• নির্যাতিতাকে ধর্ষকের সন্তানের জন্ম দিতে বাধ্য করা যাবে না- কেরল হাইকোর্ট
    হিন্দুস্তান টাইমস | ০৭ মে ২০২৪
  • গত মাসে ধর্ষণের শিকার ৩০ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা কিশোরীকে গর্ভপাতের অনুমতি দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। আর এবার ২৮ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা এক কিশোরীকে গর্ভপাতের অনুমতি দিলেও কেরল হাইকোর্ট। গর্ভপাতের  অনুমতি দিতে গিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ পর্যবেক্ষণ করেছে আদালত। হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, ‘কোনও মেয়ে বা মহিলা যদি ধর্ষণের শিকার হয়ে থাকেন তাহলে এবং তার ফলে তিনি যদি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন তাহল তাকে কোনওভাবেই ধর্ষকের সন্তানের জন্ম দিতে বাধ্য করা যাবে না। কেন তা করা যাবে না সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছেন কেরল হাইকোর্টের বিচারপতি কওসর এডাপ্পানাথ।

    মামলার বয়ান অনুযায়ী, কিশোরীর এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সেই যুবক মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে এবং নানা অজুহাতে তার সঙ্গে বারবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। তার জেরে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে নাবালিকাটি। পরে বিষয়টি যখন জানাজানি হয় তখন গর্ভস্থ ভ্রূণের বয়স ২৪ সপ্তাহ পেরিয়ে যায়। 

    আইন অনুযায়ী, ২৪ সপ্তাহের পরে গর্ভপাত করাতে গেলে সেক্ষেত্রে হাইকোর্টের নির্দেশ দিতে হয়। তাই কেরল হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কিশোরীর পরিবারের সদস্যরা। সংবিধানের ২২৬ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, হাইকোর্টের বিশেষ ক্ষেত্রে অধিকার আছে মেডিক্যাল বোর্ডের পরামর্শ নিয়ে অন্তঃসত্ত্বাকে গর্ভপাতে অনুমতি দেওয়ার। সেই অধিকার প্রয়োগ করে কেরল হাইকোর্ট কিশোরীকে গর্ভপাতের অনুমতি দেয়। এর জন্য মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করতে বলেছে আদালত এবং রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে।

    হাইকোর্ট পর্যবেক্ষণে জানায়, একজন মহিলাকে সন্তান ধারণের সময় আদৌ সন্তান নেবে কিনা, কজন সন্তান নেবেন ও প্রয়োজনে নিরাপদে ও আইনের পথে গর্ভপাত করানোর অধিকার দেওয়া হয়েছে। বিচারপতি বলেন, ‘যৌন নির্যাতনের পর কোনও মহিলা বা নাবালিকা যদি গর্ভবতী হয়ে পড়েন তাহলে তা সারা জীবনের মতো ট্রমা হিসেবে থেকে যায়। ওই অন্তঃসত্ত্বার শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উপর তার মারাত্মক প্রভাব পড়ে। যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া মেয়ে বা মহিলাকে সন্তানের জন্ম দিতে বলার অর্থ হল তার উপরে জোর করে মাতৃত্ব চাপিয়ে দেওয়া। আর তা মেয়েটির মর্যাদার সঙ্গে জীবন ধারণের সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নেয়।’ এই বলে ওই কিশোরীকে গর্ভপাতের অনুমতি দিয়েছে হাইকোর্ট।
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)