• মাত্র ২ প্রাইভেট টিউটরেই বাজিমাত, উচ্চ মাধ্যমিকে পঞ্চম সুস্বাতী চান নৃত্যশিল্পী হতে
    এই সময় | ০৮ মে ২০২৪
  • ডেরিভেটিভে ভালোলাগা ছিল না, ভালোবাসতে পারেননি ইন্টিগ্রেশনকেও। সায়েন্সের বদলে শিল্পে মন দেওয়া সেই কবেই। মঙ্গলবার মেধাতালিকায় যখন তাঁর নাম ঘোষণা হয় স্বাভাবিকভাবেই মুখে চওড়া হাসি ফোটে সুস্বাতীর। মন নেচে উঠেছিল। ঘুঙুরের আওয়াজে মনকাড়ার স্বপ্নটা আজ খোলা আকাশ পেল। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়র, বিজ্ঞানী নয়, উচ্চ মাধ্যমিকে পঞ্চম বাঁকুড়া মিশন গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী সুস্বাতী কুণ্ডু নৃত্যশিল্পী হতে চান।মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিকে কৃতী মানেই বিজ্ঞানের প্রতি অমোঘ টান। মেধা তালিকায় নাম থাকার পরেই নিছক ঘরোয়া আলোচনাতেও কথাচালাচালি চলে- ভবিষ্যতের কিছু ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, গবেষকের নাম এদিন ছাপা হরফে পাওয়া গেল। কিন্তু, সেই 'ডাল ভাত' ধারণায় সুস্বাতীর ইচ্ছেটা কি মটন বিরিয়ানি নয়? (দুটোর স্বাদই জিভে জড়িয়ে আর মনে আগলে রাখার মতো)

    ফলাফল প্রকাশের পর সুস্বাতীর চোখ-মুখে স্বস্তির ছাপ! কিন্তু, চঞ্চলতা এবং অস্থির চিত্তে দেখা গেল না তাঁকে ধীরে সুস্থে জবাব দিলেন, ‘এতটা আশা করিনি। তবে আমার নাম ঘোষণার পর খুবই ভালো লেগেছে।’

    একাধিক গৃহশিক্ষক তাঁর ছিল না। সুস্বাতী বলেন, ‘বরাবর বাবার কাছে বাংলা পড়েছি। ইংরেজি এবং ভূগোলের শিক্ষক অবশ্য ছিল।’ কৃতীদের লক্ষ্য নিয়ে পাঠক, দর্শকের অসীম আগ্রহ। সংবাদ মাধ্যম নিজ দায়িত্বের কথা স্মরণ করেই সেই প্রশ্ন মেলে ধরেছিল। জবাব এল, কিন্তু জবাবের জন্য প্রস্তুত ছিলেন না এই সময় ডিজিটালের প্রতিনিধিও। ‘আমি নৃত্য শিল্পী হতে চাই’(ক্যামেরার বিপরীতে থাকা এই সময় ডিজিটাল-এর প্রতিনিধির মুখে খুশি, বিষ্ময়, ভালোলাগ। অস্ফূট শব্দে পেশাদারিত্বের বাইরে বেরিয়ে লাইভের মাঝেই জানান অভিনন্দন)।

    সুস্বাতী জানান, আলাদা করে ঘড়ি মেপে পড়াশোনা ধাতে ছিল না তাঁর। তবে দিনে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা বইয়ের পাতায় ডুব দেওয়া হত ইচ্ছে থেকেই। সঙ্গে চালিয়ে গিয়েছেন নাচটাও। আপাতত তিনি তালিম নিচ্ছেন দুর্গাপুরে শর্মিলা পোদ্দারের থেকে। শিল্পী মমতা শংকরকে দেখে ছোটবেলা থেকেই নাচের প্রতি আগ্রহটা একটু একটু করে ভালোলাগতে শুরু করে, তারপর পতাকা, অর্ধপতাকা, লাঙ্গোলা-ইত্যাদি ইত্যাদির অলি গলি পেরিয়ে ভালোবাসায় রূপান্তরিত হয়েছে।

    সুস্বাতীর কথায়, 'আমার নাচ ভালো লাগে। ভবিষ্যতে নাচ নিয়ে পড়াশোনা করতে চাই। আপাতত জীবনে লক্ষ্য নাচ নিয়ে এগিয়ে যাওয়া। নিজেকে নৃত্যশিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।’ উচ্চ মাধ্যমিকে ফলাফল সামনে আসার পর সুস্বাতীর সুখ্যাতি পাড়া প্রতিবেশীদের মধ্যেও। হোক না ‘ছকভাঙা’, সন্তানের স্বপ্নে আলো, বাতাস আর ‘সাপোর্ট ভিটামিন’ সব সময় থাকবে, আশ্বাস পরিবারের।
  • Link to this news (এই সময়)