয় জনসংঘের টিকিটে। লখনউ ও মথুরায় হেরে গেলেও বলরামপুর আসন থেকে জিতেছিলেন। সেটা ছিল ১৯৫৭ সালের সাধারণ নির্বাচন।
১৯৫২ সালের নির্বাচনে, অটল বিহারী বাজপেয়ী লখনউ আসন থেকে হেরে যান। সেই সময় তাঁর দল জনসংঘ যে কোনও পরিস্থিতিতে তাঁর জয় নিয়ে চিন্তিত ছিল। এই কারণে দল তাঁকে একটি নয় তিনটি আসনে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নেয়। সেবার লখনউ আসন থেকে অটল বিহারী বাজপেয়ীর জন্য প্রার্থী করে দল। পাশাপাশি বলরামপুর (বর্তমানে শ্রাবস্তী) এবং মথুরা থেকেও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তিনি। বিষয়টির পিছনে দলের বিশেষ কৌশল ছিল।
দলের শীর্ষ নেতৃত্ব চেয়েছিলেন যে কোনও মূল্যে বাজপেয়ী লোকসভায় পৌঁছান, তাহলেই দলের সংগঠন আরও শক্তিশালী হবে। দ্বিতীয়ত, অটল বিহারী বাজপেয়ী যে আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুন না কেন, আরও বেশি সংখ্যক মানুষ তাঁর কথা শুনতে আসবে। এতে ওইসব এলাকায় দলের দখল আরও মজবুত হবে। এর প্রভাবও পড়েছিল। অটল বিহারী বাজপেয়ী যেখানেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন, সেখানেই তাঁর দল সুবিধা পেয়েছে। নতুন কর্মী যোগ হওয়ায় দলটির সংগঠনের সমর্থনও বাড়ে। পাশাপাশি গণনেতা হিসেবেও উঠে আসে অটল বিহারী বাজপেয়ীর ভাবমূর্তি।