Muslim Population In India : হু হু করে ভারতে বেড়েছে মুসলিম জনসংখ্যা, কমেছে হিন্দু নাগরিক! রিপোর্ট পেশ প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা মণ্ডলীর
এই সময় | ০৮ মে ২০২৪
বিপুল হারে কমেছে ভারতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা। সাম্প্রতিককালে প্রধানমন্ত্রীর ইকনমিক অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল (EAC-PM) তথ্য প্রকাশ করে জানিয়েছে, ১৯৫০ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ভারতে কমেছে হিন্দু নাগরিকের সংখ্যা। এদিকে, পড়শি দেশগুলিতে দেখা গিয়েছে উলটো চিত্র।একদিকে যখন হিন্দু নাগরিকের সংখ্যা কমছে, অন্যদিকে তখন হু হু করে বেড়েছে মুসলিম। বৃদ্ধি পেয়েছে খ্রিস্টান, বৌদ্ধ এবং শিখ নাগরিকদের সংখ্যাও। যদিও জৈন এবং পারসিদের সংখ্যাও অনেকটাই কমেছে এ দেশে।
১৯৫ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে ভারতে মুসলিমদের জনসংখ্যা বেড়েছে ৪৩.১৫ শতাংশ। খ্রিস্টান জনসংখ্যা বেড়েছে ৫.৩৮ শতাংশ। শিখ জনসংখ্যা বেড়ে ৬.৫৮ শতাংশ। বৌদ্ধ জনসংখ্যাও আগের তুলনায় সামান্য বেড়েছে ভারতে।
এদিকে, ১৯৫০ সালে হিন্দু জনসংখ্যা ছিল ৮৪ শতাংশ। যা পরবর্তীতে ২০১৫ সালে এসে কমে দাঁড়িয়েছে ৭৮ শতাংশে। সেখানে এই ৬৫ বছরের মধ্যে মুসলিম জনসংখ্যা ৯.৮৪ শতাংশ থেকে বেড়ি দাঁড়িয়েছে ১৪.০৯ শতাংশে। এমনই তথ্য উঠে এসেছে EAC-PM স্টাডিতে। উল্লেখ্য, এই সমীক্ষাতেই দেখা গিয়েছে, মায়ানমারে ১০ শতাংশ কমেছে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যা। তারপরই তালিকায় রয়েছে ভারত। যেখানে হিন্দু নাগরিকের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৭.৮ শতাংশ। ভারত ছাড়া নেপালেও সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যা কমেছে ৩.৬ শতাংশ।
চলতি মে মাসে প্রধানমন্ত্রীর ইকনমিক অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল এই সমীক্ষা রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। ১৬৭টি দেশের সংখ্যালঘু এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যার সঙ্গে তুলনা টেনে এই রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকরা বলছেন, বিশ্বের অন্যান্য রাষ্ট্রের তুলনায় সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যা ভারতে ধারাবাহিকভাবে কমেছে। গবেষকরা আরও বলেন, 'এই রিপোর্ট প্রমাণ করছে, ভারতে সংখ্যালঘুরা কেবলমাত্র সুরক্ষিতই নয় বরং সংখ্যার হারে ক্রমবর্ধমান।'
এদিকে, ভারতের ঠিক উলটো পরিস্থিতি পাকিস্তান এবং বাংলাদেশে। এই দুই প্রান্তের দুই পড়শি মুসলিম দেশে বেড়েছে হিন্দু জনসংখ্যা। সমীক্ষা রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশে ১৯৫০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে ১৮.৫ শতাংশ হিন্দু নাগরিকের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। পাকিস্তানে সংখ্যালঘু বেড়েছে ৩.৭৫ শতাংশ। এই ৬৫ বছরের মধ্যে আফগানিস্তানে হিন্দুদের সংখ্যা বেড়েছে ০.২৯ শতাংশ।
এই গবেষণার সহকারি অধ্যাপক শমিকা রবি, আব্রাহাম হোসে এবং অপূর্ব কুমার মিশ্র বলেন, 'পাকিস্তানে সংখ্যা গরিষ্ঠ হানিফ মুসলিমের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ৩.৭৫ শতাংশ। মোট মুসলিম জনসংখ্যা সে দেশে বেড়েছে ১০ শতাংশ। ১৯৭১ সালে পাকিস্তান ভাগ হয়ে বাংলাদেশ তৈরি হওয়ার পরও এই ৬৫ বছরের স্প্যানে মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।'
ভারতের পূর্বদিকের পড়শি দেশ মায়ানমারে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যা সবচেয়ে বেশি কমেছে। ১৯৫০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত, ৬৫ বছরে সেখানকার সংখ্যা থেরাভাদা বৌদ্ধদের জনসংখ্যা কমেছে ১০ শতাংশ। ভারত এবং মায়ানমার ছাড়া নেপালে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু জনসংখ্যা কমেছে মোট ৩.৬ শতাংশ। এমনটাই জানাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর ইকনমিক অ্যাডভাইজরি কাউন্সিলের গবেষণা রিপোর্ট।
মলদ্বীপে সংখ্যাগরিষ্ঠ সাফি সুন্নি মুসলিমদের জনসংখ্যা কমেছে ১.৪৭ শতাংশ। যদিও ভারতের অপর দুই পড়শি দেশ ভুটান এবং শ্রীলঙ্কায় যথাক্রমে ১৭.৬ শতাংশ এবং ৫.২৫ শতাংশ সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। গবেষণা রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, 'বিশ্বব্যাপী সংখ্যালঘু জনসংখ্যা বৃদ্ধি প্রমাণ করছে অধিকাংশ দেশে তাদের জন্য সুরক্ষিত পরিবেশ রয়েছে। তাদের জন্য আনা নানা প্রকল্প সুফল আনছে। যা এতদিন বিশ্বে কার্যত নজিরবিহীন ছিল।' আবার বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যার হার বদলানোর নিরিখে ভারতের হিন্দু-মুসলিম অনুপাত বিশেষভাবে নজর কাড়ছে। অস্ট্রেলিয়া, চিন, কানাডা, নিউ জিল্যান্ড এবং আফ্রিকার কিছু হাতে গোনা দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যা হ্রাসের থেকে ভারতের পরিসংখ্যা অনেকটাই নিম্নমুখী।
গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, '১৯৫০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে ধর্মীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যা হ্রাস পেয়েছে ২২ শতাংশ। লাইবেরিয়াতে এই পরিসংখ্যান ৯৯ শতাংশ। নামিবিয়াতে তা ৮০ শতাংশ। মোট ১৬৭টি দেশে করা এই গবেষণায় দেখা গিয়েছে ১২৩টি দেশেই ধর্মীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যা হ্রাস পেয়েছে।'