তাঁর 'সুবোধ' হিসেবে সুনাম নেই। মাঝে মধ্যেই তাঁর বাক্যবাণ নিয়ে তুলকালাম চলে। কিন্তু, এবার পুলিশকে নিয়ে দেদার কটু কথার বর্ষণ করলেন দিলীপ ঘোষ! উঠে এল এক প্রাণী প্রসঙ্গও, যা সামনের মানুষের বাবা প্রসঙ্গ উত্থাপন করে তাঁকে নীচু করার জন্য ‘দুষ্টু লোক’-রা কটুবাক্য হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। দিলীপের মন্তব্য নিয়ে সরব হয়েছেন তৃণমূল নেতারা।বুধবারই তাঁর পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে তুমুল উত্তেজনা দেখা গিয়েছিল বর্ধমানে। পুলিশের তরফে জানানো হয়, এই পদযাত্রার জন্য প্রয়োজনীয় অনুমতি নেওয়া হয়নি। পুলিশের সঙ্গে দিলীপ ঘোষের ধস্তাধস্তিও শুরু হয়। এই ঘটনার পর শুধুমাত্র রাত্রিটুকুর অবকাশ। তারপরেই বর্ধমান থানার আইসি-র বিরুদ্ধে কটুবাক্যের ফোয়ারা ছোটালেন দিলীপ ঘোষ। তাঁর চেনা বাক্য বর্ষণে পুলিশের প্রতি 'হুমকি হুমকি' ভাবের গন্ধ পাচ্ছে অভিজ্ঞ মহল।
দিলীপ উবাচ...(কিছু অংশ পাঠকের প্রতি দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে বাদ দেওয়া হল)
হঠাৎ এক মহিলা কণ্ঠ, 'দাদা কাল তো রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি ছিল না, তাহলে পুলিশ কেন আটকাল?'
দিলীপ ঘোষ. 'বাতিলও করছে,আগের দিন রাতের বেলা। আপনি আর পরের দিন কিছুই করতে পারবেন না। আমি তো রোজ এসব ছেড়ে দিয়ে থানা, বিডিও,ডিএম ঘেরাও করব, আর কিছু করব না। শেষের দিকে ওর দম বন্ধ করে দেব। ....-দের ঘর থেকে বেরতে দেব না। কেমন চামচাগিরি করে দেখব।'
অপর কণ্ঠ- 'আইসি বলছে থানার পারমিশন নেই'।
আইসি কত বড় চামচা হয়েছে দেখছি, কী করে সারা জীবন চাকরি করেদিলীপ ঘোষ
ফুঁসে উঠে দিলীপের মন্তব্য, 'ওর বাপের জমিদারি নাকি! (এরপর পা ধুলো বালি থেকে ঢেকে রাখার পরিধান যোগ্য জিনিস দিয়ে কেরামতি দেখানোর জন্য বিশেষ শব্দ প্রয়োগ)। কাপড় খুলে দেব চৌরাস্তায় নিয়ে এসে। দিলীপ ঘোষ পাঁচ বছর এখানে থাকবে, ঘর থেকে বের হতে দেব না ওকে। লোক পাঠাও, তুমি নিজে যাও, দেবেন কিনা? চমকিয়ে কথা বল। পুলিশ কি ভদ্রলোক নাকি? ছোটলোকদের সঙ্গে যেভাবে কথা বলতে হয় পুলিশের সঙ্গে সেভাবে কথা বলবে। সব কটা তোলাবাজ,যত দাগি, পুলিশ সবচেয়ে বড় ক্রিমিনাল আজ পশ্চিমবাংলায়।'
দিলীপ উবাচে সংযোজন, 'নিজেরা কোনওদিন নিয়ম মানে না। আমি কেন নিয়ম মানব? দরকার পড়লে তুমি আজ থানায় যাও বা ফোন কর, দিলীপদা বলেছে আজ যা প্রোগ্রাম আছে তা দিলীপদা বাতিল করবে না। আপনারা কী করবেন ঠিক করুন। এই ভাষায় কথা বলতে শিখুন। আর আমি করব, পারলে আটকান।'
তিনি বলেন, ' বাড়িতে লিফলেট দিচ্ছে আর আই সি এসে জিজ্ঞেস করছে, পারমিশন নিয়েছেন? ... .... জমিদারি! তার পারমিশন নিতে হবে লোকের বাড়িতে গেলে। আমি বাজারে বেরিয়ে দোকানদারের সঙ্গে কথা বলবো তার পারমিশন নিতে হবে?'
এই BJP প্রার্থী আরও বলেন, 'আইসি কত বড় চামচা হয়েছে দেখছি, কী করে সারা জীবন চাকরি করে দেখি। আইসিকে রাস্তায় আটকাব লোক দিয়ে। রাস্তায় বেরোলেই ওকে আটকাব। গাড়ি থেকে বের করে ওর কাপড় খুলব। দিলীপ ঘোষকে ও চেনে না এখনও....। ভাবছে এক মাস দেড় মাস পরে দিলীপ ঘোষ চলে যাবে। দিলীপ ঘোষ পাঁচ বছর থাকবে। রাস্তায় জুতোপেটা করব। আমি ভদ্র আছি বলে ভাববে যা ইচ্ছে তাই করে নেবে। '
বর্ধমানের নীলপুর বটতলা এলাকায় বিজেপি কর্মী সমর্থকদের নিয়ে চা চক্র করেন দিলীপ ঘোষ। সেখানেই বর্ধমান থানার আইসি-কে নিয়ে এই মন্তব্য করেন দিলীপ ঘোষ।
দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘নির্বাচন এলেই অকথা, কুকথা বলে প্রচারে ভেসে থাকতে চান তিনি। আজ পুলিশের বিরুদ্ধে এই কথা বলেছেন। ভারতীয় আইন মোতাবেক কর্তব্যরত পুলিশ অফিসার বা থানার আইসি ওসির বিরুদ্ধে এসব কথা বলেন তাহলে গ্রেফতার করা উচিত। ভারতবর্ষ চলে আইনের শাসন। এই শব্দপ্রয়োগ কি ঠিক?’