সাগরে বিপর্যয়! স্বস্তির বৃষ্টির মধ্যে অস্বস্তির ভাঙন নদীবাঁধে...
২৪ ঘন্টা | ০৯ মে ২০২৪
নকীব উদ্দিন গাজী: সাগরে বাঁধ ভাঙন। স্বস্তির বৃষ্টির মধ্যেও নদী বাঁধের ভাঙন মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে সুন্দরবনের সাগরদ্বীপের বাসিন্দাদের। গতকাল, মঙ্গলবার গভীর রাতে ঝড়বৃষ্টিতে সাগরদ্বীপের মুড়িগঙ্গা ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের চকফুলডুবি গ্রামে হুগলি নদীর ৯০০ মিটার বেহাল বাঁধের মধ্যে ৪০০ মিটার বাঁধে ধস নামে। এই নদীবাঁধের ধসের কারণে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে এলাকার মানুষজন।
সকালেই ধস নেওয়া নদীবাঁধ পরিদর্শনে আসেন সাগর পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ আব্দুল সামির শাহ এবং মরিগঙ্গা ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান গোবিন্দ মণ্ডল। ধস নেওয়া নদীবাঁধের পাড়ে ভিড় জমায় গ্রামের মানুষজন। তাদের চোখে-মুখে বাঁধ ভাঙনের আতঙ্ক।সম্প্রতি আবহাওয়া নিয়েই সকলে চিন্তান্বিত ছিলেন। সকলেই জানতে চাইছিলেন, কী হবে? ঝড়-বৃষ্টি কি হবে? কতটা ঝড়-বৃষ্টি হবে? সোমবার ও মঙ্গলবার দুদিনই রাজ্যে জারি ছিল কমলা ও হলুদ সতর্কতা। কেন ঝড়বৃষ্টি শুরু হতে না হতেই এই অরেঞ্জ বা ইয়েলো অ্যালার্ট জারি?জানা গিয়েছিল, সোমবার বেলা ১২টার পরে এবং মঙ্গলবারে বিকেল চারটের পর থেকে ২-৩ ঘণ্টা ধরে ঝড় ও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হবে। প্রথমদিন ৬০ কিমি বেগে পরদিন ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা বেগে বইবে হাওয়া। এই অবস্থায় সকলে যেন নিরাপদে থাকে। বাজ পড়লে নিজেকে নিরাপদস্থানে আবদ্ধ রাখুন-- এই মর্মে সাধারণ মানুষকে পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া দফতর।আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, সমুদ্র উত্তাল থাকবে এবং সমুদ্র উপকূল ও সমুদ্রের মধ্যে ৫৫ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাবে। জলোচ্ছ্বাসের সতর্কতাও ছিল। বাংলার উপকূলে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করেছিল আবহাওয়া দফতর। কয়েকটি জেলায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে কালবৈশাখীর সম্ভাবনা ১১ জেলায়। রাজ্য জুড়েই বৃষ্টির পূর্বাভাস ছিল। উত্তরবঙ্গেও ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস। ইতিমধ্যেই কলকাতা-সহ বেশ কিছু জেলার তাপমাত্রা স্বাভাবিকের নীচে চলে গিয়েছে।দিনভর দফায়-দফায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হবে বলে জানানো হয়েছিল মঙ্গলবার। সঙ্গে থাকবে দমকা ঝড়। তিন জেলায় ছিল ভারী বৃষ্টির সতর্কতা-- পূর্ব মেদিনীপুর এবং উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা। মঙ্গলবার কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া, বীরভূম এবং উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হবে বলে জানানো হয়েছিল, সঙ্গে প্রতি ঘণ্টায় ৬০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইবে।শনিবার পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকবে। সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার দমকা ঝোড়ো হাওয়া। মোটামুটি সপ্তাহ জুড়েই বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আকাশ থাকবে মেঘলা। রবিবার থেকে বৃষ্টির পরিমাণ কমতে পারে। উত্তরবঙ্গের সব জেলাতেই বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি চলবে রবিবার পর্যন্ত। সপ্তাহভর বৃষ্টি চলবে। উত্তরবঙ্গের আট জেলাতেই বজ্রবিদ্যুৎ-সহ কয়েক পশলা বৃষ্টির সঙ্গে থাকবে দমকা ঝোড়ো হাওয়া। বিক্ষিপ্তভাবে দু এক জায়গায় হাওয়ার গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। গতকাল সকালের দিকে আংশিক মেঘলা আকাশ, পরে পুরোপুরি মেঘলা আকাশ। ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা ছিল তবে সেভাবে হয়নি। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনাও প্রবল ছিল। এভাবে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি চলবে শুক্রবার পর্যন্ত।