ঠিক যেন রুমাল থেকে বিড়াল হয়ে যাওয়ার গল্প। তবে এটা ‘হযবরল’-এর গল্প নয়। এটা একেবারেই বাস্তব। এত দিন সবাই জানতেন তিনি একজন মহিলা। কিন্তু, এবার জানা গেল, মহিলা আদতে একজন পুরুষ। বিয়ের ঠিক আগেই জানা গিয়েছে এই তথ্য। আজব এই ঘটনায় হইচই পড়ে গিয়েছে।ঠিক কী জানা গিয়েছে?মধ্য চীনের হুবেই প্রদেশের বাসিন্দা এক মহিলার বয়স ২৭ বছর। তাঁর বিয়ে ঠিক হয়। কিন্তু, ঠিক তার আগেই এমন ঘটনা জানা গিয়েছে যা ছিল কার্যত অকল্পনীয়। বিয়ের আগেই একটি মেডিক্যাল টেস্কট করাতে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে তাঁকে বলা হয়, মহিলা আসলে একজন পুরুষ। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, একটি পরীক্ষায় জানা গিয়েছে, মহিলার পেটে একটি অণ্ডকোষ রয়েছে। এটাই তাঁকে জৈবিকভাবে পুরুষ করে তুলেছে।
কেন এই পরীক্ষা?ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এতদিন সবাই জানতেন তিনি একজন মহিলা। কিন্তু, বয়ঃসন্ধির দিন থেকে মাসিক না হওয়া এবং স্তন বিকাশে বিলম্ব নিয়ে চিন্তিত ছিলেন তিনি। এই জন্য ১৮ বছর বয়সে তিনি একটি হাসপাতালে গিয়েছিলেন। সেখানে তাঁর শরীরে অস্বাভাবিক হরমোনের মাত্রা এবং ডিম্বাশয়ের ব্যর্থতা নির্ণয় করা হয়েছিল। চিকিৎসকরা তাঁকে ক্রোমোজোম পরীক্ষা করতে বলেছিলেন। কিন্তু, তখন বিষয়টিকে তিনি গুরুত্ব দেননি। সম্প্রতি তাঁর বিয়ের প্রস্তুতি শুরু করে পরিবার। এই কারণে তিনি শরীরের একটি মেডিক্যাল টেস্ট করার সিদ্ধান্ত নেন। আর তখনই ধরা পড়ে শরীরের এই রহস্য।
মহিলার শরীরে অণ্ডকোষতাঁর শরীরের পরীক্ষা করেন ডুয়ান জি নামে এক প্রবীণ স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ। তিনি জানান, ওই মহিলা জন্মগত অ্যাড্রিনাল হাইপারপ্লাসিয়া (CAH) নামে একটি বিরল ব্যাধিতে আক্রান্ত। দীর্ঘ এক মাস অপেক্ষার পর পরীক্ষার ফলাফল জানা গিয়েছে। যে শারীরিক পরীক্ষা করা হয়, তার রিপোর্ট অনুসারে, তিনি শরীরে পুরুষ যৌন হরমোন বহন করেন। তবে তার চেহারা মহিলার মতই। ড: ডুয়ান বলেন ,'সামাজের কাছে বাহ্যিকভাবে তিনি একজন মহিলা। কিন্তু, ক্রোমোজোমালি তিনি একজন পুরুষ। এটা একটা বিরল ঘটনা বলা যেতে পারে।' এটা জানার পরেই মানসিকভাবে ধাক্কা খান ওই মহিলা। চিকিৎসকরা জানান, গত ২৭ বছর ধরে মহিলা হিসাবে বড় হয়েছেন এবং বেঁচে থেকেছেন তিনি। তাঁদের মতে, ৫০হাজার জনের মধ্যে এই রোগ দেখা দিতে পারে। তাঁর বাবা-মায়ের শরীরে জিনগত ত্রুটি ছিল। সেই কারণেই এই রকম হয়েছে। তাঁর শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি ও অস্টিওপোরোসিস রয়েছে। এগুলি অনেক দেরিতে ধরা পড়ে। গত মাসেই তাঁর শরীর থেকে অণ্ডকোষটি সরানো হয়। কারণ এটি ক্যান্সারের ঝুঁকি তৈরি করেছিল।