• অন্য উড়ান মাটির এ কন্যার! মা-বাবা নিরক্ষর, তার স্বপ্ন চিকিৎসক হওয়া...
    ২৪ ঘন্টা | ০৫ মে ২০২৪
  • শ্রীকান্ত ঠাকুর: সত্যিই এ এক অন্য লড়াইয়ের গল্প! মা-বাবা দুজনেই নিরক্ষর। অথচ তাঁদের পরিবারের সন্তান প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়া সুদীপা মুর্মু এ বারের মাধ্যমিকে ৬০২ নম্বর পেয়ে নজির গড়েছে। তার স্বপ্ন সে চিকিৎসক হবে। আপাতত তার সাফল্যে উজ্জ্বল এলাকার মুখ, খুশি স্থানীয় মানুষ।

    আগামীদিনে সুদীপা চিকিৎসক হতে চায়। দিনমজুরির কাজ করে কোনও রকমে সংসার চালান সুদীপার বাবা সুধীর মুর্মু। অভাব সুদীপার পরিবারে নিত্যসঙ্গী। দিন-আনা-দিন-খাওয়া পরিবারে বেড়ে উঠলেও ভবিষ্যতে  চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন থেকে সরেনি সে। যদিও এখনও সে জানে না, তার সেই ইচ্ছে পূরণ হবে কি না! কিন্তু লড়াইটা সে থামায়নি। আর্থিক অনটন তার নিত্যসঙ্গী হলেও থেমে থাকেনি সে। জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় বসে রীতিমতো সফল হয়েছে!পতিরাম থানার বটুন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার দাশুল উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী তথা মাদারগঞ্জ গ্রামের সুদীপা মুর্মু তার পাড়ায় প্রথম ছাত্রী, যার রেজাল্ট দেখে খুশি শিক্ষক-শিক্ষিকারা। খুশি তার পরিবার, তার বাবা-মা। কুমারগঞ্জ ব্লকের মাদারগঞ্জের এই এলাকা আদিবাসী অধ্যুষিত। এখনও অনুন্নয়নের ছাপ সেখানে। এলাকায় হয়নি আবাস যোজনার ঘর কিংবা পরিশ্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থাও। এখনও মাটির বাড়িতেই বসবাস সুদীপাদের। বর্ষাকালে চরম কষ্টের মধ্যে দিয়েই দিনযাপন করতে হয় তাঁদের বলে জানিয়েছে সুদীপার পরিবার। শুধু পড়াশোনা নয়, পাশাপাশি মাকে সাহায্য করতে সংসারের খুঁটিনাটি কাজও করতে হয় সুদীপাকে। কখনও মাঠ থেকে গরু-ছাগল নিয়ে আসা, কখনও ধান ভেজানো কখনোবা বাবাকে মাঠে গিয়ে খাবার দিয়ে আসা-- কত কাজ যে  তাকে করতে হয় নিয়মিত!সুদীপার মা দিপালী বাস্কে বলেন, সুদীপা ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় ভাল ছিল। তাকে পড়াশোনার কথা তেমন ভাবে কখনও বলতেও হয়নি। নিজের ইচ্ছামতোই সে পড়াশোনা করত। পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলার প্রতিও তার যথেষ্ট আগ্রহ আছে। মেয়ের সাফল্যে তৃপ্ত মা এরপর যোগ করেন, মেয়ে চিকিৎসক হতে চায়। তার এই স্বপ্ন পূরণ হবে কি না জানি না। কারণ ডাক্তারি পড়াতে গেলে যে পরিমাণ টাকার প্রয়োজন, তার বিন্দুমাত্র আমাদের নেই! তাই মেয়ের স্বপ্ন কতটা পূরণ করতে পারব আমরা, সেটা বুঝে উঠতে পারছি না।
  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)