• 'আজই ঘরের ছেলেটা বাড়ি ফিরত, তা আর হল না...', হাহাকার পাণ্ডুয়ার বিস্ফোরণে মৃত রাজের দাদুর
    এই সময় | ০৬ মে ২০২৪
  • গরমের ছুটিতে বছর ১১-র ছেলেটা মামাবাড়িতে বেড়াতে এসেছিল। মামাই গিয়ে নিয়ে এসেছিলেন খুদেকে। আজ-কালের মধ্যেই বাড়ি ফিরে যাওয়ার কথা তার। কিন্তু, হুগলির পাণ্ডুয়ার বিস্ফোরণ প্রাণ কাড়ল রাজ বিশ্বাসের। বুক চাপড়ে মায়ের হাহাকার 'কার কী ক্ষতি করেছি'! এই বিস্ফোরণের নেপথ্য়ে কে বা কারা রয়েছে? তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।পূর্ব বর্ধমান জেলার বর্ধমানের পাল্লা রোডের বাসিন্দা রাজ বিশ্বাস চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। দিন দশের আগে মামা-মামির হাত ধরে দাদুর বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল সে। সোমবার পাণ্ডুয়ার তিন্না নেতাজি পল্লি কলোনীতে বোমা ফেটে মৃত্যু হয়েছে এই কিশোরের। জখন আরও দুই নাবালক।

    ঘটনার খবর পেয়ে সোমবার সকালেই রাজের মা ও বাবা পান্ডুয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। তার দাদু শিবু বিশ্বাস বলেন, 'স্কুলে গরমের ছুটি পড়েছিল। আর তাই মামাবাড়ি আসার জন্য বায়না ধরেছিল আমার ছোট্ট নাতিটা। ওর মামাই গিয়ে নিয়ে এসেছিল। এখানে কিছুদিন ছিল। রবিবার রাতে আমার সঙ্গে কথা হয়েছিল রাজের। ও বলছিল বাড়ির জন্য মন খারাপ হয়েছে। আজই ওর বাড়ি ফেরার কথা ছিল। কিন্তু...'।

    রাজের আত্মীয় শিবানী রায় বলেন, 'রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এই ধরনের বোমা মজুত করা হয়েছে। তার জন্যই ওই ছোট্ট শিশুটা আজ প্রাণ হারিয়েছে।' এদিকে কথা বলার মতো অবস্থায় নেই রাজের মা। মাঝে মধ্যেই বুক চাপড়ে কাঁদছেন তিনি। কাঁদতে কাঁদতেই তাঁর প্রশ্ন, ‘এবার আমার কী হবে! জ্ঞান থাকতে কারও কোনও ক্ষতি আমি করিনি।’

    রাজের মামা অপু মিস্ত্রি পেশায় কাঠমিস্ত্রি। ভাগ্নেকে নিজে নিয়ে এসেছিলেন মামাবাড়িতে। সোমবারই বাড়ি দিতে যাওয়ার কথা ছিল। কান্না জড়ানো গলায় তিনি বলেন, 'ছেলেটাকে নিয়ে নিয়ে আসলাম। কিন্তু, আর ফেরত নিয়ে যাওয়া হল না।'

    এই ঘটনার পর গোটা এলাকা মুড়ে ফেলা হয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থায়। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এদিনই পাণ্ডুয়ায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা। তার আগে এই ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে।

    এখনও পর্যন্ত পুলিশের তরফে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। কোথা থেকে এল এই বোমা? তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। উল্লেখ্য, তিন্না এলাকা এদিন বিস্ফোরণ ঘটে। হাত উড়ে যায় এক নাবালকের। গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আরও ২ জন। গোটা ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে।
  • Link to this news (এই সময়)