মেধা তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে এই জেলার ১৩ পড়ুয়া! জেনে নিন কোথায়...
২৪ ঘন্টা | ০৯ মে ২০২৪
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: উচ্চ মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ হয় আজই। সেখানে মেধা তালিকায় জায়গা করে নিল হুগলির ১৩ জন । ৪৯৩ নম্বর পেয়ে মেয়েদের মধ্যে প্রথম সবার মধ্যে চতুর্থ হয় স্নেহা ঘোষ। চন্দননগর কৃষ্ণ ভাবিনী নারী শিক্ষা মন্দিরের ছাত্রী।
স্নেহা জানায়, এত ভালো রেজাল্ট হবে আশা করেনি। পড়াশোনার জন্য কোন নির্দিষ্ট বাঁধা ধরা সময় ছিল না তাঁর। যতক্ষণ ভালো লাগতো ততক্ষণই পড়াশোনা করতাম। সবথেকে বেশি ভালো লাগত অঙ্ক করতে। টেস্টের আগে চেষ্টা করেছিলাম সিলেবাস কমপ্লিট করার। আগামী দিনে অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করতে চায় সে। অন্যদিকে, উচ্চমাধ্যমিকে ষষ্ঠ হয়েছে কোন্নগর ক্রাইপার রোডের রুদ্র দত্ত। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৪৯১। রুদ্র মাহেশ রামকৃষ্ণ আশ্রম বিদ্যামন্দিরের ছাত্র।
রুদ্র বলে, 'ভালো ফল করব আশা করেছিলাম, কিন্তু এতটা ভালো ফল হবে আশা করিনি। স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা ও বাবা মা আমাকে সব সময় সাহায্য করেছে। ভবিষ্যতে ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছা রয়েছে। পড়াশোনার জন্য নির্দিষ্ট কোনও সময় ছিল না, যখন সময় পেতাম তখনই পড়তাম। ফিজিক্স আমার প্রিয় সাবজেক্ট।'ষষ্ঠ স্থানে জায়গা করে নিয়েছে হুগলির আরও এক ছাত্র। চুঁচুড়া গ্রীন পার্কের শুভ্র কিশোর ভট্টাচার্য। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৪৯১। হুগলি কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্র শুভ্র । তিনি জানায়, 'আশা ছিল ভালো ফল হবে কিন্তু এতটা ভালো ফল হবে আশা করতে পারেনি। দিনে ১০-১২ ঘন্টা পড়াশোনা করতাম। তবে নির্দিষ্ট কোনও সময় ছিল না। ভবিষ্যতে ডাক্তার হতে চাই।'মাধ্যমিকে দশম হওয়া ঋতব্রত উচ্চ মাধ্যমিকে সপ্তম স্থানে জায়গা করে নিয়েছে। হুগলির কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্র ঋতব্রত দাস। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৪৯০। তাঁর মা শিক্ষিকা ও বাবা অবসরপ্রাপ্ত পঞ্চায়েত কর্মী।ঋতব্রত জানায়, 'ভবিষ্যতে ডাক্তার হতে চাই ইতিমধ্যেই NET এ পরীক্ষা দিয়েছি সেখানে ভালো ফল হয়েছে। আঁকা ও কুইজ তার ভালো লাগে। আমার এই সাফল্যে বাবা ও মা সবসময় সাহায্য করেছে। ক্লাস ওয়ান থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত মায়ের কাছেই বাংলা শিখেছি । পড়াশুনার কোনো বাধা ধরা সময় ছিল না। কখনো দু'ঘণ্টা আবার কখনও ১৬-১৭ ঘন্টা।' সপ্তম স্থানে জায়গা করে নিয়েছে আরামবাগ হাই স্কুলের ছাত্র মহম্মদ শহিদ। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৪৯০। শাহিদ জানায় , 'ছোট থেকেই পড়াশোনায় মেধাবী সে। গিটার শেখা তাঁর হবি। তার পাশাপাশি পড়াশোনাটা আমার কাছে নেশা। ডাক্তারি পড়ার ইচ্ছা রয়েছে ভবিষ্যতে। নুডলস আমার কাছে খুব প্রিয় খাবার।'৪৮৯ পেয়ে অষ্টম হয়েছে মাহেশ রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্র অস্মিত কুমার মুখোপাধ্যায়। পরীক্ষার কিছুদিন আগেই তাঁর বাবার মৃত্যু ঘটেছিল। সেই চোখ কাটিয়েই পরীক্ষায় বড় সাফল্য পায় অস্মিত । তাঁর ইচ্ছা আগামী দিনে সে শিক্ষক হতে চায়।সোমশুভ্র কর্মকার, আরামবাগ হাইস্কুলের ছাত্র। এবারে ৪৮৯ নম্বর পেয়ে অষ্টম স্থান অধিকার করেছে। বাড়ি আরামবাগের কোর্ট পারার ৪নং ওয়ার্ড এলাকায়। ভবিষ্যতে চিকিৎসক হতে চান তিনি। বাবা পেশায় একজন স্কুল শিক্ষক। তা থেকেই অনুপ্রেরণা। পাশাপাশি পড়াশোনা বাদেও ক্রিকেট খেলা ও গল্পের বই পড়তে পছন্দ করে সমশুভ্র।৪৮৮ নম্বর পেয়ে নবম স্থান অধিকার করেছে চন্দননগর চাউলপট্টির পৃথা দত্ত। চন্দননগর বঙ্গ বিদ্যালয় এর ছাত্রী পৃথা । বাবা-মা দুজনেই গৃহ শিক্ষক। পৃথা জানায়, 'নিয়মিত স্কুলে আসতাম এবং স্কুলের শিক্ষকরা যা পড়াতেন সেটা মন দিয়ে করতাম। সঙ্গে আট ঘন্টা পড়াশোনা করতাম তবে টেস্ট পরীক্ষার পর সেটা আরও বাড়তে থাকে। তিন জন শিক্ষকের কাছে পড়তাম আর বাকিটা মায়ের কাছেই পড়তাম। ভবিষ্যতে ভূগোল নিয়ে পড়াশোনা করতে চাই।'উচ্চ মাধ্যমিকের নবম স্থান অধিকার করে সকলকে চমকে দিয়েছে বৃষ্টি পাল। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৪৮৮। চুঁচুড়া বালিকা বাণী মন্দিরের ছাত্রী বৃষ্টি। মাধ্যমিকের ভালো ফল করার পর উচ্চমাধ্যমিকেও ভালো ফল করেছে বৃষ্টি। সে জানায়, 'বেশি আশা করিনি এতটা ভালো ফল হবে। NET দিয়েছি আশা করছি ভালো ফল হবে। পড়াশোনার জন্য কোনও নির্দিষ্ট সময় ছিল না। তবে কোনও দিন কোন বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করব সেটা ঠিক করে নিতাম।'৪৮৭ নম্বর পেয়ে দশম হয়েছে চন্দননগর কৃষ্ণ ভাবিনী নারী শিক্ষা মন্দির স্কুলের ছাত্রী সোহা ঘোষ। চতুর্থ স্থান পাওয়া স্নেহার যমজ বোন। সোহা বলেন, 'আমার বোন স্নেহার নাম শোনার পরেই খুব আনন্দ হচ্ছিল। তবে আমার নামটা বলবে এটা আমি ভাবতে পারিনি। আমারও ইচ্ছা ইকোনোমিক্স নিয়ে পড়াশোনা করা। পড়াশোনায় কোনো অসুবিধা হলে আমি বোনকে ও বোন আমাকে সাহায্য করত।'