Covishield Vaccine : ভারতে ২ বছর ধরে বন্ধ কোভিশিল্ড টিকা, অ্যাস্ট্রাজেনেকার ঘোষণার পর প্রকাশ্যে তথ্য
এই সময় | ০৯ মে ২০২৪
কোভিড-১৯ এর সময় এই কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনই ছিল জীবনদায়ী। গত দু'বছরেরও বেশি সময় ধরে ভারতের সমস্ত হাসপাতাল, সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং ভ্যাকসিন সেন্টারে অমিল করোনার এই টিকা। নেপথ্য কারণ হিসেবে জানানো হয়েছে চাহিদার অভাব।ইতিমধ্যেই কোভিশিল্ডের প্রস্তুতকারী সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকা ঘোষণা করেছে, এই টিকা বাজার থেকে তুলে নেওয়া হচ্ছে। কোভিশিল্ড এবং ভ্যাক্সভেরিয়া টিকাদু'টি বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে সংস্থা। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে এই টিকা তৈরি করেছিল অ্যাস্ট্রাজেনেকা।
সম্প্রতি আদালতে চলা একটি মামলার প্রেক্ষিতে অ্যাস্ট্রেজেনেকা স্বীকার করেছিল কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন নিলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি রয়েছে। টিকাপ্রাপকদের মধ্যে থ্রম্বসিস বা থ্রম্বসাইটোপেনিয়া সিনড্রোম দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয় এতে। এই স্বীকারোক্তির পরই আতঙ্ক তৈরি হয়। তার ঠিক পর পরই অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড বন্ধ করার ঘোষণায় হইচই পড়ে গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, ভারতে কোভিশিল্ড উৎপাদনকারী সংস্থা সেরাম ইনস্টিটিউট ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসের পর থেকে টিকা উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। তাদের বক্তব্য, এই টিকার বর্তমানে আর কোও চাহিদা নেই দেশে। সেরাম ইনস্টিটিউটের এক মুখপাত্র বলেন, '২০২১ এবং ২০২২ সালে করোনার এই ভ্যাকসিনের চাহিদা ভারতে সবচেয়ে বেশি ছিল। একের পর এক করোনার ভ্যারিয়ান্ট ছড়িয়ে পড়ায় টিকার উৎপাদনও বাড়ানো হয়েছিল এ দেশে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরের পর থেকে যদিও চাহিদা কমে যায়। ফলে অতিরিক্ত ডোজের উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়।' মুখপাত্র আরও বলেন, 'এই মুহূর্তে যে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে দেশে তা নিয়ে আমরাও উদ্বিগ্ন। আমরা সর্বদাই স্বচ্ছতা এবং সুরক্ষা বজায় রেখেছি। আমরা কোভিশিল্ডের সমস্ত জটিল এবং বিরল সাইড এফেক্ট নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা চালিয়েছি। ২০২১ সালেও থ্রম্বসিস এবং থ্রম্বসাইটোপেনিয়া সিনড্রোমে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হয়। বিশ্বে অতিমারির সময় যে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন আমরা হয়েছিলাম সেই পরিপ্রেক্ষিতে কোভিশিল্ড সমস্ত মানুষের সুরক্ষা দিয়েছিল।'
অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথকেয়ার প্রোভাইডারসের CEO ড: গিরধর জ্ঞানী বলেন, 'ভারতে কোডিভ-১৯ টিকার কর্মসূচি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সমস্ত বেসরকারি হাসপাতালে। করোনা রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ভারতে ধীরে ধীরে নিম্নমুখী হওয়ায় এবং অধিকাংশ ভারতীয় টিকা গ্রহণ করার পর এই কর্মসূচি বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থা থেকে টিকা নেওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং ভ্যাকসিন সেন্টারগুলিতে।'
২০২১ সালের ১৬ জানুয়ারি থেকে ভারতে টিকাকরণ শুরু হয়েছিল। ২০২৩ সালের ৪ মার্চ পর্যন্ত ভারতে মোট ২.২ বিলিয়ন মানুষ টিকা গ্রহণ করেন। এর মধ্যে রয়েছে দু'টি বাধ্যতামূলক এবং একটি বুস্টার ডোজ। ১২ বছরের ঊর্ধ্বে দেশের প্রায় ৯৫ শতাংশ মানুষ কোভিডের অন্তত একটি ডোজ গ্রহণ করেছেন। ৮৮ শতাংশ সম্পূর্ণ ভ্যাকসিনেটেড। ২০২৩ সালের ১৫ জুন পর্যন্ত কেন্দ্রের তরফে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ৫২০.২৭ লাখ ভারতীয় কোভিশিল্ড টিকা নিয়েছেন।