এই সময়: চলতি লোকসভা ভোটে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিকবার অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। নির্বাচন কমিশনের নজরদারি সত্ত্বেও বিজেপির সাম্প্রতিক একটি বিজ্ঞাপন কী ভাবে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, তা নিয়ে রবিবার প্রশ্ন তুলে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহকে বেনজির আক্রমণ শানিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। বিজেপি আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। যদিও জোড়াফুল নেতৃত্বের পর্যবেক্ষণ, নির্বাচন কমিশনে তৃণমূল এখনও পর্যন্ত যতগুলি অভিযোগ দায়ের করেছে, তা নিয়ে যথেষ্ট পদক্ষেপ কমিশন করেনি।এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশনের আচরণ নিয়ে সোমবার দুর্গাপুরের সভায় তীব্র বিদ্রুপ করেছেন মমতা। তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘ভুলেই গিয়েছি, ইলেকশন কমিশন আছে কি না। খোঁজ পাচ্ছি না। কোথায় আছে, কে জানে! ভগবান জানে।’ নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে কটাক্ষ করার পাশাপাশি আদর্শ আচরণবিধি সঠিক ভাবে বলবৎ হচ্ছে না বলেও মনে করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
মমতা বলেন, ‘আমি আসছিলাম রাস্তা দিয়ে। একজন বললেন, দিদি মডেল কোড অব কনডাক্ট—এই নাম এখন বদলে গিয়েছে। আমি বললাম, কে বদলাল ভাই? সে বলে আমরা বদলে দিয়েছি। আমি বললাম, কী নাম দিয়েছ? সে বলল, ওটা মডেল কোড অব কনডাক্ট নয়, এখন মোদী কোড অব কনডাক্ট হয়েছে। মোদী যা বলবে, তারা তাই বলবে। কানে দিয়েছে তুলো আর পিঠে বেঁধেছে কুলো। কোনও কিছু করার ক্ষমতা নেই। ঢাল নেই তরোয়াল নেই, নিধিরাম সর্দার! তাদের বলে রাখি, খেলা হবে। তৈরি থাকো।’
গেরুয়া শিবির কমিশনকে প্রভাবিত করছে বলে মমতা মনে করলেও বঙ্গ-বিজেপি তৃণমূলের বিরুদ্ধে পুলিশ-প্রশাসনকে প্রভাবিত করার পাল্টা অভিযোগ করেছে। প্রেস ক্লাবে এ দিন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন। অনেক আইসি-ওসি-এসপি নিরপেক্ষ নন। তাঁরা এমন ভাবে কাজ করছেন যেন তৃণমূলের প্রার্থীকে জেতানো তাঁদের দায়িত্ব। আমরা বলছি, আপনি চাকরি করুন। উনি কী করবেন? খুব বেশি হলে কম্পালসারি ওয়েটিং থাকতে হবে।’
যদিও আইপিএস অথবা আইএস অফিসার স্তরের আমলাদের বিজেপি নেতারা প্রভাবিত করতে চাইছেন বলে মমতাও অভিযোগ করেছেন। এর আগে তিনি অভিযোগ করেছিলেন, বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের দিয়ে আইএএস-আইপিএস অফিসারদের ফোন করানো হচ্ছে। এদিন মমতা বলেন, ‘আমি সেন্ট্রাল অফিসারদের ঘৃণা করি না। কিন্তু এমন কোনও কাজ করবেন না, যেখানে মোদী চলে যাবে তারপর আপনাদের কী হবে, সেটা এখন থেকে ভাবতে হয়!’