এই সময়: থানা লক-আপে এক বন্দির মৃত্যুর অভিযোগে সোমবার বিকেলের পর রণক্ষেত্রের চেহারা নিল দক্ষিণ শহরতলির রবীন্দ্রনগর থানা চত্বর। শেখ কুরবান নামে বছর আঠাশের যুবককে লক-আপে বেধড়ক মারধর করার পরে পরিবারকে অন্ধকারে রেখে গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং সেখানেই তিনি মারা যান বলে অভিযোগ পরিবার ও স্থানীয়দের।সেই অভিযোগেই একদল মানুষ এ দিন বিকেলের পর থানার সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। থানায় ঢুকে ভাঙচুরও চালানো হয় বলে অভিযোগ। টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তাও অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা। তবে পুলিশের দাবি, লক-আপে বন্দিমৃত্যুর কোনও ঘটনা ঘটেনি। শেখ কুরবান নামে ওই যুবক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বিক্ষোভ সামলাতে পরে বিশাল পুলিশ বাহিনী ও র্যাফ নামানো হয়। ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিশের শীর্ষকর্তারাও থানায় পৌঁছন। রাত পর্যন্ত থানার সামনে উত্তেজনা চলে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, রবিবার রাতে একটি পাম্প চুরির অভিযোগে রবীন্দ্রনগর লাগোয়া ফুলতলা বাজার থেকে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রাত এগারোটা নাগাদ তাঁদের থানায় নিয়ে আসা হয়। ধৃত দুই যুবকের নাম শেখ কুরবান এবং শেখ চিন্টু। কুরবানের পরিবারের দাবি, বাড়ির লোক সকালে খাবার দিতে গেলে থানা থেকে তাঁদের জানানো হয়, ধৃত দুই যুবককে গার্ডেনরিচ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্যে। পরিবারের লোকজন ওই হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারেন, কুরবানকে এসএসকেএমে চিকিৎসার জন্যে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আর চিন্টু নাদিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সোমবার বিকেলের দিকে আচমকাই খবর ছড়িয়ে পড়ে যে, কুরবান মারা গিয়েছেন।
এর পরেই পরিবারের লোকজন এবং স্থানীয়দের একাংশ থানায় ঢুকে ভাঙচুর শুরু করেন বলে অভিযোগ। বিক্ষোভকারীরা টায়ার জ্বালিয়ে থানার সামনের রাস্তা অবরোধ করেন। রাতে পুলিশের একটি সূত্র জানায়, শেখ কুরবান মারা যাননি, তিনি এসএসকেএমের আইসিইউ’তে চিকিৎসাধীন। কিন্তু কুরবানের পরিজনের দাবি, ওই যুবক মারা গিয়েছেন। পুলিশ লুকোচ্ছে। তাঁদের অভিযোগ, কুরবানকে থানায় বেধড়ক মারধর করা হয়। সেই মারধরে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই যুবক। পরিবারকে না জানিয়েই তাঁকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। ডয়ামন্ড হারবার পুলিশ জেলার এক আধিকারিক বলেন, ‘মারধরের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’