এই সময়: রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে ‘শ্লীলতাহানি’র লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরে প্রাথমিক অনুসন্ধান শুরু করেছে কলকাতা পুলিশ। ভারতীয় সংবিধানের ৩৬১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপালকে রক্ষাকবচ দেওয়া থাকলেও পুলিশ অনুসন্ধান করতে পারে কি না—তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে সংশয় রয়েছে। তবে রবিবার রাজভবনের জারি করা প্রেস বিবৃতিতে স্পষ্ট দাবি করা হয়েছে, সাংবিধানিক রক্ষাকবচের জন্য রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ উঠলে তার অনুসন্ধানও করতে পারে না পুলিশ।এমনকী যতদিন সংশ্লিষ্ট রাজ্যপাল তাঁর পদে আসীন রয়েছেন, ততদিন কোনও তদন্ত বা অনুসন্ধান শেষে পুলিশ বা যে কোনও তদন্তকারী সংস্থা কোনও রিপোর্ট জমা দিলেও তা চূড়ান্তভাবে গ্রহণ করতে পারে না কোনও আদালত। কারণ, সেটা সংবিধানের ধারার পরিপন্থী হয়। রাজভবন কলকাতার এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করা দু’পাতার বিবৃতিতে রাজভবনের সব বিভাগের কর্মীদের উদ্দেশে বলা হয়েছে, পুলিশ যদি অনুসন্ধানের স্বার্থে কারও কাছ থেকে কোনওভাবে কোনও বক্তব্য জানতে চায়, তাহলে যেন তাঁরা কোনওভাবেই সাড়া না-দেন।
রাজভবনের চিফ অফ স্টাফ এসকে পট্টনায়ককে এই বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সব কর্মী ও আধিকারিককে জানিয়ে দিতে বলা হয়েছে। এর আগে নিগৃহীতার লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরে লালবাজারের তরফে জানানো হয়েছিল, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে তদন্তের ক্ষেত্রে আইনি রক্ষাকবচ থাকলেও অনুসন্ধান তারা চালাতেই পারে। সেই কারণে তারা রাজভবনের কাছে সিসিটিভি ফুটেজ চেয়ে পাঠিয়েছিল, যা অবশ্য এখনও তুলে দেওয়া হয়নি পুলিশের কাছে। এদিন রাজভবনের তরফে যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, তাতে স্পষ্ট, এই অনুসন্ধানে রাজভবনের কোনও কর্মীই পুলিশি তলবে সাড়া দেবেন না।
রাজভবনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পুলিশের তরফ থেকে কোনওরকমভাবে যোগাযোগ করা হলে তাতে যেন কর্মী বা আধিকারিকরা সাড়া না-দেন। অনলাইন, অফলাইন, ফোনে বা ব্যক্তিগতভাবেও পুলিশ যদি তাঁদের কারও কাছ থেকে এই সংক্রান্ত কিছু জানতে চায়, তাহলেও কেউ কোনও বিবৃতি দিতে পারবেন না। এরপরে পুলিশের তরফে কী পদক্ষেপ করা হয়, সেটাই দেখার। এদিন রাজভবনের বিবৃতি নিয়ে লালবাজারের কোনও কর্তা মুখ খোলেননি। তবে তাঁরা আরও আইনি পরামর্শ নিচ্ছেন বলে সূত্রের খবর।
রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে আগেই সরব হয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার নদিয়ায় নির্বাচনী সভা থেকে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে ফের নিশানা করেন অভিষেক। বিজেপি নেতৃত্বের উদ্দেশে তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘বিজেপি যাঁকে রাজ্যপাল করে বাংলায় এনেছে, তিনি মেয়ের বয়সি বাংলার এক বোনের শ্লীলতাহানি করেছেন। বিজেপির অবস্থান কী?’