রাজীব চক্রবর্তী: দিনভর চলল সওয়াল-জবাব। এসএসসি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের চাকরি বাতিলের নির্দেশে শেষপর্যন্ত স্থগিতাদেশ জারি করল সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, 'আমরা অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নই, আমরা এই মামলা নিয়ে ভাবছি'। পরবর্তী শুনানি ১৬ জুলাই।
ঘটনাটি ঠিক কী? SSC মামলায় ২০১৬ সালের প্যানেল। রাতারাতি চাকরি হারিয়েছেন ২৫ হাজার ৭৫৩ জন শিক্ষক। সেই মামলারই এবার শুনানি হল সুপ্রিম কোর্টে। কবে? আজ, সোমবার।এদিন সুপ্রিম কোর্টের 'বৈধ' চাকরিহারাদের পক্ষে সওয়াল করেন শ্যাম দিওয়ান। তিনি বলেন, 'ওএমআর শিট ও ব়্যাংকে কারচুপি করে যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের জন্য অন্যদের চাকরি কেড়ে নেওয়া হবে কেন? নবম-দশম শ্রেণীর মোট ১১,৬১০ জন শিক্ষক রয়েছেন। ওএমআর বিকৃতির অভিযোগ মাত্র ৮০৮ জনের বিরুদ্ধে। গত ৫ বছর চাকরি করার পর কেন বৈধদের বেতন ফেরৎ দিতে বলা হবে'?সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বলেন, 'সিবিআই তাদের তদন্ত রিপোর্টে জানিয়েছে নিয়োগ পদ্ধতিতে কারচুপি হয়েছে। নবম-দশমে ৯৫২ জন, একাদশ-দ্বাদশে ৯০৭ জন, গ্রুপ সি ৩৪৮১ জন ও গ্রুপ ডি-তে ২৮২৩ জনের'। জানান, 'এবার আদালত অন্য পক্ষের বক্তব্য শুনতে চায়'।এসএসসি-র আইনজীবীকে প্রশ্ন, 'আজ কোনওভাবে কি যোগ্য ও অযোগ্যদের পৃথক করা সম্ভব'? এসএসসি-র আইনজীবী বলেন, 'কমিশনের কাছে যে তথ্য আছে তার ভিত্তিতে পৃথক করা সম্ভব। কিন্তু, সেই নথিকে মেনে নিতে হবে। না মানলে মুসকিল'। আন্দোলনকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন,'এসএসসি যদি হলফনামা দিয়ে বৈধ ও অবৈধদের তালিকা জমা দেয়, সেক্ষেত্রে আমাদের কোনও আপত্তি নেই'। এর আগে, এই মামলার শুনানি প্রশ্নের মুখে এসএসসি। শীর্ষ আদালত বলে, 'এটা একটা প্রাতিষ্ঠানিক জালিয়াতি'। বস্তুত, সুপ্রিম কোর্টে একেপর এক প্রশ্বের মুখে নিয়োগ যে দুর্নীতি হয়েছে, সেকথা কার্যত মেনে নেয় স্কুল সার্ভিস কমিশন। তাদের দাবি, 'কিছু নিয়োগ অবৈধ হলেও ১৯ হাজার চাকরি বৈধ'। প্রধান বিচারপতি এসএসসি আইনজীবীকে বলেন, 'চাকরির অবস্থা খারাপ। সরকারি চাকরির অবস্থা আরও খারাপ। এইভাবে দুর্নীতি হলে আমার আপনার ছেলেমেয়েরা কোথায় যাবে'?