• 'প্রতিষ্ঠিত হয়েছি, বিয়ে পর্যন্ত করেছি, ও কিছুই করতে পারেনি!' তোপ কল্যাণের, দীপ্সিতা বললেন...
    এই সময় | ০৫ মে ২০২৪
  • '...হাইকোর্টে প্রতিষ্ঠিত হয়েছি, বিয়ে পর্যন্ত করেছি। ও তো কিছুই করতে পারেনি', সম্প্রতি ডানকুনির চাকুন্দির জনসভা থেকে CPIM প্রার্থী দীপ্সিতা ধরকে আক্রমণ করে এই মন্তব্য করেছিলেন শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পালটা সরব হয়েছেন দীপ্সিতাও। নয় বছর ধরে থিসিস জমা তিনি দিচ্ছেন না, পড়াশোনার সময়ের খতিয়ান দিয়ে স্পষ্ট করলেন এই তরুণ বাম নেত্রী। সঙ্গে স্পষ্ট করলেন, কোনও ব্যক্তিগত আক্রমণ ধেয়ে এলেও একইভাবে তার জবাব দিতে তিনি চান না।ঠিক কী বলেছিলেন কল্যাণ?

    নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে তিনি বলেন, 'আজ যিনি বামেদের প্রার্থী তাঁর দাদু তিন তিনবার ডোমজুড়ের বিধায়ক ছিলেন। কী করেছে? কী করেছে? কী উন্নয়ন করেছে ডোমজুড়ের? কোনও উন্নয়ন করেনি। কিছু করেনি। চারিদিকে খুন, সন্ত্রাস। সেই CPIM আবার আসবে?'

    আমি তো নয় বছরে বি কম পাশ করেছি, ল পাশ করেছি, হাইকোর্টে প্রতিষ্ঠিত হয়েছি, বিয়ে পর্যন্ত করেছি। ও তো কিছুই করতে পারেনিকল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়

    এরপরেই তাঁর মন্তব্য ছিল, 'দীপ্সিতা এর মধ্যে নাকি আবার প্রচুর পণ্ডিত। এত বড় পণ্ডিত যে নয় বছর লাগছে থিসিস সাবমিট করতে। বুঝতে পারছেন? (একজন আড়াই বছরে থিসিস জমা দিয়েছেন সেই উদাহারণ দিয়ে কল্যাণ বলেন) আমার গ্রাম বাংলার লোকই ভালো। বর্ধমান-কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকই ভালো। এমন জহরলাল ইউনিভার্সিটিতে থিসিস করছে নয় বছর লাগছে। আমি তো নয় বছরে বি কম পাশ করেছি, ল পাশ করেছি, হাইকোর্টে প্রতিষ্ঠিত হয়েছি, বিয়ে পর্যন্ত করেছি। ও তো কিছুই করতে পারেনি।'

    কল্যাণের সংযোজন, ‘আমেরিকার একটা ম্যাগাজিনে লিখেছে মা দুর্গা রেসিজিমের প্রতীক, বর্ণবিদ্বেষী। মা দুর্গা ফরসা ছিল, মহিষাসুর কালো ছিল বলে বধ করেছে এটা লিখেছে। এখানে দুর্গাপুজো হয় না! আপনি ধর্মে বিশ্বাস করবেন কিনা তা আপনার ব্যাপার। কিন্তু, যাঁরা দুর্গাপুজো করে তাঁদের আবেগে আঘাত করার অধিকার দীপ্সিতাকে কে দিয়েছে। যে নিজের ধর্মকে সম্মান করতে পারে না, সে অপরের ধর্মকেও সম্মান করতে পারে না।'

    কী জবাব দীপ্সিতার?

    কল্যাণের মন্তব্য প্রসঙ্গে দীপ্সিতার সঙ্গে যোগাযোগ করে এই সময় ডিজিটাল। তিনি পালটা বলেন, ‘কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে অঙ্কটা ঠিক করে শিখতে হবে। ২০১৩ সালে আমি আশুতোষ কলেজ থেকে স্নাতক হই। ২০১৫ পর্যন্ত জহরলাল ইউনিভার্সিটিতে স্নাতকোত্তর করি। ২০১৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত আমি এম ফিল করি। ২০১৭ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হয় পিএইচডি সাবমিশনের জন্য। ২০১৯ সালে আমি পিএইচডির কনফার্মেশন পাই। ২০১৯ সাল থেকে ২০২৪ কত সাল হয়, তা হয়তো কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানেন না।’

    পকেটে টাকা থাকলে পরেশ অধিকারী এবং অনুব্রত মণ্ডলের ফেলটু মেয়েরা এমনি এমনি চাকরি পেয়ে যানদীপ্সিতা ধর

    তিনি আরও বলেন, ‘পকেটে টাকা থাকলে পরেশ অধিকারী এবং অনুব্রত মণ্ডলের ফেলটু মেয়েরা এমনি এমনি চাকরি পেয়ে যান। কিন্তু, কথা হল আমি পিএইচডি করছি কি করছি না, তা তো ওঁর রাজনৈতিক মন্তব্যের বিষয় হতে পারে না। তিনি ১৫ বছরের সাংসদ। এই সময়ে কী কাজ করেছেন তা মানুষ জানতে চায়। আর সেই জবাব দিতে পারছেন না বলেই কি এই ধরনের মন্তব্য করছেন!’

    পাশাপাশি বিয়ে নিয়ে ব্যক্তিগত আক্রমণ প্রসঙ্গে দীপ্সিতা বলেন, ‘এখানে ওঁর জীবন নিয়েও অনেক কিছু শোনা যায়। কিন্তু, আমাদের দল, দলের নীতি আদর্শ ব্যক্তিগত আক্রমণ করতে শেখায়নি।’

    পাশাপাশি কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘প্রতিবেদন’ সম্পর্কিত আক্রমণ প্রসঙ্গে দীপ্সিতা বলেন, ‘ওঁদের রেসিজম এবং কালারিজমের মধ্যে পার্থক্যটা বুঝতে হবে। যদি তিনি তা না জানেন এবং যে প্রতিবেদনের কথা বলছেন তা নিজে না পড়েন সেক্ষেত্রে ওঁর কথার উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন মনে করি না।’
  • Link to this news (এই সময়)