এই সময়, মালদা: নেতারা চেয়েছিলেন, মালদায় কংগ্রেসের প্রচারে আসুক সোনিয়া-রাহুল বা প্রিয়াঙ্কা। কর্মীদের মুখে মুখে সেই খবর ছড়িয়ে গিয়েছিল গোটা জেলায়। কংগ্রেসের প্রচার সত্ত্বেও নেহেরু পরিবারের কেউ শেষ পর্যন্ত মালদায় এলেন না। দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর মতো প্রচারের শেষলগ্নে হাজির হলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে।রবিবার মালদা দক্ষিণ কেন্দ্রের সুজাপুরে হাতিমারী মাঠে জেলার দুই প্রার্থীকে পাশে নিয়ে ৪০ মিনিটের বক্তব্যে প্রথম দশ মিনিট তিনি খরচ করলেন গনিখান চৌধুরীকে নিয়ে। বাকিটা মোদী বিরোধীতা। বাংলায় এসে তৃণমূল সম্পর্কে প্রায় নিশ্চুপ থাকলেন তিনি। ভোট পরবর্তী ইন্ডিয়া জোটের কথা মাথায় রেখেই খাড়গে এমনটা করলেও নেহেরু পরিবারের কেউ হাজির না হওয়াটা মালদার নির্বাচনে বিরল ঘটনা বলে মনে করছেন কংগ্রেস কর্মীরা।
এ দিন খাড়গে বলেন, ‘গনিখান চৌধুরীর চেষ্টায় কলকাতা দেশের প্রথম মেট্রো রেল পেয়েছে। যা হওয়ার সব কংগ্রেসের আমলে হয়েছে। বিজেপি সেগুলো ভোগ করছে বা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। অথচ মোদীজী এমন ভাবে বলছেন যেন দেশ স্বাধীনতা পেয়েছে ২০১৪ সালে, ১৯৪৭ সালে নয়। মোদী এ বার ক্ষমতায় এলে স্বৈরাচারী হয়ে উঠবেন। এটা ঠেকাতে একমাত্র কংগ্রেস পারবে। কংগ্রেস দেশের সব জায়গায় রয়েছে। বাকিরা এ ওখানে তো আরেক জায়গায় আরেক দল।’
তৃণমূলের মতো ওয়াশিং মেশিন-এর তুলনা টেনে কংগ্রেস সভাপতি বলেন, ‘ওরা বিরোধীদলের নেতাদের জীবন দুর্বিষহ করে বিজেপিতে যেতে বাধ্য করছে। ওদের এমন ওয়াশিং মেশিন আছে যে, বিজেপিতে ঢোকার পরেই দূষিত সেইসব নেতারা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে যান।’ রবিবারের শেষ প্রচারে কংগ্রেস সভাপতি এলেও প্রিয়াঙ্কা বা রাহুল না আসায় জেলার কংগ্রেস কর্মীরা হতাশ।
যদিও প্রদেশ কংগ্রেসের নির্বাচনী প্রচার কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুর সাত্তার বলেন, ‘রাহুলজী তাঁর ন্যায়যাত্রায় কিছুদিন আগেই মালদায় এসেছিলেন এবং সুজাপুরে এই মাঠেই রাত্রিবাস করেছেন। প্রিয়াঙ্কার আসার ব্যাপারে দলে কোনও পরিকল্পনা হয়নি। কংগ্রেস কর্মীরা আবেগে নিজেরাই সেটা রটিয়েছিলেন।’ মালদায় বিজেপির প্রচারে এসেছেন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, মিঠুন চক্রবর্তী। তৃণমূলের হয়ে ঝড় তুলেছেন মমতা ব্যান্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, দেব-সহ একঝাঁক চিত্রতারকা। উল্টোদিকে নিজেদের ঘাঁটি পুনরুদ্ধারে নেমে মালদার দুই কংগ্রেস প্রার্থীকে জেলার নেতাদের নিয়ে প্রচার করতে হয়েছে। গনি গড়ে এই প্রথম উলটপুরাণ।