পাসপোর্ট রিনিউয়াল: হাইকোর্ট বলল, কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নেবে
এই সময় | ০৯ মে ২০২৪
এই সময়: ফৌজদারি মামলায় কেউ অভিযুক্ত হলে তাঁর পাসপোর্ট কত দিনের জন্য রিনিউ করা হবে, সেই ব্যাপারে একটি রায় দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। ওই রায়কে আইনজ্ঞদের অনেকে ‘নজিরবিহীন’ বলে অভিহিত করেছেন। গত সোমবার বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের বেঞ্চের নির্দেশ— কোনও ফৌজদারি আদালতের নির্দিষ্ট কোনও নির্দেশ না-থাকলে ক্রিমিনাল কেসে অভিযুক্তদের ক্ষেত্রে কত দিনের জন্য পাসপোর্ট রিনিউ করা হবে, সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্রীয় সরকারই। হাইকোর্ট এই নির্দেশ দিয়ে বিদেশ মন্ত্রকের ১৯৯৩ সালের জারি করা বিজ্ঞপ্তি বাতিল করার আবেদন খারিজ করে দেয়। কেন্দ্রীয় সরকারের কৌঁসুলিদের দাবি, দেশে এই প্রথম এই বিষয়ে দায়ের হওয়া মামলায় এই প্রথম রায় দিলো কোনও আদালত।সাধারণ ভাবে ভারতে ১০ বছর অন্তর পাসপোর্ট রিনিউ করা হয়। সারা দেশে বিভিন্ন ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্তদের পাসপোর্ট রিনিউয়ের ক্ষেত্রে ১৯৯৩ সালের ২৫ অগস্ট একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে বিদেশ মন্ত্রক। সেই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্তদের পাসপোর্ট রিনিউয়ালের জন্য তাঁদের ফৌজদারি আদালতে আবেদন করতে হবে। ওই আদালত যদি কোনও সময় বেধে দেয়, তা হলে সেই সময় পর্যন্ত পাসপোর্ট রিনিউ করা হবে। আর যদি আদালত সময় না-বেধে দেয়, তা হলে এক বছর পর্যন্ত পাসপোর্ট রিনিউ করা হবে।
বাংলায় সম্প্রতি কয়লা, গরু পাচার এবং কিছু আর্থিক দুর্নীতি-সহ বহু ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্তরা এই নিয়ে বিদেশ মন্ত্রকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে ১৯৯৩ সালের ওই বিজ্ঞপ্তি চ্যালেঞ্জ করে একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলাকারীর আইনজীবীর অভিযোগ, তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অথচ সেই জন্য তাঁর বিদেশে যাওয়া-আসার মতো মৌলিক অধিকার বজায় থাকছে না।
বিদেশ মন্ত্রকের ‘অন্যায্য বিজ্ঞপ্তি’ নাগরিকের অধিকার খর্ব করছে বলে অভিযোগ। বিদেশ মন্ত্রকের কৌঁসুলি কুমারজ্যোতি তেওয়ারি জানান, যে সব ক্ষেত্রে নিম্ন আদালত সময় বেধে দিয়েছে, সে সব ক্ষেত্রে বিদেশ মন্ত্রক সেই সময় পর্যন্তই পাসোপর্ট রিনিউ করে দিয়েছে। কিন্তু যেখানে নিম্ন আদালত রিনিউয়ালের অনুমতি দিলেও সময় নির্দিষ্ট করে দেয়নি, সেখানে এক বছর পর্যন্ত রিনিউ করা হচ্ছে।
দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য বিদেশ মন্ত্রকের ওই বিজ্ঞপ্তি খারিজের আবেদন খারিজ করে দেন। হাইকোর্টের নির্দেশ, ফৌজদারি আদালত সময় বেধে না দিলে কোন ব্যক্তির ক্ষেত্রে কত দিনের জন্য পাসপোর্ট রিনিউ করা হবে, সেটা কেন্দ্রীয় সরকারের একেবারে নিজস্ব সিদ্ধান্ত।