• মেধা তালিকায় ১৩ নাম, কৃতিদের সাফল্যে গর্বিত হুগলি
    আজকাল | ০৯ মে ২০২৪
  • মিল্টন সেন,হুগলি: বুধবার উচ্চ মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ হয়। মেধা তালিকা অনুযায়ী জায়গা করে নিয়েছে হুগলির ১৩ জন। ৪৯৩ নম্বর পেয়ে মেয়েদের মধ্যে প্রথম স্থানে নাম রয়েছে চন্দননগর কৃষ্ণভাবিনি নারী শিক্ষা মন্দিরের ছাত্রী স্নেহা ঘোষ। একইসঙ্গে মধাতালিকা অনুযায়ী চতুর্থ স্থানে রয়েছে তার নাম। পাশাপাশি তার দিদি সোহা ঘোষের ও নাম রয়েছে মেধা তালিকায়। দুই বোন জমজ। স্নেহা সোহার থেকে এক মিনিটের ছোটো। এই বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৪৮৭ নম্বর পেয়ে সোহা রয়েছে দশম স্থানে। দুজনেই চন্দননগর কৃষ্ণ ভাবীনী নারি শিক্ষা মন্দির স্কুলের ছাত্রী। অর্থনীতি নিয়ে উচ্চশিক্ষা নিতে চায় দুই বোনই।দুই মেয়ের সাফল্যে চুঁচুড়ার গরবাটি ষষ্টিতলায় খুশির হাওয়া। বাবার নাম সঞ্জীব ঘোষ, পেশায় বেসরকারী সংস্থায় চাকরি করেন। মা অপর্না গৃহবধু। স্নেহা জানায়, প্রথমে সে এত ভাল রেজাল্টের কথা বিশ্বাস করতে পারেনি। পড়াশোনার জন্য তার কোনও নির্দিষ্ট বাঁধা ধরা সময় ছিল না। যতক্ষণ ভাল লাগতো ততক্ষণই পড়াশোনা করত। তবে সবথেকে তার প্রিয় বিষয় ছিল অঙ্ক, ভাল লাগত অঙ্ক করতে। টেস্টের আগেই সিলেবাস কমপ্লিট করার চেষ্টা করেছিল। আগামী দিনে ইকোনোমিক্স পড়াশোনা করতে চায় দুই বোন। এছাড়া ৪৯১ নম্বর পেয়ে উচ্চমাধ্যমিকে ষষ্ঠ হয়েছে রুদ্র মাহেশ রামকৃষ্ণ আশ্রম বিদ্যামন্দিরের ছাত্র, কোন্নগর ক্রাইফার রোডের রুদ্র দত্ত। এদিন রুদ্র জানায়, ভাল ফল হবে, সে বিষয়ে আশা ছিল। কিন্তু এতটা ভাল ফল হবে সে আশা করেনি। স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা এবং তার বাবা মা তাকে সব সময় সাহায্য করেছে। পড়াশোনা করে ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছা রয়েছে। পড়াশোনার জন্য নির্দিষ্ট কোনও সময় ছিল না, সময় পেলেই পড়াশোনা করত। তার প্রিয় বিষয় পদার্থ বিদ্যা। একইসঙ্গে ষষ্ঠ স্থানে জায়গা করে নিয়েছে হুগলির চুঁচুড়া গ্রীন পার্কের শুভ্র কিশোর ভট্টাচার্য। কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্র শুভ্রর প্রাপ্ত নম্বর ৪৯১। এদিন শুভ্র জানিয়েছে, আশা ছিল ভাল ফল হবে কিন্তু এতটা ভালো ফল হবে সেটা আশা করতে পারেনি। দিনে ১০ থেকে ১২ ঘন্টা পড়াশোনা করত। তবে নির্দিষ্ট কোনও সময় ছিল না। ভবিষ্যতে ডাক্তার হতে চায় শুভ্র। মাধ্যমিকে দশম হওয়া ঋতব্রত উচ্চ মাধ্যমিকে সপ্তম স্থানে জায়গা করে নিয়েছে। হুগলির কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্র ঋতব্রত দাস। তার প্রাপ্ত নম্বর ৪৯০। তার মা শিক্ষিকা ও বাবা অবসরপ্রাপ্ত পঞ্চায়েত কর্মী। এদিন ঋতব্রত জানিয়েছে, ভবিষ্যতে চিকিৎসক হতে চায় সে। ইতিমধ্যেই নেট পরীক্ষা দিয়ে, ভাল ফল হয়েছে। আঁকা ও কুইজ তার ভাল লাগে। তার এই সাফল্যে বাবা ও মা সবসময় সাহায্য করেছে। ক্লাস ওয়ান থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত মায়ের কাছেই বাংলা শিখেছে। পড়াশুনার ক্ষেত্রে তার কোনও বাধা ধরা সময় ছিল না। কখনও দু"ঘণ্টা আবার কখনও ১৬ থেকে ১৭ ঘন্টা পড়াশোনা করেছে। সপ্তম স্থানে জায়গা করে নিয়েছে আরামবাগ হাই স্কুলের ছাত্র মহম্মদ শহিদ। তার প্রাপ্ত নম্বর ৪৯০। শাহিদ জানিয়েছে, ছোট থেকেই তার পড়াশোনায় ঝোঁক ছিল। পাশাপাশি তার হবি গিটার শেখা। ডাক্তারি পড়ার ইচ্ছা রয়েছে ভবিষ্যতে। ৪৮৮ নম্বর পেয়ে নবম স্থান অধিকার করেছে চন্দননগর চাউলপট্টির পৃথা দত্ত। চন্দননগর বঙ্গ বিদ্যালয়ের ছাত্রী পৃথা। বাবা-মা দুজনেই গৃহ শিক্ষকতা করেন। পৃথা জানিয়েছে, নিয়মিত স্কুলে যাওয়া ছিল তার নেশা। একইসঙ্গে স্কুলের শিক্ষকরা যা পড়াতেন সেটা মন দিয়ে পড়তো সে। বাড়িতে আট ঘন্টা পড়াশোনা করতো। তবে টেস্ট পরীক্ষার পর সেই সময় আরও বেড়েছিল। তিন জন শিক্ষক ছিলো তার, আর বাকিটা মায়ের কাছে। ভবিষ্যতে ভূগোল নিয়ে পড়াশোনা করতে চায় পৃথা। উচ্চ মাধ্যমিকের নবম স্থান অধিকার করে সকলকে চমকে দিয়েছে চুঁচুড়া বালিকা বাণী মন্দিরের ছাত্রী বৃষ্টি পাল। তার প্রাপ্ত নম্বর ৪৮৮। মাধ্যমিকের ভাল ফল করার পর উচ্চমাধ্যমিকেও ভাল ফল করেছে সে। এদিন বৃষ্টি জানায়, এতটা ভাল ফল সে আসা করেনি। নিট দিয়েছে,আশা করছে ভাল ফল হবে। পড়াশোনার জন্য কোনও নির্দিষ্ট সময় ছিল না। তবে বিষয় অনুযায়ী অধ্যয়ন করার নির্দিষ্ট দিন ছিলো তার। দশম স্থানে চন্দননগর কৃষ্ণ ভাবিনী নারী শিক্ষা মন্দির স্কুলের ছাত্রী শোহা ঘোষ। তার ইচ্ছা ইকোনোমিক্স নিয়ে পড়াশোনা করার। ৪৮৯ পেয়ে মেধা তালিকার অষ্টম স্থানে মাহেশ রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্র অস্মিত কুমার মুখার্জি। পরীক্ষার কিছুদিন আগেই তার বাবার মৃত্যু হয়। সেই আঘাত কাটিয়ে পরীক্ষায় বড় সাফল্য অস্মিতের। আগামী দিনে সে শিক্ষক হতে চায়।
  • Link to this news (আজকাল)