এই সময়, আলিপুরদুয়ার: মোবাইল গেমের নেশায় বুঁদ ছিলেন যুবক। মোবাইল নিয়ে বাড়ির পিছনে চলে গিয়েছিলেন রাতের অন্ধকারে। তার পরেই নিখোঁজ হয়ে যান। পরের দিন প্রায় এক কিলোমিটার দূরে উদ্ধার হলো তাঁর মৃতদেহ। ঘটনাস্থলে হাতিদের পায়ের একাধিক ছাপ মেলায় বনকর্তারা নিশ্চিত যে, হাতির হানায় মৃত্যু হয়েছে যুবকের। মৃতের নাম আকাশ দাস (২৮)। আলিপুরদুয়ারের জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান লাগোয়া মধ্য মাদারিহাটের শালামন্ডল চৌপথি এলাকার ঘটনা। শনিবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে বলে অনুমান।
মোবাইলে গেম খেলার নেশা ছিল আকাশের। নির্বিঘ্নে গেম খেলার জন্য রাতে বাড়ির পিছনে মোবাইল নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তার পরেই তাঁর আর খোঁজ মেলেনি। পরিবারের তরফে রাতভর তল্লাশি চালিয়েও খোঁজ মেলেনি। রবিবার সকাল ন’টা নাগাদ বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে ওই যুবকের দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া মৃতদেহ উদ্ধার হয় একটি কৃষিজমি থেকে। বন দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আকাশের মৃত্যুর কারণ হাতির আক্রমণ।
শনিবার সন্ধ্যার পর থেকেই চার-পাঁচটি হাতির একটি দল যে মধ্য মাদারিহাটে অবস্থান করছে, সে বিষয়ে আগাম সতর্ক করা হয়েছিল। গোটা ঘটনার তদন্তের পরে বন দপ্তরের অনুমান, বাড়ির পিছনে অন্ধকারের মধ্যে মোবাইলে ডুবে থাকা আকাশকে বাগে পেয়ে শুঁড়ে পেঁচিয়ে তুলে নিয়ে যায় ওই বুনো হাতির দলটি। তারপরেই রীতিমতো লোফালুফি করে তাঁকে হত্যা করে।
আকাশের কাকা সত্যজিত দাস বলেন, ‘আকাশের মোবাইল ফোনে গেম খেলার প্রবল নেশা ছিল। ও সম্ভবত বাড়ির পিছনে মোবাইল ফোনে গেম খেলছিল। আর সেই সময়েই হাতি ওকে তুলে নিয়ে যায়। রাতে ওই সময়ে তিন-চারবার হাতির চিৎকার শুনতে পাই। ভেবেছিলাম, অন্য কোনও কারণে চিৎকার করছে। কিন্তু আমার ভাইপোকেই যে ওরা মেরে ফেলেছে, বুঝতেই পারিনি।’
মৃতের বাবা অভিজিৎ দাস বলেন, ‘শনিবার রাতে ছেলের মোবাইল ফোনে বহুবার রিং হচ্ছিল। কিন্ত কোথায় হচ্ছিল বুঝতেই পারছিলাম না।’ জলদাপাড়া বনবিভাগের এডিএফও রিয়া গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘আপাত দৃষ্টিতে হাতির হানাতেই ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে আমাদের ধারণা। সব কিছু ময়নাতদন্তের রিপোর্টে স্পষ্ট হবে। তারপরেই পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের বিষয়ে পদক্ষেপ করা হবে।’