• Ram Mandir: 'রাম মন্দিরে বাবরির তালা ঝোলাবে কংগ্রেস!' আবার মেরুকরণের পথে নমো?
    এই সময় | ০৮ মে ২০২৪
  • এই সময়: প্রথম দফা ভোটের পর থেকেই বিজেপির প্রচারে বারবারই ফির আসছে হিন্দুত্ব প্রসঙ্গ, মুসলিম-ভীতি ও জাতীয়তাবাদ। তা অব্যাহত রইল মঙ্গলবারও। এ দিন সকালে আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদ যাদব সংবাদসংস্থা এএনআইকে বলেন, ‘রিজার্ভেশন তো মিলনা চাহিয়ে মুসলমানো কো, পুরা!’ ব্যস সেই কথা লুফে নেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। লালুর নাম-না-করে তাঁকে উদ্দেশ করে মধ্যপ্রদেশের ধারের নির্বাচনী জনসভা থেকে বলেন, ‘গবাদি পশুর খাবার খেয়ে নেওয়ায় পশুখাদ্য কেলেঙ্কারিতে জেল খাটা এক নেতা তফসিলি জাতি, তফসিলি উপজাতি ও অনগ্রসর শ্রেণিকে বঞ্চিত করে মুসলিমদের সম্পূর্ণ সংরক্ষণ দিতে চাইছেন। কংগ্রেস চুপ করে আছে। কিন্তু ওই নেতা ‘ইন্ডিয়া’ জোটের আসল মানসিকতা প্রকাশ করে দিয়েছেন।’থেমে থাকেননি লালুও। তিনি পাল্টা বলেন, ‘সংরক্ষণ সামাজিক ভাবে পিছিয়ে পড়ার ভিত্তিতেই তো হওয়া উচিত৷ প্রধানমন্ত্রী এটা বুঝবেন না। কারণ উনি আমার মতো অনগ্রসর শ্রেণির মানুষ নন।’ তাৎপর্যপূর্ণভাবে এদিন ধারের জনসভা থেকে রামমন্দির ইস্যুতে নমো ধারালো আক্রমণ শানান কংগ্রেসকেও। বলেন, ‘কংগ্রেস যাতে বাবরি মসজিদের তালা এনে রামমন্দিরে ঝোলাতে না পারে, তা নিশ্চিত করতেই বিজেপিকে ৪০০ আসনে জেতাতে হবে। রাজীব গান্ধী যে ভাবে শাহ বানো মামলার রায় পাল্টে দিয়েছিলেন, শাহজ়াদাও সে ভাবে রামমন্দির নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় বদলে দিতে চান।’

    এই তরজা যখন চলছে তখন কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধী এক ভিডিয়ো বার্তায় বলেন, ‘দেশে এই দুর্বিষহ পরিস্থিতির জন্য মোদী ও তাঁর দল বিজেপি-ই দায়ী... আজ দেশের কোনায় কোনায় তরুণরা বেকারত্বের জ্বালায় অতিষ্ঠ, মহিলাদের উপর নির্যাতন চলছে। দলিত, আদিবাসী, পিছড়েবর্গ এবং সংখ্যালঘুরা প্রবল বৈষম্যের শিকার।’

    এদিন লালু-মোদীর তরজা প্রসঙ্গে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মত, মোদী যে ধর্মীয় মেরুকরণ ও সংরক্ষণ নিয়ে প্রচারে নেমেছেন, তা আটকাতে মোদীর অস্ত্রই তাঁকে পাল্টা ছুড়েছেন লালু। এ কথা ভুললে চলবে না মণ্ডল কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের অন্যতম নেতা ছিলেন লালুপ্রসাদই। তাই তিনি এ দিন মোদীর আক্রমণের জবাবে সাফ বলেন, ‘সংরক্ষণ সামাজিক অনগ্রসরতার উপর ভিত্তি করে হয়, ধর্মের ভিত্তিতে নয়। অটল বিহারী বাজপেয়ী প্রধানমন্ত্রী থাকার সময়ে সংবিধান পর্যালোচনা কমিশন গঠন করেছিলেন। মণ্ডল কমিশন ৩৫০০ অনগ্রসর শ্রেণির জন্য সংরক্ষণ সুপারিশ করেছিল। এর মধ্যে শুধু ইসলাম নয়, অন্য বহু ধর্মও রয়েছে।’

    সোমবারই রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, ৫০ শতাংশ সংরক্ষণের উচ্চসীমা প্রয়োজনে তুলে দেওয়া হবে। প্রয়োজনের ভিত্তিতে সংরক্ষণ দেওয়া হবে। সেখানেও কিন্তু ইঙ্গিত ছিল, বিরোধীরা ক্ষমতায় এলে প্রয়োজনে সংরক্ষণ-নীতিতে বদল আনা হবে। উল্লেখযোগ্য ভাবে, আরজেডি সুপ্রিমোর এই বক্তব্য নিয়ে মধ্যপ্রদেশে ধার জেলায় জনজাতি-বহুল এলাকায় সরব হন প্রধানমন্ত্রী।

    লালুর কথা টেনে মোদী ধারের জনতার উদ্দেশে বলেন, ‘এই লোকেরা (বিরোধী জোট) তফসিলি জাতি, উপজাতি এবং ওবিসিদের সংরক্ষণ ছিনিয়ে নিয়ে মুসলিমদের দিতে চান। এমনকী, মুসলিমদের সংরক্ষণের কোটা বৃদ্ধি করতে চান।’ ঝাড়খণ্ডের চাইবাসায় প্রচারে এসে রাহুল গান্ধীও মোদীকে এই প্রসঙ্গে তুলোধোনা করেন। বলেন, ‘আপনারা বিজেপির মিথ্যে প্রতিশ্রুতিতে ভুলবেন না। ওরা বারবার ঐক্যবদ্ধ দেশের মানুষের মধ্যে বিভাজন আনতে চাইছে।’

    মোদী বারবার প্রচারে এই ধরনের মেরুকরণ ও বিভাজনকে উস্কানি দিচ্ছেন এই অভিযোগ করে সনিয়া তাঁর ভিডিয়ো বার্তায় বলেন, ‘ইন্ডিয়া জোট সংবিধান এবং গণতন্ত্র রক্ষায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। রাজনৈতিক স্বার্থে ঘৃণা-বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে।’
  • Link to this news (এই সময়)