AstraZeneca Withdraws Covishield : পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার স্বীকারোক্তির পর কোভিশিল্ড টিকা বন্ধের ঘোষণা অ্যাস্ট্রেজেনেকার, বাড়ল আতঙ্ক
এই সময় | ০৮ মে ২০২৪
মাত্র কিছুদিন আগেই কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা স্বীকার করে বিশ্বব্যাপী আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল প্রস্তুতকারী সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকা। এবার বাজার থেকে এই ভ্যাকসিন তুলে নেওয়া হচ্ছে বলে ঘোষণা করল ব্রিটিশ এই ফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থা।বিশ্বব্যাপী করোনার টিকা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা আচমকা ঘোষণা করে ফের চাঞ্চল্য ফেলে দিয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনটি যৌথভাবে তৈরি করেছিল ব্রিটিশ এই ফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থা এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। ভারতে এই টিকা উৎপাদন করেছিল পুনের সেরাম ইনস্টিটিউট।
ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী অ্যাস্ট্রাজেনেকা জানিয়েছে, অতিরিক্ত মাত্রায় কোভিশিল্ড তৈরি হলেও এর এই মুহূর্তে বিশ্বব্যাপী কোনও চাহিদা নেই। ফলে বাণিজ্যিক কারণেই করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন বাজার থেকে তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছে সংস্থা। অ্যাস্ট্রাজেনেকার পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, নতুন নতুন ভাইরাসের মোকাবিলা করার জন্য পুরনো ভ্যাকসিনের বিকল্প প্রস্তুত করা হচ্ছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে এই ভ্যাকসিন বাজার থেকে ইতিমধ্যেই তুলে নেওয়া হয়েছে বলে খবর। এই টিকা আর প্রস্তুত কিংবা উৎপাদন করা হবে না এবং ব্যবহৃতও হবে না, সাফ জানিয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। বিশ্বের যে সমস্ত দেশে এই টিকা উৎপাদন করা হত, সমস্ত জায়গা থেকেই তা বন্ধ করে দেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে। এই তালিকায় অবশ্যই রয়েছে ভারতও। অর্থাৎ এ দেশেও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে কোভিশিল্ড।
উল্লেখ্য, ব্রিটিশ এই ফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থার বিরুদ্ধে রয়েছে ১০০ মিলিয়ন পাউন্ডের একটি আইনি মামলা। যেখানে মামলাকারীর দাবি, কোভিশিল্ডের ডোজ নিয়ে একাধিক মৃত্যু এবং গুরুতর অসুস্থতার ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে আদালতে জমা করা একটি নথিতে অ্যাস্ট্রাজেনেকা স্বীকার করেছে, বিরল বিরল ক্ষেত্রে থ্রম্বসিস বা থ্রম্বসাইটোপেনিয়া সিনড্রোমে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
থ্রম্বসাইটোপেনিয়া সিনড্রোমে আক্রান্ত হলে শরীরের নানা জায়গায় রক্ত জমাট বেঁধে যায়। প্লেটলেট কাউন্ট কমে যায়। ব্রিটেনে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে ৮১ জনের মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে। এই আবহে আচমকা কোভিশিল্ড বন্ধ করে দেওয়ার খবরে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। তবে অ্যাস্ট্রাজেনেকা যদিও দাবি করেছে, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার স্বীকারোক্তির সঙ্গে কোভিশিল্ড বাজার থেকে তুলে নেওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই। একটি বিবৃতি দিয়ে অ্যাস্ট্রাজেনেকা উল্লেখ করেছে, নানা জায়গা থেকে পাওয়া তথ্য যাচাই করে দেখা গিয়েছে, কোভিশিল্ড তৈরি হওয়ার পর প্রথম বছর এই ভ্যাকসিনের জন্য ৬.৫ মিলিয়ন জীবন বেঁচেছে। বিশ্বব্যাপী এই টিকার প্রায় তিন বিলিয়ন ডোজ দেওয়া হয়েছে। বিশ্বব্যাপী অতিমারি মোকাবিলায় অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি এই কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন জীবনদায়ী ছিল বলে উল্লেখ করেছে প্রতিটি দেশই। এর কার্যকারীতা প্রশংসা পেয়েছে গোটা দুনিয়ায়। কোভিড-১৯ এর নানা ভ্যারিয়ান্ট চালু হওয়ার পরও এই ভ্যাকসিন ব্যবহৃত হয়েছে দেশে দেশে। এই মুহূর্তে টিকার ডোজের ভাণ্ডার উপচে পড়েছে অথচ বাজারে এর কোনও চাহিদা নেই। ফলে সমস্ত উৎপাদনকারী এবং নিয়মক সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এই কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের পর্ব এখানেই সমাপ্ত হোক। পাশাপাশি অ্যাস্ট্রাজেনেকা তাদের বিবৃতিতে এও উল্লেখ করেছে, বিশেষজ্ঞরাও মনে করছেন যে যে টিকাগুলি এতদিন বাজারে ছিল তা তুলে নিয়ে নতুন ভ্যারিয়ান্টের মোকাবিলা করতে প্রস্তুত এমন ভ্যাকসিন বিকল্প হিসেবে তৈরি করা প্রয়োজন।