• Swimming Pool Kolkata : নিজের রেকর্ড নিজে ভাঙার চেষ্টা চালাত ইলিনা, কিশোরীর মৃত্যু কি হার্ট অ্যাটাকে?
    এই সময় | ০৮ মে ২০২৪
  • সাঁতারের প্র্যাকটিসে গিয়ে প্রতিদিনই নিজের রেকর্ড সে নিজে ভাঙার চেষ্টা করত। মঙ্গলবার সকালেও জলের নীচে সব চেয়ে বেশি কত সময় দম ধরে রাখা যায়, তার অনুশীলন সে করছিল। সল্টলেকের এ ই ব্লকের ইলিনা দত্ত ভট্টাচার্য (১৫)। সেই সময়ে সেখানে, বিধাননগর পুরনিগমের সুইমিং পুলে প্র্যাকটিস চলছিল আরও কয়েক জন সাঁতারুর। নির্দিষ্ট সময়ে অন্যেরা উঠে এলেও ইলিনা না-ওঠায় সন্দেহ হয় প্রশিক্ষকদের।ওই কিশোরীর কোনও বিপদ বা সমস্যা হয়েছে, সেটা আন্দাজ করে পুলে ডুব দেন তার মা ডালিয়া। তিনি জাতীয় পর্যায়ের এক জন সাঁতারু, মায়ের কাছেই ইলিনা এ দিন ডুব সাঁতারের ট্রেনিং নিচ্ছিল। পুলের তলায় দিয়ে দেখা যায়, অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছে ইলিনা! সঙ্গে সঙ্গে তাকে জল থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে মৃত বলে ঘোষণা করা হয় নিউ টাউনের একটি বেসরকারি স্কুলের দশম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে।

    প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের বক্তব্য, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ওই কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে। বিধাননগর উত্তর থানায় রুজু হয়েছে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা। আপাত ভাবে কোনও অসুখ না-থাকা ইলিনার হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়াটা বিশেষজ্ঞ ও বাড়ির লোকদের কাছে অস্বাভাবিক ঠেকছে। বিধাননগর কমিশনারেটের এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘ময়নাতদন্ত রিপোর্ট এলেই ওই কিশোরী সুইমারের মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে।’

    বিধাননগর পুরনিগমই ওই সুইমিং পুলের রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তার দায়িত্বে। পুরনিগমের তরফে জানানো হয়েছে, ইলিনা ও অন্য সুইমাররা পুলে নামার আগে সব রকম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। পুলিশ জানায়, এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ মায়ের সঙ্গে সুইমিং পুলে পৌঁছয় ইলিনা। বিকাশ ভবনের উল্টো দিকে, পুরনিগমের ওই সুইমিং পুলে সে ২০১৫ সাল থেকে সাঁতার শিখছে। ইলিনার ছোট বোনও সেখানে প্র্যাকটিস করছে গত কয়েক বছর যাবৎ, সে পড়ে ক্লাস ফোরে। ইলিনার দাদু গৌরাঙ্গলাল দত্ত বলছেন, ‘আমার বড় নাতনি দীর্ঘদিন ধরেই সাঁতার শিখছে। বেশ কিছু প্রতিযোগিতাতেও ও অংশ নিয়েছিল। ফিটনেসের প্রতি বাড়তি নজর ছিল ওর। আর ওর-ই এমন হবে, সেটা আমরা দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারিনি।’

    কিশোরী সাঁতারুর ওই পরিণতি নিয়ে ফুসফুস রোগ বিশেষজ্ঞ রাজা ধরের বক্তব্য, ‘সাধারণত হার্টের কোনও সমস্যা না-থাকলে এই বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়াটা খুব অস্বাভাবিক। জলে ডুবে মৃত্যু মূলত হয় ফুসফুসে জল ঢোকার কারণে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট না-আসা পর্যন্ত মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত ভাবে বলা সম্ভব নয়।’ বিধাননগর পুরনিগমের মেয়র পারিষদ (ক্রীড়া) অরিত্রিকা ভট্টাচার্য বলেন, ‘সুইমিংয়ে যারা ভর্তি হয়, তাদের সবার মেডিক্যাল টেস্ট করানো হয় নিয়মিত। ওই মেয়েটির কোনও অসুখ ছিল না। বরং, ওকে এক জন ওস্তাদ সাঁতারু বলা যেতে পারে। গত ৯ বছর ধরে ও সাঁতার শিখছিল। প্র্যাকটিসের সময়ে সম্ভবত কোনও একটা জটিলতার কারণে এমন দুঃখজনক ও দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটল।’
  • Link to this news (এই সময়)