• Abu Taher: অসুস্থতা সরিয়ে ময়দানে তাহের
    এই সময় | ০৬ মে ২০২৪
  • এই সময়, মুর্শিদাবাদ: কঠিন অসুখের সঙ্গে লড়াই করে সবে কিছুটা সুস্থ হয়েছেন। এখনও ভালো করে চলাফেরা করতে পারেন না। অসুস্থতার জন্য মাঝে দীর্ঘ সময় রাজনীতির বাইরে ছিলেন। অনেকে ধরেই নিয়েছিল, আবু তাহের আর স্বাভাবিক জীবনে ফিরতেই পারবে না। কিন্তু সবাইকে ভুল প্রমাণ করে আবার তিনি আবার রাজনীতির ময়দানে ফিরে এসেছেন। নবাবের স্মৃতিবিজড়িত মুর্শিদাবাদ লোকসভা আসনটি ধরে রাখতে তাঁর উপরেই আস্থা রেখেছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।মুর্শিদাবাদের একেবারে শেষপ্রান্ত নওদা থেকে রাজনীতি শুরু। কংগ্রেসের ছাত্র রাজনীতি দিয়ে হাতেখড়ি। তারপর চলে আসেন অধীর চৌধুরীর ছত্রচ্ছায়ায়। প্রার্থী বাছাই নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে মতোবিরোধের জেরে বিধানসভা ভোটে মুর্শিদাবাদের নওদা কেন্দ্র থেকে অধীরের মনোনীত নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রথম ভোটে লড়ার সুযোগ পান তাহের। তারপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। রকেটের গতিতে উত্থান। কংগ্রেসের টিকিটে একাধিকবার বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন। অধীরের রাইটহ্যান্ড ম্যান হিসেবে দীর্ঘদিন মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেসের সভাপতির দায়িত্ব সামলেছেন।

    কিন্তু সেই অধীরের সঙ্গেই মতানৈক্যের কারণে কংগ্রেস ত্যাগ করে তৃণমূলে যোগদান করেন। ২০১৯-এ লোকসভার টিকিট পান মুর্শিদাবাদ কেন্দ্র থেকে। হেভিওয়েট কংগ্রেস প্রার্থী আবু হেনাকে হারিয়ে সংসদে প্রবেশ। মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের সংগঠন বিস্তারে দলের জেলা সভাপতির দায়িত্বভার সঁপা হয় তাঁর উপর। সেই কাজে তিনি অনেকটাই সফল হয়েছেন বলা যায়। ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে মুর্শিদাবাদ জেলার ২২টি আসনের মধ্যে ২০টিতেই জয়ী হন তৃণমূল প্রার্থীরা। পঞ্চায়েতেও মুর্শিদাবাদে নজরকাড়া ফলাফল করেছে তৃণমূল।

    আবু তাহের

    কিন্তু হঠাৎ অসুস্থতা তাঁর রাজনৈতিক জীবনকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করায়। বিরল রোগে আক্রান্ত হওয়ায় প্রায় ছ’মাসের উপর তিনি হাসপাতালে শয্যাশায়ী ছিলেন। ফলে এবার তাঁর টিকিট পাওয়া নিয়ে অনেকেই সন্দিহান ছিলেন। কিন্তু তাঁর ফাইটিং স্পিরিটকে কুর্নিশ জানাতে শেষ মুহুর্তে তাহেরকেই প্রার্থী হিসেবে বেছে নিয়েছেন দলনেত্রী। অসুস্থ শরীর নিয়েই জলঙ্গি থেকে ভগবানগোলা, ডোমকল, করিমপুর সর্বত্র চষে বেড়াচ্ছেন।

    গতবার আড়াই লাখের বেশি ভোটে জয়ী হয়েছিলেন। কিন্তু এবার লড়াইটা অত সহজ হবে না বলে মনে করছেন অনেকে। কারণ গত কয়েক বছরে মুর্শিদাবাদে ভোটের সমীকরণ অনেকটা পাল্টেছে। তার উপর আবার এখান থেকেই ভোটে লড়ছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তাঁকে জেতাতে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন অধীর চৌধুরী। বিজেপির শক্তিও অনেকটা বেড়েছে। আইএসএফ-ও আলাদা প্রার্থী দিয়েছে।

    আবু তাহের অবশ্য বলছেন, ‘আমার এলাকায় যা কাজ হয়েছে তাতে মানুষ আমাকেই আশীর্বাদ করবেন। আমাদের নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী গণতন্ত্র রক্ষার লড়াই করছেন। আমরা সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করছি। এখানকার মানুষ জানে তৃণমূল তাদের বিপদে-আপদে রক্ষা করবে।’
  • Link to this news (এই সময়)