ভুয়ো এজেন্ট পাকড়াও থেকে হাতাহাতি, ভোটের মুর্শিদাবাদ দেখল 'রানার' সেলিমকে
এই সময় | ০৭ মে ২০২৪
পরনে সাদা পাঞ্জাবি-পাজামা। বাঁদিকের বুক পকেটে একটি পেন, গলা ঝোলানো আইডি কার্ড। এই নিয়ে গোটা মুর্শিদাবাদ জুড়ে চড়কি পাক খেলেন তিনি। কখনও বুথে ঢুকে ভুয়ো এজেন্ট পাকড়াও, কখনও তৃণমূল কর্মীর সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি, কখনও এলাকা ঘুরে ভোটচিত্র পরিদর্শন। রোদ চড়লেও তাপমাত্রার পারদ ছিল কিছুটা নিম্নমুখী। তবে, মুর্শিদাবাদের সিপিএম প্রার্থী মহম্মদদিনভর নিজের কেন্দ্র চষে বেড়ালেন মহম্মদ সেলিম। সকাল থেকে যেখানেই ভোটদানে বাধা আর অশান্তির খবর পেয়েছেন সেখানেই হাজির হয়েছেন। বুথে ঢুকে দুজন ভুয়ো এজেন্টকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিলেন। জায়গায় জায়গায় শুনতে হল গো ব্যাক স্লোগান। দু’জায়গায় মেজাজ হারালেন মহম্মদ সেলিম। তৃণমূল কংগ্রেসের বুথ সভাপতি সহ দুজনকে ঘার ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগও উঠল। দুপুর বারোটা নাগাদ ডোমকল বাজারে লাল তরমুজে স্বস্তির কামড় দিয়ে বলেন, লস্ল থাকলেই শান্তি দেয়। লাল সবুজের কম্বিনেশনও ভালো। বিক্ষিপ্ত কয়েকটি ঘটনা ঘটলেও ডোমকল এবার রক্তপাহীন নির্বাচন দেখল।
এদিন সকাল আটটা নাগাদ বহরমপুরের এক হোটেল থেকে ভোট গ্রহণ কেন্দ্রের দিকে রওনা দেন মহম্মদ সেলিম। রানিনগর-২ বল্কে গন্ডগোলের খবর পেয়ে সেখানে যান। ইসলামপুর পঞ্চায়েতের ৩৬ নম্বর বুথে ঢুকে এক ভুয়ো এজেন্টকে চিহ্নিত করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। গ্রেফতার করা হয়েছে ওই ভুয়ো এজেন্টকে। এরপর সোজা চলে যান লোচনপুর পঞ্চায়েতের নওদাপাড়া পঞ্চায়েতের ৪০ নম্বর বুথে। সেখানে তৃণমূলের বুথ সভাপতি হিটলার সরকারের সঙ্গে বিতর্কে। হিটলার সরকার পুলিশের কাছে সেলিমের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ জানান। সেলিমকে ঘিরে গো ব্যাক স্লোগান তোলেন তৃণমূল সমর্থকরা।
নওদাপাড়ার ৬৩ নম্বর বুথ থেকে আজিমুদ্দিন শেখ নামে এক ভুয়ো এজেন্টকে বের করে এনে পুলিশের হাতে তুলে দেন। আজুলিনুদ্দিন বলেন, তিনি বুঝতে পারেননি। এরপর সেলিমের কনভয় ছোটে লোচনপুর পঞ্চায়েতের মোহনপুরে। সেখানেও সেলিমকে ঘিরে ওঠে গো ব্যাক স্লোগান। ফের স্থানীয় তৃণমূল নেতার সঙ্গে ধ্বস্তাধস্তিতে জড়ান। তৃণমূল নেতা মাসাদুল শেখকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে জঙ্গলে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল খোদ সেলিমের বিরুদ্ধে।
মোহনপুরের ৩৯ নম্বর বুথেও সেলিমকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায়। এরপর পাহারপুর, টেঁকা রায়পুর হয়ে ডোমকলে যান। স্থানীয় একটি দোকানে বসে কিছুক্ষণের জন্য জিরিয়ে নেন। স্বস্তির কামড় দেন তরমুজে। খোস মেজাজে বলেন, ‘লাল থাকলেই শান্তি দেয়’। তাঁকে এদিন নির্বাচনী সফরের মাঝেই ক্রিকেটও খেলতে দেখা যায় । দুপুরে ডোমকলের গড়াইমারি, ঘোড়ামারা, যুগিন্দার কয়েকটি বুথ পরিদর্শন করে সোজা চলে যান নদিয়ার করিমপুরে। দুপুরের লাঞ্চ সেরে বুথ পরিদর্শন করে হরিহরপাড়া আসেন। বলাই যায়, দিনভর কার্যত নিজের লোকসভা কেন্দ্র দাপিয়ে বেড়ালেন মহম্মদ সেলিম।