জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: বেশ কয়েকদিন ধরেই সারা দেশে বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ। চলতি এই তাপপ্রবাহের বিরূপ প্রভাব পড়েছে নরসিংদীর পোল্ট্রি খামারগুলিতেও। অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে পোল্ট্রি খামারগুলিতে মুরগি বাঁচিয়ে রাখা এখন দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে মুরগি-পালকদের পক্ষে। এর উপর ঘন ঘন লোডশেডিং এখন যেন মরার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে পোল্ট্রি মালিকদের জন্য।
তীব্র গরমে প্রতিদিনই হিটস্ট্রোকে মারা যাচ্ছে পোল্ট্রি মুরগি। দেখা দিচ্ছে বিভিন্ন রোগ-বালাই। গরমে হাঁসফাঁস করে মরছে মুরগিরা। কমতে শুরু করেছে তাদের ওজনও। আর ব্যাহত হচ্ছে ডিমের উৎপাদনও। একসঙ্গে মাংস ও ডিমের উৎপাদন কমতে শুরু করায় বাজারে দামও বাড়ছে এ দুটির, বিশেষ করে মুরগির। এই পরিস্থিতিতে মুরগি বাঁচিয়ে রাখতে মুরগির উপর জল স্প্রে করা হচ্ছে, খামারের ছাদে বা চালে ঝরনা পদ্ধতিতে জল দেওয়া-সহ আরও নানা ব্যবস্থা করা হয়েছে। মুরগি বাঁচাতে গিয়ে ব্যয় বেড়েছে কয়েক গুণ। ফলে এই খরচের কারণেও ডিম ও মাংসের দাম বাড়ছে। প্রসঙ্গত, পাশের দেশের শহর কলকাতাতেও মুরগির দাম আকাশছোঁয়া। আজ, রবিবার কলকাতার বিভিন্ন বাজারে গড়ে মুরগির দর গিয়েছে ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা! মুরগির খামারিরা বলছেন, আমরা সব কিছু নিয়েই বিপাকে পড়েছি। মুরগির ব্যবসায় আর কোনও সম্ভাবনাই দেখছি না। উল্টে কয়েকগুণ বেশি খরচ হচ্ছে, ক্ষতিও হচ্ছে। প্রতিদিনই মারা পড়ছে শত শত মুরগি। ডিমেরও উৎপাদন নেই। পরিত্রাণেরও কোনো উপায় দেখছি না।
পোল্ট্রি ব্যবসায়ীরা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলছেন, এবার বড় ধরনের লোকসানে পড়বেন খামারিরা। একের পর এক মুরগি মরছে। কোনও ভাবেই টিকিয়ে রাখা যাচ্ছে না। দীর্ঘমেয়াদি সমাধান পেতে হলে খামারের পাশে গাছ রোপণের পরামর্শ দিচ্ছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ।
অতিরিক্ত জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বলেছেন, এই চলতি তাপপ্রবাহে প্রায় সাত হাজার মুরগি হিটস্ট্রোকে মারা গিয়েছে। এ পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পেতে খামারিদের হাতে গাছ রোপণ ছাড়া অন্য বিকল্প নেই। ছায়াযুক্ত স্থানে খামার করলে মিলবে সমাধান।বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ দফতরের তথ্য বলছে, ওই জেলায় ব্রয়লার মুরগির খামার রয়েছে ৩৪৪৮টি, লেয়ার মুরগির খামার রয়েছে ১৬১৪টি এবং সোনালি মুরগির খামার রয়েছে ৭৩৩টি।