রাজীব চক্রবর্তী: 'এটা একটা প্রাতিষ্ঠানিক জালিয়াতি।' সুপ্রিম কোর্টে কঠিন প্রশ্নের মুখে এসএসসি। পাশাপাশি, একের পর এক প্রশ্নের মুখে সুপ্রিম কোর্টে নিয়োগে দুর্নীতি কার্যত মেনে নিল এসএসসি-ও। তবে সেইসঙ্গে এসএসসি এও দাবি করে যে,"কিছু নিয়োগ অবৈধ হলেও ১৯ হাজার চাকরি বৈধ।" এদিন হাইকোর্টের নির্দেশে ২৫ হাজার ৭৫৩ চাকরি বাতিলের মামলায় শুনানি সুপ্রিম কোর্টে। সেই শুনানির সময়ই প্রধান বিচারপতি এসএসসি আইনজীবীকে বলেন, "চাকরির অবস্থা খারাপ। সরকারি চাকরির অবস্থা আরও খারাপ। এইভাবে দুর্নীতি হলে আমার আপনার ছেলেমেয়েরা কোথায় যাবে?" শীর্ষ আদালতে প্রধান বিচারপতির একের পর এক প্রশ্নের মুখে কার্যত নাস্তানাবুদ এসএসসি। জবাবে এসএসসি-ও বলে যে, "যারা Rank জ্যাম করে চাকরি পেয়েছেন, যাদের প্রাপ্ত নম্বর কমিশনের সঙ্গে মেলেনি, যারা প্যানেলের বাইরে থেকে চাকরি পেয়েছেন, যারা পরীক্ষা না দিয়েই চাকরি পেয়েছেন, তাদের নিয়ে কোনও বক্তব্য নেই কমিশনের।" ওএমআর নিয়েও এদিন সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় এসএসসি-কে। নিয়ম মেনে ওএমআর তথ্য সংরক্ষণের বরাত দেওয়া হয়নি কেন? জানতে চায় আদালত। কড়া মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি। বলেন, "ওএমআর তথ্য সংরক্ষণের দায়িত্ব ছিল এসএসসি-র। তা তারা করেনি। তাদের ওয়েবসাইটে তা সংরক্ষণ হয়নি। একটি বেসরকারি সংস্থার কম্পিউটারে সেই তথ্য পাওয়া যাচ্ছে! এটা মারাত্মক। ওএমআর নষ্ট করার জন্য একটি সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়েছিল। তারা আবার অন্য একটি সংস্থাকে বরাত দিয়েছে। এসএসসি কোনও মিরর ইমেজ রাখেনি। এটা কীভাবে সম্ভব?" প্রশ্ন প্রধান বিচারপতির।
পাশাপাশি এদিন সুপ্রিম কোর্টে সুপার নিউমেরারি পোস্ট নিয়ে আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়েছে রাজ্যও। সুপ্রিম কোর্টে এদিন সুপার নিউমেরারি পোস্ট তৈরির পক্ষে সওয়াল করে রাজ্য। রাজ্যের আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী আদালতে দাবি করেন, অতিরিক্ত পদ তৈরি বেআইনি নয়। নিয়ম মেনেই করা হয়েছে। কমিশনের পরামর্শ অনুযায়ী তা করা হয়েছে। মোট ৬৮৬১ অতিরিক্ত পদ তৈরি করা হয়েছিল। রাজ্যের এই দাবির প্রেক্ষিতেই প্রধান বিচারপতি জানতে চান, পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়াই যখন বিচারাধীন, তখন অতিরিক্ত পদ তৈরি করা হল কেন? জবাবে রাজ্য দাবি করে যে, সুপার নিউমেরারি পোস্ট তৈরি মন্ত্রিসভার-ই সিদ্ধান্ত। তার উপর সিবিআই তদন্তের নির্দেশ বেআইনি বলেও দাবি করেন রাজ্যের তরফে নীরজ কিষণ। একইসঙ্গে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ খারিজ করারও আর্জি জানানো হয় রাজ্যের তরফে। যদিও রাজ্যের আর্জি খারিজ হয়ে গিয়েছে।