এই সময়: একেই প্রচণ্ড গরমে নাজেহাল আট থেকে আশি। এই পরিস্থিতিতে গত ১৫ দিন ধরে প্রায় প্রতিদিনই বিদ্যুৎ সংযোগ মাঝেমধ্যেই বিচ্ছিন্ন হচ্ছে দক্ষিণ কলকাতা ও শহরতলির বেশ কিছু তল্লাটে। আবার বিদ্যুৎ থাকলেও অনেক সময়ে ভোল্টেজ এতটাই কম থাকছে যে, আলো জ্বলছে নাইটল্যাম্পের মতো। ভোল্টেজের এই ওঠানামায় রেফ্রিজারেটর, এসি-সহ বিভিন্ন বৈদ্যুতিন সরঞ্জামের বিকল হওয়ার আশঙ্কা। ফ্যান রেগুলেটরে হাইস্পিডে দেওয়া থাকলেও তাতে শরীরে তেমন হাওয়া লাগছে না। লো ভোল্টেজের কারণে চলছে না পুরসভার জলের পাম্প।বিদ্যুৎ সরবরাহে এই গোলযোগের কারণে লোকসভা ভোটের সময়ে ভুক্তভোগী বাসিন্দাদের প্রশ্নের মুখে তাঁদের পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলারদের একাংশের। লোকসভা নির্বাচনের স্ট্র্যাটেজি ঠিক করতে শুক্রবার বৈঠক ডেকেছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। সেখানেই এই সমস্যার কথা প্রথম তুলে ধরেন পুরসভার মুখ্য সচেতক, ১০১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্ত। তাঁকে সমর্থন করেন দক্ষিণ কলকাতা ও সংযোজিত এলাকার বেশ কয়েক জন কাউন্সিলার।
পুরসভা সূত্রের খবর, গত রবিবার, ২৮ এপ্রিল বাঘা যতীন এলাকার কিছু তল্লাটে ভোল্টেজের অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে, পুরসভার পাম্প চালানো সম্ভব হয়নি। বাঘাযতীন জি ব্লকে পুরসভার গাড়িতে করে পানীয় জল সরবরাহ করা হয়। স্থানীয় কাউন্সিলার বাপ্পাদিত্য বলছেন, ‘গত ১৫ দিন ধরে ওয়ার্ডের কিছু জায়গায় ভোল্টেজ যেমন কম থাকছে, তেমনই দিনে ১০ বার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঘটনাও ঘটছে।’ তাঁর বক্তব্য, ‘অন্যের ভুলের জন্য আমাদের ভুল বুঝছেন বাসিন্দারা। এটা হতে দেওয়া যায় না।’ মুরারিপুকুরের কিছু এলাকাতেও গত কয়েক দিন ধরে ভোল্টেজ কম থাকছে বলে স্থানীয় কাউন্সিলার শান্তিরঞ্জন কুণ্ডু জানিয়েছেন।
কলকাতা পুরসভার ১১ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তারকেশ্বর চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘টালিগঞ্জ, যাদবপুর, পাটুলির অনেকটা জায়গা জুড়ে লো ভোল্টেজের কারণে বাসিন্দারা আমাদের কাছে ক্ষোভ জানাচ্ছেন।’ নিউ আলিপুর এলাকার কাউন্সিলার জুঁই মজুমদার বিশ্বাসের বক্তব্য, ‘সাহাপুর-সহ কয়েকটি জায়গায় লোডশেডিং হচ্ছে। তবে আমার কাছে খবর এলেই দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছি।’ বেশ কয়েক জন কাউন্সিলার অবশ্য জানান, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হলে সেখানে জেনারেটর চালু করে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা হচ্ছে সিইএসসি-র তরফে।
৯৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার তপন দাশগুপ্ত বলেন,‘আজাদগড়, গল্ফ গ্রিন এলাকায় মাঝেমধ্যেই লোডশেডিং হচ্ছে। তবে সেটা কম সময়ের জন্য। কিন্তু রাত সাড়ে ১১টা থেকে ভোর পর্যন্ত ভোল্টেজ কম থাকছে, এমন অভিযোগ অনেকের কাছ থেকে পাচ্ছি।’
মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘শহরের সর্বত্র যাতে ভোল্টেজ ঠিক থাকে এবং লোডশেডিং না-হয়, সে জন্য সিইএসসি-কে অনুরোধ করেছি। ওঁরা সব রকম ভাবে চেষ্টা করছেন বলে আমাকে আশ্বস্ত করেছেন।’