ভাঙল ৮ বছরের প্রথা, লোকাল ট্রেনে পালন হল না রবীন্দ্র জয়ন্তী
এই সময় | ১০ মে ২০২৪
ভাঙল ট্রেনে মহিলাদের রবীন্দ্রজয়ন্তী পালনের আট বছরের প্রথা। ট্রেনের রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন করতে গিয়ে আরপিএফ-এর বাধার মুখে পড়লেন বনগাঁ শাখার মহিলা যাত্রীরা। বাধা পেয়ে ট্রেন থেকে নেমে স্টেশনেই হল রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন।জানা যায়, প্রতি বছরের মতো এই দিনটিতে ৮:৫৫ হাবড়া লোকালে মহিলা যাত্রীরা রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন করার জন্য উদ্যোগ নেন। এই বছরও সব ঠিকঠাক চলছিল। ট্রেনের কামরায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি রেখে মালা পরিয়ে সাজানো হয়েছিল কামরা। হঠাৎ হাবড়া স্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত আরপিএফ আধিকারিক ট্রেনের বগিতে উঠে জানতে চান রবীন্দ্রজয়ন্তী করার মতো অনুমতি রয়েছে কিনা যাত্রীদের কাছে। মহিলা যাত্রীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সমস্ত দফতরে মেল করা হয় এবং মৌখিক অনুমতি নিয়েই গত আট বছর ধরে এই ট্রেনে রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন হয়ে আসছে। এই রবীন্দ্রজয়ন্তী পালনে আলাদাভাবে লিখিত কোনও অনুমতির প্রয়োজন রয়েছে বলেও মনে করেন না তাঁরা, দাবি করা হয় যাত্রীদের পক্ষ থেকে।
তাঁদের যুক্তি ছিল, ট্রেনের মধ্যে নিজেরাই নাচ, গান, কবিতার মধ্য দিয়ে এই অনুষ্ঠান পালন করে থাকেন। দীর্ঘ চলার পথে ট্রেনের কামরায় এই অনুষ্ঠান দেখেই অভ্যস্ত শিয়ালদা বনগাঁ শাখার যাত্রীরা। কিন্তু, এই দিন আরপিএফ এর তরফে রবীন্দ্রজয়ন্তীতে বাধা দেওয়ায় রেল প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন যাত্রীরা। তাঁদের কথায়, 'ট্রেনের কামরায় যদি রবীন্দ্র সংগীত নিয়ে চর্চা চলে তাতে কার কী বলার থাকতে পারে! অধিকাংশ সময়ই সকলেই তা ভালোভাবেই গ্রহণ করেন। এই প্রথম বছর নয়, এর আগেও বছরের পর বছর ধরে তা চলে আসছে। ফলে এই বছর বাধা কেন দেওয়া হল তা বুঝতে পারছি না।'
বিষয়টি নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে কিছুটা উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ও চলে আরপিএফ-এর। অবশেষে, ট্রেনের কামরা থেকে হাবড়া স্টেশনে নেমে যাত্রীরা সকলে মিলে পালন করে রবীন্দ্রজয়ন্তী। ট্রেনে রবীন্দ্রজয়ন্তী পালনে এমন অভিজ্ঞতার শিকার হতে হবে, তা যেন এখনও মেনে নিতে পারছেন না বনগাঁ শাখার সংস্কৃতিপ্রেমী যাত্রীরা।
যদিও তাঁদের কাছে যে লিখিত কোনও অনুমতি ছিল না, তা স্পষ্ট জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা। তাঁদের কথায়, ‘বিষয়টি জানিয়ে মৌখিক অনুমতি নিয়েই এতদিন এই উদ্যোগ আমরা পালন করে আসছি। তাই আলাদা করে অনুমতি নেওয়ার কথা মনে হয়নি।’
এই প্রসঙ্গে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক বলেন, 'আমি বিষয়টি প্রসঙ্গে অবগত নই। তবে অনেক সময় হতে পারে ট্রেনে অসুস্থরা যাতায়াত করেন এবং এক্ষেত্রে তাঁদের সমস্যা হতে পারে। সেই দিকগুলির কথা ভেবেই হয়তো আরপিএফ বাধা দিয়েছে।'