• প্রচারে গিয়ে হামলার মুখে তৃণমূল প্রার্থী, বোমাবাজি
    বর্তমান | ০৬ মে ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: খানাকুলে প্রচারে গিয়ে হামলার মুখে পড়লেন তৃণমূল প্রার্থী মিতালি বাগ। রবিবার সকালে চিংড়া পঞ্চায়েত এলাকায় মিতালিদেবী জনসংযোগ কর্মসূচিতে গিয়েছিলেন। এলাকায় ঢুকতেই মুড়িমুড়কির মতো বোমাবাজি শুরু হয়। প্রার্থীর গাড়িতে শাবল, লাঠি দিয়ে ভাঙচুর চালানো হয়। হামলার সময় গাড়িতে না থাকায় মিতালিদেবী অল্পের জন্য বরাতজোরে বেঁচে যান। ঘটনায় তাঁর গাড়ির চালক জখম হন। তাঁকে আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। পরিস্থিতি সামলাতে এলাকায় বিশাল পুলিস বাহিনী নামানো হয়। গেরুয়া শিবিরের সন্ত্রাস নিয়ে তৃণমূল সোচ্চার হয়েছে। এদিন বিকেলে তারা এই ইস্যুতে থানায় বিক্ষোভও দেখায়। যদিও বিজেপির তরফে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। পুলিস জানিয়েছে, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এলাকায় পুলিসি টহলদারি চলছে।

    রবিবার খানাকুল-২ ব্লকের চিংড়া পঞ্চায়েতের মোস্তাফাপুর এলাকায় প্রচারে গিয়েছিলেন মিতালিদেবী। এলাকায় পৌঁছে গাড়ি থেকে নেমে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে তিনি জনসংযোগ কর্মসূচি সারেন। চালক শেখ শাহনওয়াজ স্থানীয় দলীয় অফিসের সামনে গাড়িটিকে রাখার জন্য নিয়ে যাচ্ছিলেন। প্রার্থী ভিতরে আছেন ভেবে দুষ্কৃতীরা গাড়ি আটকে শাবল, লাঠি দিয়ে ভাঙচুর চালায়। মারধর করা হয় গাড়ির চালককে। লাঠি হাতে স্থানীয় দুষ্কৃতীরা এলাকায় দাপিয়ে বেড়ায়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে তৃণমূল কর্মীরা প্রার্থীকে প্রথমে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যান। 

    আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান স্বপন নন্দী বলেন, চিংড়া পঞ্চায়েত এলাকায় এদিন প্রচার কর্মসূচি ছিল। এলাকায় ঢোকার সময় বোমাবাজি করা হচ্ছিল। জনসংযোগ কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার আগে প্রার্থী ও আমার গাড়িটিকে মোস্তফাপুর পার্টি অফিস রাখার জন্য যাচ্ছিলাম। বিজেপির দুষ্কৃতীরা রাস্তায় লাঠি, শাবল, বোমা হাতে নিয়ে দাঁড়িয়েছিল। প্রার্থীর নামে স্টিকার লাগানো গাড়িটা দেখেই ওরা হামলা চালায়। সৌভাগ্যক্রমে তার কিছুক্ষণ আগে প্রার্থী গাড়ি থেকে নেমে যান। চালককে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। বিজেপি পরিকল্পিতভাবে এই হামলা চালিয়েছে।

    মিতালিদেবী বলেন, বিজেপি মধ্যযুগীয় বর্বরতাকে ছাপিয়ে যাচ্ছে। খানাকুলে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম হয়েছে। এখানে আমাদের কর্মী-সমর্থকদের শাসানো হচ্ছে। কর্মীদের মারধর করা হচ্ছে। আমি গাড়িতে আছি ভেবে হামলা চালানো হয়। আমাকে না পেয়ে চালককে মারধর করেছে। গাড়ির ভিতরে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ছিল, সেগুলি চুরি করা হয়েছে। এই ঘটনার তীব্র ধিক্কার জানাচ্ছি। বিজেপি বিধায়ক সুশান্ত ঘোষের গ্ৰেপ্তারির দাবি জানাচ্ছি। 

    বিজেপি বিধায়ক সুশান্তবাবু অবশ্য এক ভিডিও বার্তায় জানিয়েছেন, হামলার ঘটানার সঙ্গে বিজেপি জড়িত নয়। তৃণমূল নিজেরাই গাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে প্রচারে আসার চেষ্টা করেছে। মিতালি বাগ এই ঘটনা নিয়ে নাটক করছেন।

    আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি বিমান ঘোষের দাবি, জনরোষের জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে। বিজেপিকে কালিমালিপ্ত করার কোনও চেষ্টাই সফল হবে না। সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি রামেন্দু সিংহ রায় বলেন, বিজেপি যদি ভেবে থাকে এই ঘটনায় আমরা ভয় পাব, তাহলে ভুল করছে। হামলার পরেও কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে আমরা এলাকায় প্রচার চালিয়েছি। আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রার্থীর গাড়ির চালককে ভর্তি করা হয়েছে। থানায় অভিযোগ জানাব। ওদের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছে। তাই হামলা চালাচ্ছে। বিজেপির সন্ত্রাসের জবাব আমরা রাজনৈতিকভাবেই দেব।
  • Link to this news (বর্তমান)