এই সময়, কৃষ্ণনগর: জিমের মধ্যে মাটিতে ফেলে এক তরুণীকে এলোপাথাড়ি মারধর করছেন ঊর্ধাঙ্গ অনাবৃত পেশিবহুল এক যুবক। ঠেকানোর কেউ নেই আশপাশে। মাটিতে পড়ে অসহায় ভাবে মার খাচ্ছেন তরুণী। এমনই এক ভিডিয়ো এক্স হ্যান্ডেল এবং অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। অভিযুক্ত যেখানকারই হোক, খুঁজে বের করে দ্রুত গ্রেপ্তার ও যথোপযুক্ত সাজার জোরালো দাবি তুলেছিলেন নেটিজেনদের অনেকেই। সে ভিডিয়ো নদিয়ার রানাঘাট পুলিশ জেলার পদস্থদের নজরে আসে।প্রাথমিক ভাবে জানা যায়, এটা রানাঘাটেরই একটি জিমের ঘটনা। স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তদন্তে নেমে রানাঘাট থানার পুলিশ জানতে পারে কথা কাটাকাটির জেরে প্রশিক্ষণে আসা প্রেমিকাকে এভাবে মারধর করে জিমের প্রশিক্ষক তথা প্রেমিক। ভিডিয়োয় মারধরে অভিযুক্ত সেই যুবককে শেষপর্যন্ত গ্রেপ্তারও করে পুলিশ। কিন্তু সোমবার তাঁকে আদালতে তোলা হলে প্রহৃত সেই প্রেমিকা আদালতে এফিডেভিট জমা দিয়ে বন্ধুকে ছাড়ানোর আর্জি জানান। ফলে বেল পেয়ে যান যুবক।
রানাঘাটের জেলা পুলিশ সুপার কুমার সানি রাজ বলেন, ‘তদন্তে জানা গিয়েছে ভাইরাল ভিডিয়োটি রানাঘাটের একটি জিমের। এ বছর জানুয়ারি মাসের ৯ তারিখের ঘটনা এটি। জিমে আসা তরুণীর ব্যক্তিগত প্রশিক্ষক তাঁকে এভাবে মারধর করে। জেরায় পুলিশ জানতে পারে যুবকটিরই গার্লফ্রেন্ড ওই তরুণী। নিজেদের মধ্যে কথা কাটাকাটির জেরে এভাবে মারধর করেছিল সে। রবিবার রাতে শেষপর্যন্ত রানাঘাট থানার পুলিশ ভিডিয়োর ওই যুবককে গ্রেপ্তার করে।’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর সাতাশের ওই যুবকের নাম রাজদীপ দে। বাড়ি ধানতলা থানার হিজুলি ধোপাপাড়ায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রানাঘাট শহরের একটি ক্লাবের দোতলার অংশে এই জিমটি চালাতেন রাজদীপ। ক্লাবের এক কর্তা বলেন, এলাকার মানুষের শরীরচর্চার স্বার্থে আমাদের ক্লাব ঘরের একটি অংশে ওই যুবককে জিম চালানোর অনুমতি দিয়েছিলাম। তরুণীকে মারধর করার ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োটি আমরাও দেখেছি। খুবই নিন্দনীয়। দোষী যুবকের উপযুক্ত আইনি সাজা হোক আমরাও চাই।’
এভাবে প্রহৃত ও লাঞ্ছিত হওয়ার পরেও এ ঘটনায় অভিযুক্ত যুবক তথা নিজের প্রেমিককে মুক্ত করতে তরুণীর তৎপরতা দেখে ফের একবার আলোচনায় সম্পর্কের টক্সিসিটি।
মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ কস্তুরী মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘ঘটনাটি সম্পর্কে একদমই জানা নেই। তবে শুনে যা মনে হচ্ছে, মেয়েটির এই আচরণের পিছনে শুধু ভালোবাসা বা স্রেফ টক্সিসিটি রয়েছে বললে, তা বড্ড সরলীকরণ হবে। এর পিছনে ভয়ও থাকতে পারে। অথবা সম্পর্কের অন্য কোনও জটিল সমীকরণও থাকতে পারে বলে আমার মনে হয়। সে জন্যই আরও গভীর গিয়ে বিষয়টি অনুধাবন করা প্রয়োজন।’