সুধীর মিশ্র, লখনৌক’দিন আগেই প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং দাবি করেছেন, পাক অধিকৃত কাশ্মীরকে জোর করে ভারতের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে না, পিওকে-র মানুষ নিজেরাই ভারতের অংশ হতে চাইবেন। নির্বাচনী আবহে রাজনাথের এই দাবি ঘিরে শুরু রাজনৈতিক তরজা। জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা ‘ন্যাশনাল কনফারেন্স’-এর নেতা ফারুক আবদুল্লার বক্তব্য, ‘প্রতিরক্ষামন্ত্রী যদি এমন কথা বলে থাকেন, আমরা তো থামাতে পারব না। কিন্তু একটা কথা মনে রাখবেন, পাকিস্তান চুড়ি পরে বসে নেই। ওদের হাতে পরমাণু বোমা রয়েছে। দুভার্গ্যজনক বিষয় হলো, সেই পরমাণু বোমা আমাদের উপরই এসে পড়বে।’ ফারুক-পুত্র ওমর আবদুল্লার আবার দাবি, ‘ওদের কে বারণ করেছে? কিন্তু কাশ্মীরের যেটুকু নিজেদের হাতে রয়েছে, সেখানের সমস্যা আগে মিটিয়ে দেখাক...’
বিরোধীদের এই আক্রমণকে অবশ্য পাত্তা দিতে নারাজ রাজনাথ। ‘নবভারত টাইমস’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পিওকে থেকে ভোট— সব ইস্যুতেই মুখ খুললেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। পিওকে প্রশ্নে তাঁর বক্তব্য, ‘ভারত এবং কাশ্মীরে গত কয়েক বছরে যে ভাবে উন্নতি হয়েছে, তা পুরো বিশ্ব দেখেছে। আজাদ কাশ্মীর এবং পাকিস্তানের বেশ কিছু মানুষের প্রতিক্রিয়াও আসছে। তাঁদের অনেকেই ভারতের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। বিরোধী নেতাদের অর্থহীন কথাবার্তা থেকে দূরে থাকাই ভালো।’
পুঞ্চে বায়ুসেনার কনভয়ের উপর জঙ্গি হামলাকে ‘বিজেপির স্টান্ট’ বলে বিঁধেছেন কংগ্রেস নেতা চরণজিৎ সিং চান্নি। সে প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে রাজনাথের বক্তব্য, ‘সীমান্ত এবং সেনা নিয়ে মন্তব্য করার আগে নিজেদের মুখকে একটু লাগাম দেওয়া প্রয়োজন। সেটা বিরোধীরা ভুলে যান।’ ভোট নিয়ে রাজনাথের মূল্যায়ন, বিজেপি ৪০০ পার করবেই। কংগ্রেসের মতো বিরোধী দল ভোটের আর কোনও ইস্যু না পেয়ে ধর্ম নিয়ে খেলছে বলে অভিযোগ তাঁর। প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য, ‘কংগ্রেস বলছে ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণ দেবে, এটা সম্ভব? উন্নয়নের নিরিখেই মানুষ ভোট দেবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রতি মানুষের ভালোবাসা ভোটবাক্সে প্রতিফলিত হবে।’
ভোটের প্রথম দু’দফায় কম ভোট পড়েছে বলে দাবি বিরোধীদের। রাজনাথ অবশ্য তাতে বিশেষ ভাবিত নন। তাঁর মতে, অত্যধিক গরমই ভোট কম পড়ার অন্যতম কারণ। আর ভোটদানের হার কম হলে চিন্তা বিরোধীদের হওয়া উচিত, বিজেপির নয়। দক্ষিণ ভারতে বিজেপির ভালো ফলের ব্যাপারেও আশাবাদী রাজনাথ। তাঁর কথায়, ‘তামিলনাড়ু এবং কেরালায় এ বার আমরা ভালো ভোটই পাব। অন্ধ্র, তেলঙ্গানা এবং কর্নাটকেও আমাদের আসন বাড়বে।’
ভোটের ঠিক আগে বিরোধী নেতাদের জেলে পাঠানো নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছে বিজেপি। কিন্তু রাজনাথের স্পষ্ট বক্তব্য, ‘ওঁরা যদি কোনও অন্যায় না করে থাকেন, আদালত থেকে বেকসুর খালাস পাবেন। আদালত তো অনেক মামলায় সরকারের বিরুদ্ধেও রায় দিয়েছে। কেন্দ্রীয় এজেন্সি যদি বিজেপির কথায় নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে, তার বিচার আদালতই করবে।’