• Muslim Sharia Law : ধর্মের থেকে বিচ্ছেদ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা মুসলিম মহিলার, কেন এমন দাবি?
    এই সময় | ০৯ মে ২০২৪
  • আদালতে বিচ্ছেদের মামলা দায়ের এক মহিলার। তবে কোনও মানুষ নয়, নিজের ধর্মের থেকে বিচ্ছেদ চাইলেন কেরালার বাসিন্দা সাফিয়া পিএম। তাঁর দাবি, তাঁকে ইসলামে অবিশ্বাসী বলে ঘোষণা করুক সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু, কেন এমনটাই চাইছেন তিনি?মুসলিম পরিবারে জন্মসূত্রে তাঁর ধর্ম ইসলাম হলেও নিজে ধর্মীয় আচার পালন করেন না সাফিয়া পিএম। তবে ইসলাম ধর্ম পালন না করলেও ধর্মীয় আইন থেকে রেহাই মিলছে না তাঁর। মুসলিম ধর্মের আইনের গেঁরোয় পড়েছেন সাফিয়া পিএমের মেয়েও। মা মেয়েকে তাঁর উত্তরাধিকারী বলে মনে করলেও, শরিয়ত আইন অনুযায়ী, মায়ের যাবতীয় সম্পদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে মেয়ে। নিজের সন্তানের জন্যই এবার রুখে দাঁড়ালেন সাফিয়া পিএম। সরাসরি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে সন্তানের জন্য রক্ষাকবচ পেতে চাইলেন তিনি।

    কেরালার বাসিন্দা সফিয়া পিএম-এর দাবি, তাঁকে ইসলামে অবিশ্বাসী বলে ঘোষণা করুক দেশের শীর্ষ আদালত। যাতে আর কোনওভাবেই এই ধর্মের সূত্র ধরে তাঁর মেয়ের উত্তরাধিকারে কেউ ভাগ বসাতে না পারে, তার জন্য়ই এই আবেদন। যিনি ইসলাম ধর্ম ছাড়ছেন, তাঁর ক্ষেত্রে ১৯২৫ সালের ধর্মনিরপেক্ষ উত্তরাধিকার আইন মানা হবে, না কি ১৯৩৭ সালের মুসলিম পার্সোনাল ল মেনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, উসকে উঠল সে প্রশ্ন।

    লোকসভা ভোটের আগে যখন অভিন্ন দেওয়ানি বিধিকে হাতিয়ার করে লাগাতার প্রচার চালাচ্ছে BJP, সে সময় এই মামলা ফের শরিয়ত আইন বিতর্ককে উস্কে দিল বলেই মনে করা হচ্ছে। সফিয়া পিএম জানাচ্ছেন, একমাত্র সুপ্রিম কোর্টের ঘোষণাতেই এই সম্পত্তি সংক্রান্ত জট কাটতে পারে। নাহলে শরিয়তের নির্দেশ অনুযায়ী, জন্মসূত্রে মুসলিম বলে তাকে ওই ধর্মীয় আইনের আওতায় পড়তে হবে।

    যিনি ধর্মাচরণ করছেন না, তাঁরও আইনের হাত থেকে মুক্তি নেই। আর মুসলিম পার্সোনাল ল যে সমস্ত ক্ষেত্রে মেয়েদের প্রতি বৈষম্য জারি রাখে, সে কথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সফিয়া পিএম স্পষ্ট জানাচ্ছেন, মেয়েদের প্রতি এহেন বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গির জন্যই ইসলামের প্রতি আস্থা হারিয়েছিলেন তিনি। কোনও মহিলা তাঁর নিজের সম্পত্তি কাকে দেবেন, তা নির্বাচন করার অধিকার তাঁকে দিতে রাজি নয় শরিয়ত। এই নিয়েই সরব কেরালার এই মহিলা।

    শরিয়ত আইন অনুযায়ী, একজন মুসলিম মহিলা তাঁর পরিবারের এক-তৃতীয়াংশ সম্পত্তি পেতে পারেন। আর একমাত্র সন্তান হলে সেই ভাগ বেড়ে দাঁড়াবে অর্ধেক। বাকি অংশের উপর মালিকানা পরিবারের কোনও পুরুষ সদস্যের। এই নিয়ম অনুযায়ী, সাফিয়া পিএম-এর সম্পত্তির মাত্র অর্ধেক মিলবে তাঁর মেয়ের। আর বাকি অর্ধেকের উপর মালিকানা থাকবে সাফিয়া পিএম-এর ভাইয়ের। অথচ সফিয়া পিএম-এর বাবাও ইসলামে বিশ্বাস রাখেননি কোনওদিন। তা সত্ত্বেও সাফিয়া পিএম-এর ক্ষেত্রে সম্পত্তির ভাগ দেওয়ার সময় তাঁর বাবার নিজস্ব সিদ্ধান্ত খাটেনি, মানতে হয়েছে শরিয়ত আইনকেই। তবে মেয়ের বঞ্চনার সম্ভাবনা দেখা মাত্রই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন এই মহিলা। সরাসরি হেঁটেছেন আইনি পথে।
  • Link to this news (এই সময়)