তপ্ত গরমে ফুটছে গোটা দক্ষিণবঙ্গ। কয়েকটি জেলায় বৃষ্টির ছিঁটেফোঁটা দেখা গেলেও ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি দেখার অপেক্ষায় একাধিক জেলা। বাদ নেই হাওড়াও। সেই জেলাতেই একটি গ্রামে প্রায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় দিন কাটাতে হচ্ছে বাসিন্দাদের।গ্রামের সিংহভাগ এলাকাতেই মানুষের ভরসা পাখা। কিন্তু উলুবেড়িয়া উত্তর বিধানসভার রাজাপুর থানা এলাকার বানিবন ব্রাহ্মণপাড়া সহ কয়েকটি পাড়ার বাড়িতে বাড়িতে সন্ধ্যার পর থেকে পাখা আর ঘোরে না। এমনকি বিদ্যুতের উপর নির্ভর করে কোনও কাজই তারা করতে পারেন না এলাকার বাসিন্দারা। গোটা এলাকায় একটি ট্রান্সফরমার। গরমে বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে পারছে না এলাকার সবথেকে পুরনো ট্রান্সফরমার।
এই সমস্যায় নাজেহাল হয়ে এবারে ভোট বয়কটের চিন্তাভাবনা শুরু করল বানিবন ব্রাহ্মণপাড়ার বাসিন্দারা। রবিবার এই নিয়ে তারা এলাকায় প্রতিবাদেও সামিল হলো। বাসিন্দাদের অভিযোগ দীর্ঘদিনের এই সমস্যা নিয়ে প্রশাসনের সর্বস্তরে অভিযোগ জানালেও কোন সূরাহা হয়নি। বিদ্যুতের এই সমস্যা না মিটলে তারা বুথমুখী হবেন না বলেও জানিয়ে দেন বাসিন্দারা। রবিবার সকালেই তারা হাতে প্লাকার্ড নিয়ে এলাকায় বিক্ষোভ দেখান।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, প্রয়াত সাংসদ সুলতান আহমেদের উদ্যেগে এই গ্রামে প্রথম বিদ্যুৎ এসেছিল। তারপর কয়েক বছর সব ঠিকঠাক চলেছিল। অভিযোগ ধীরে ধীরে গ্রাহকের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও পুরানো সেই ট্রান্সফরমার পরিবর্তন হয়নি। আর এর জেরেই নাজেহাল হতে হচ্ছে ব্রাহ্মণপাড়া বাগ পাড়া, গায়েন পাড়া ও কুমোর পাড়ার বাসিন্দাদের। তাদের অভিযোগ এতটাই বিদ্যুৎ কম থাকে যে আলো জ্বলে না। ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা করতে হয় মোমবাতি হ্যারিকেন জ্বালিয়ে।
বিদ্যুতের অবস্থা খারাপ থাকার কারণে বাড়ির একাধিক ইলেকট্রনিক জিনিস খারাপ হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। ব্রাহ্মণপাড়ার বাসিন্দা প্রিয়ম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘এখানে প্রায় এক হাজারের কাছাকাছি বাসিন্দা রয়েছে। একটিমাত্র ট্রান্সফরমারের উপরে সবাই নির্ভরশীল। সমস্যার বিষয়ে প্রশাসনকে বারবার জানানো হয়েছে। তারা ট্রান্সফরমার বদলের কথা বললেও বছর পর বছর কেটে গেলেও তা হয়নি। বাধ্য হয়ে আমরা ভোট বয়কটের চিন্তাভাবনা করছি।’
উলুবেড়িয়া মহকুমা প্রশাসনের এক কর্তা জানান বিষয়টা নজরে এসেছে। সমস্যার সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। যদিও, এলাকার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, এই তপ্ত গরমের মধ্যে আর কতদিন এই জ্বালা সহ্য করতে হবে? সেই কারণেই ভোটদান থেকে বিরত থাকার চিন্তাভাবনা করছেন তাঁরা।