লোকসভা নির্বাচনে আসন সমঝোতার মধ্যে দিয়ে বাংলায় লড়াই করছে বাম ও কংগ্রেস। একে অপরের হয়ে প্রচারও করছে। তবে এবার তেমনই এক প্রচারের মাঝে 'বেসুরো' কংগ্রেস নেতা। বাম প্রার্থীর সমর্থনে প্রচারে এসে সাঁইবাড়ি হত্যাকাণ্ডের স্মৃতি রোমন্থন করে কেঁদে ফেললেন কংগ্রেস নেতা তরুণ রায়।
রবিবার বর্ধমান - দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী সুকৃতি ঘোষালের সমর্থনে ভোটের প্রচারে যোগ দেন পশ্চিম বর্ধমান জেলা কংগ্রেসের প্রাক্তন জেলা সভাপতি তরুণ রায়। এদিন বাম প্রার্থীর সমর্থনে একটি জলসত্রের আয়োজন করা হয় দুর্গাপুরের রঘুনাথপুর এলাকায়। সেই সভাতেই বক্তব্য রাখার সময় নিজের রাজনৈতিক জীবনের বিভিন্ন ঘটনার স্মৃতিচারণা করেন তিনি। আর সেই সময়ই তাঁর মুখে উঠে আসে সাঁইবাড়ি ও আনন্দমার্গীদের হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ।একসময় তরুণ রায়ের বক্তৃতায় বামেদের সাড়ে তিন দশকের শানসকালে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডের কথা উঠে আসে। বক্তৃতার শুরুতে তরুণ রায় কিছুটা সমালোচনার ঢঙেই, দীর্ঘ বাম আমলে ঘটে যাওয়া মরিচঝাঁপির উদ্বাস্তুদের উপর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা, কলকাতার বিজন সেতুতে ১৭ জন আনন্দমার্গী সাধুকে জীবন্ত পুড়িয়ে করে খুন করার ঘটনা, ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই কলকতার রাজপথে পুলিশের গুলিতে ১৩ জন যুব কংগ্রেস কর্মীর নিহত হওয়ার ঘটনা বা সাঁইবাড়ির হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। এমনকী সিঙ্গুর বা নন্দীগ্রামের প্রসঙ্গও উঠে আসে তাঁর মুখে। আর সেই সমস্ত কথা বলার সময়ে কার্যত কেঁদে ফেলেন তিনি।
তরুণ রায় বলেন, 'আমার পশ্চিমবাংলায় সাঁই বাড়ির ঘটনা ভুলে যাইনি। আমরা সন্তানের রক্তমাখা ভাত মাকে খাওয়ানোর সেই দিন ভুলে যাইনি। আমরা ভুলে যাইনি আনন্দ মার্গীদের কথা। আমরা ভুলে যাইনি সিঙ্গুর নন্দীগ্রামের কথা। আমরা জাতীয় কংগ্রেস দেশের স্বার্থে জোটবদ্ধ যখন হই...। বুকে ব্যথা নিয়ে, প্রার্থীর সমর্থন, বুকে পাথর চাপা দিয়ে সুকৃতির হয়ে ভোট ভিক্ষা করছি। আনন্দমার্গীদের কথা মনে পড়লেও আমরা সুকৃতির জন্য ভোট ভিক্ষা করছি, এটাই কংগ্রেস।' তিনি আরও বলেন, 'দেশের স্বার্থে আমরা সুকৃতি ঘোষালকে সমর্থন করেছি। আপনারা তাঁকে ভোট দিয়ে দিল্লিতে পাঠান, বাংলায় পরিবর্তন ঘটাতে হবে, দিল্লিতে পরিবর্তন ঘটাতে হবে, সেই জন্য আমরা সুকৃতিতে জয়ী করার আবেদন জানাচ্ছি কংগ্রেসের পক্ষ থেকে।' তবে তরুণের এই মন্তব্যে ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে বর্ধমান - দুর্গাপুর লোকসভা এলাকায়।