• রিয়েল লাইফের ঈশানদের জন্য সচেতনতা-বার্তা স্কুলে
    এই সময় | ০৬ মে ২০২৪
  • এই সময়: ডিসলেক্সিয়া-সহ নানা কমিউনিকেশন ডিজ়অর্ডারে সারা দুনিয়ায় ভোগে লক্ষ লক্ষ শিশু। তাদের অনেকেই ছোট হাতের ‘বি’ আর ‘ডি’-এর পার্থক্য বুঝতে পারে না, আবার কেউ গুলিয়ে ফেলে বড় হাতের ‘জে’-এর বাঁকটা বাঁ দিকে হবে না ডান দিকে। ‘তারে জ়মিন পর’ সিনেমার কল্যাণে ‘ঈশান অবস্তি’-দের কথা এখন আর কারও অজানা নয় ঠিকই। কিন্তু এর পরেও সমস্যার মোকাবিলায় লড়াই চালানোর মানসিকতা নিয়ে সে ভাবে সচেতন নয় সমাজ। বস্তুত, সংবেদনশীল নন অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকাও। সম্প্রতি আধুনিক শিক্ষকতা বিষয়ক একটি আলোচনা চক্রে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্যের একাংশে উঠে এলো এমনই হতাশার কথা।

    আইসিসিআর-এ আয়োজিত ‘একবিংশ শতকের স্কুল শিক্ষকতা’ শীর্ষক ওই আলোচনা সভায় শিশু ও ছাত্রছাত্রীদের নানা ‘লার্নিং ডিজ়অর্ডার’ সংক্রান্ত সমস্যাগুলি তুলে ধরেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা জানান, এই সব সমস্যার শিকার শিশুদের অধিকাংশ সময়েই বাইরে থেকে দেখে বোঝা যায় না। ফলে শিশুটি আর পাঁচ জন স্বাভাবিক ছেলেমেয়ের মতোই বড় হয়ে উঠবে বলে বাবা-মা-শিক্ষক-শিক্ষিকারা প্রত্যাশা করেন। কিন্তু বাস্তবে সেই আশা হোঁচট খায় ডিসলেক্সিয়া, স্পিচ ইমপেয়ারমেন্ট, ল্যাঙ্গুয়েজ ইমপেয়ারমেন্টের মতো নানা কমিউনিকেশন ও লার্নিং ডিজ়অর্ডারে।

    বিশেষজ্ঞরা জানান, ২০২১ সালের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র রিপোর্ট বলছে, সারা পৃথিবীতে ১৫ বছরের কম বয়সি প্রায় ৩ কোটি ৪০ লক্ষ শিশু-কিশোর-কিশোরীর আংশিক বধিরতা রয়েছে। অনেকের মস্তিষ্ক আবার কোনও শব্দ বা বাক্য সঠিকভাবে ‘প্রসেস’ করতে পারে না। সে কারণে বিভিন্ন ধরনের লার্নিং ডিজ়অর্ডার, গলার স্বরের সমস্যা, তোতলামি, উচ্চারণ ও অন্যান্য সমস্যা দেখা দেয়। অথচ যথাসময়ে সঠিক ভাবে একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে যদি ওই শিশুদের চিকিৎসা করা যায়, তা হলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই সমস্যা দূর করা সম্ভব।

    অনুষ্ঠানে উপস্থিত এসএসকেএম হাসপাতালের স্পিচ প্যাথলজিস্ট মহম্মদ শাহিদুল আরেফিন বলেন, ‘পৃথিবীর বিভিন্ন উন্নত দেশে এ বিষয়ে গবেষণা এবং সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি স্কুলে পাঠরত বাচ্চাদের মধ্যে এই কমিউনিকেশন ডিসঅর্ডারে আক্রান্তের হার ৭.৭% থেকে ১৩% পর্যন্ত। অর্থাৎ, প্রায় প্রতি ৭ থেকে ১২ জন শিশুর মধ্যে একজন বাচ্চা এই সমস্যায় ভুগছে।’ তাঁর আক্ষেপ, ‘আমাদের দেশে বিজ্ঞানসম্মত ভাবে এ রকম কোন সমীক্ষা বা গবেষণা করা হয় না বলে আসল সংখ্যাটা সম্পর্কে তেমন ওয়াকিবহাল নয় কেউ-ই। তবে এই সব সমস্যার মোকাবিলায় যে শিশুর অভিভাবকের পাশাপাশি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও অপরিসীম ভূমিকা রয়েছে।’
  • Link to this news (এই সময়)