Calcutta High Court : ‘রাজনৈতিক প্রভাবে নষ্ট হচ্ছে কলেজে পড়াশোনার পরিবেশ!’
এই সময় | ০৭ মে ২০২৪
এই সময়: রাজ্যের কলেজগুলিতে রাজনৈতিক প্রভাবের জেরে পড়াশোনার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলে একটি মামলায় পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাইকোর্টের। সোমবার এই মামলার শুনানিতে কলেজগুলিতে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে পড়ুয়াদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য অধ্যাপকদের কী কী করণীয়, সে সম্পর্কেও স্মরণ করিয়ে দিয়েছে হাইকোর্ট। বিচারপতি শম্পা দত্ত পালের পর্যবেক্ষণ, কলেজের প্রাথমিক উদ্দেশ্য পড়ুয়াদের শিক্ষা দেওয়া। সেটাই ব্রাত্য থেকে যাচ্ছে রাজনৈতিক প্রভাবে।শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে, ক্ষতি হচ্ছে পড়াশোনার মানেরও। আদালত এই অবস্থা কাটাতে কিছু পরামর্শও দিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষকে। হুগলি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ সীমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সেখানকার ছাত্র সংসদ ও কিছু অধ্যাপকের মধ্যে গোলমালের জেরে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতে একটি মামলা দায়ের হয়েছিল। সোমবার সেই মামলা খারিজ করে দিয়ে রায় দিয়েছে হাইকোর্ট।
আদালতের আশা, কলেজ শিক্ষকরা পেশাদার মনোভাব নিয়ে তাঁদের দায়িত্ব পালন করবেন। সেক্ষেত্রে পড়ুয়াদের যোগ্য সম্মান দেওয়া শিক্ষকদের করণীয় বলে মনে করে আদালত। হাইকোর্ট আশা প্রকাশ করেছে, শিক্ষকরা তাঁদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে পড়ানোর পদ্ধতি আরও সহজ করার ব্যাপারে চেষ্টা করবেন। ছাত্রছাত্রীদের পড়ানো এবং প্রশাসনিক কাজ শিক্ষকরা সৎভাবে ও স্বচ্ছতার সঙ্গে করবেন বলেও শিক্ষকদের প্রতি আশা রেখেছে আদালত।
পর্যবেক্ষণ, একজন পেশাদার হিসেবে পড়ানোর সময়ে শিক্ষকের নির্দিষ্ট সীমারেখা মেনে চলা এবং পড়ুয়া ও সহকর্মীদের সঙ্গে কথোপকথনে সকলের মর্যাদা রাখা জরুরি। পড়ানোর সময়ে স্বচ্ছতা এবং নিরপেক্ষতা বজায় রাখাও অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
মামলায় উঠে এসেছে, ২০১৫ সালে সীমাদেবী ওই কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে কাজে যোগ দেওয়ার পরেই সেখানকার টিচার-ইন-চার্জের সঙ্গে মতবিরোধ শুরু হয়। একটি রাজনৈতিক দলের মদতপুষ্ট কলেজের ছাত্র সংগঠন তাঁর কাজে যোগ দেওয়ায় প্রথম থেকেই অখুশি ছিল। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কলেজের গাছ কেটে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ করা হয়। হাইকোর্টে দায়ের হওয়া মামলায় তাঁর আইনজীবী অপলক বসু সওয়াল করেন, থানায় অভিযোগ করা হলেও নিম্ন আদালতে সেই অভিযোগ খারিজ হয়ে যায়।
অধ্যক্ষ তাঁর এই সম্মানহানির চেষ্টার পিছনে কিছু সহকর্মী ও রাজনৈতিক মদতপুষ্ট ছাত্রনেতার নামে অভিযোগ করেন। তাঁর সেই বক্তব্যের পাল্টা তাঁদের সম্মানহানির অভিযোগ তুলে ওই ছাত্রনেতা ও অধ্যক্ষের কিছু সহকর্মী নিম্ন আদালতে মামলা করেন। নিম্ন আদালত সেই অভিযোগ গ্রহণ করে। তাকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা করেন ওই অধ্যক্ষ। তার প্রেক্ষিতেই বিচারপতি শম্পা দত্ত পাল অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতের মামলা খারিজ করে দেন।