• ‘সাহস থাকলে মোদি বলুন, ভিডিও জাল’, সন্দেশখালি ইস্যুতে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ তৃণমূলের
    বর্তমান | ০৬ মে ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: সন্দেশখালিকে ‘জাতীয় ইস্যু’ যদি কেউ করে থাকেন, তাঁর নাম নরেন্দ্র মোদি। বাংলায় তো বটেই, দেশের অন্য প্রান্তেও এই ছোট্ট জনপদে ‘নারী নির্যাতনে’র অভিযোগে তৃণমূল কংগ্রেসকে লাগাতার তুলোধোনা করে গিয়েছেন তিনি। আর শনিবার থেকে সেই প্রচারই আচমকা বন্ধ। নেপথ্যে একটি ভিডিও। স্টিং অপারেশন। ভিডিওটি জনসমক্ষে আসা মাত্র ফের ঝড় উঠেছে দেশজুড়ে। তবে তার পুরোটাই বিজেপির বিপক্ষে। কলকাতা হোক বা দিল্লি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল এই ইস্যুতে সরাসরি আক্রমণ করছে নরেন্দ্র মোদির দলকে। কাঠগড়ায় তুলছে বঙ্গ বিজেপিকে। রবিবারও দিল্লির মাটিতে দাঁড়িয়ে তোপ দেগেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। সংসদ ভবনের অদূরে, নয়াদিল্লির কনস্টিটিউশনাল ক্লাবে সাংবাদিকদের সামনে বাংলার নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজার তোপ, ‘ডেইলি প্যাসেঞ্জারের মতো বাংলায় যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি। প্রচার করছেন সন্দেশখালি নিয়ে। তাহলে এখন কী হল? সাহস থাকলে প্রধানমন্ত্রী বলুন, সন্দেশখালি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ভিডিও ফেক!’ তৃণমূলের দাবি, সন্দেশখালি ইস্যুতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ক্ষমা চাক বিজেপি। না চাইলে পরিষ্কার হয়ে যাবে, ওই ভিডিওর বক্তব্যই সত্যি। দলের দু‌ই রাজ্যসভার এমপি সাগরিকা ঘোষ এবং সাকেত গোখলেকে পাশে নিয়ে শশী পাঁজার প্রশ্ন, ‘সন্দেশখালি নিয়ে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর মিথ্যা প্রচারের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনই বা স্বতঃপ্রণোদিত ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন? কোথায় গেল জাতীয় মহিলা কমিশন?’ ইতিমধ্যেই তৃণমূল ঠিক করেছে, সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে বিজেপির মিথ্যাচার দেশজুড়ে ফাঁস করা হবে। দিল্লি তো বটেই, অসম, উত্তরপ্রদেশ, মেঘালয়ে যেখানে তৃণমূল প্রার্থী রয়েছে, সেখানেও এই ভিডিওটি তুলে ধরে বাংলাকে অসম্মান করার বিজেপির ব্লু-প্রিন্ট সর্বসমক্ষে আনতে চান তৃণমূল নেতারা। 

    আসলে সন্দেশখালির বিজেপি নেতার ৩২ মিনিট ৪৩ সেকেন্ডের ‘স্বীকারোক্তি’ চাপে ফেলে দিয়েছে বিজেপিকে। কখনও তারা বলছে, ভিডিওটি জাল। কখনও বলছে, একজন কী বলল, তাতে কী আসে যায়। তাতে অবশ্য বিরোধীদের হাতে উঠে আসা অস্ত্র ভোঁতা হয়ে যাচ্ছে না। শশী পাঁজা বলেন, ‘বিজেপি রাজনৈতিকভাবে এমনই দেউলিয়া যে, ধর্ষণের মতো একটি নারকীয় বিষয় নিয়ে রাজনীতি করতে হচ্ছে? তাও আবার সবটাই মিথ্যা! বাংলাকে অসম্মানে বঙ্গ বিজেপির এই চক্রান্ত সামনে আসার পর এখন প্রধানমন্ত্রী চুপ কেন? কেন কিছু বলছেন না অমিত শাহ?’ তৃণমূলের সাফ কথা, ‘প্রধানমন্ত্রী হয়েও ঘটনার সত্যাসত্য যাচাই না করে নরেন্দ্র মোদি বাংলায় গিয়ে সন্দেশখালি নিয়ে প্রচার করছেন। জাতীয় স্তরে বাংলার বদনাম করছেন। তাহলে তো ভাইরাল ভিডিও নিয়েও বলা উচিত। সাহস থাকলে বলুন, ভিডিওটি জাল।’ একই সঙ্গে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে নারী নিগ্রহের অভিযোগের প্রসঙ্গও টেনেছে তৃণমূল। তাদের আক্রমণ, ‘উনি কেন কেরলে গিয়ে বসে আছেন? কর্ণাটকের এনডিএ শরিক নেতা প্রোজ্জ্বল রেভান্না, বিজেপি এমপি ব্রিজভূষণ সিংয়ের নামে মহিলাদের অসম্মান, ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে। অথচ তাঁরাই প্রিয় পাত্র! আর সন্দেশখালিতে যে ঘটনা ঘটেইনি, তার প্রচার দেশজুড়ে?’ শশী পাঁজার বক্তব্য, ‘এভাবে বাংলায় ভোট পাবে বলে মনে করছেন মোদি? ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনার হকের টাকা আটকে রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী। আর এখন ভোট পেতে বাংলাকে অপমান করছেন। সন্দেশখালির সরল মহিলাদের নিজেদের নোংরা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রে ব্যবহার করেছে বিজেপি। লজ্জা হল না? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার তথা বাংলাকে অপমান মোটেই বরদাস্ত করা হবে না। বাংলার মানুষই ভোটে বিজেপিকে উচিত জবাব দেবে। মোদি রোজ বাংলায় প্রচারে গেলেও লাভ হবে না।’
  • Link to this news (বর্তমান)