সন্দেশখালির ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পর হেনস্থার শিকার রেখা পাত্র?
এই সময় | ১০ মে ২০২৪
ফের একবার শিরোনামে উঠে এসেছে সন্দেশখালি। গত কয়েকমাস ধরেই রাজ্য রাজনীতি ঘুরপাক খাচ্ছে সন্দেশখালিতে ঘটে চলা একের পর এক ঘটনা। সেই তালিকায় নয়া সংযোজন একটি স্টিং অপারেশনের ভিডিয়ো। সেই ভিডিয়োর সত্যতা অবশ্য যাচাই করেনি এই সময় ডিজিটাল। সত্যতা যাচাই না হওয়া সেই ভিডিয়োতে বিজেপির এক স্থানীয় নেতা গঙ্গাধর কয়ালকে বলতে শোনা যাচ্ছে যে টাকার বদলে যৌন নির্যাতনের মিথ্যে অভিযোগ তুলেছেন সেখানকার মহিলারা।সেই সূত্র ধরেই এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো ব্যাপক ভাইরাল হয়। যে ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্রকে হেনস্থা করছেন কিছু মানুষ। শেষে কোনওরকমে রেখা সেই জায়গা থেকে বেরিয়ে আসেন। বেরনোর সময় সংবাদ মাধ্যম ও স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথাও বলেন রেখা। ভিডিয়োটি শেয়ার করে দাবি করা হয় যে, সন্দেশখালির স্টিং অপারেশনকাণ্ড সামনে আসার পর এলাকাবাসীরাই রেখা পাত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন। ভিডিও-র ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, 'সন্দেশখালির ২০০০ টাকার নায়িকা রেখা পাত্রকে পালিশ করে পিঠে খাওয়াচ্ছে সন্দেশখালির বাসিন্দারা।' অর্থাৎ ভিডয়োতে এটাই বোঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছে যে স্টিং অপারেশনের বিষয়টি সামনে আসার পর রেখাকে এভাবেই আক্রমণ করেছেন সন্দেশখালির বাসিন্দারা।
বিষয়টি নজরে আসার পর আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, সেই ভিডিয়োটি স্টিং অপারেশন প্রকাশ্যে আসার ৫ দিন আগের, এবং ভিডিয়োটি সন্দেশখালি থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূর কটি গ্রামের।
কী ভাবে জানা গেল সত্যিটাএই বিষয়ে কিওয়ার্ড সার্চ করে আজতক একাধিক সংবাদমাধ্যমে ভিডিয়োটি পায়। যেমন, একটি সংবাদমাধ্যমের ইউটিউব চ্যানেলে গত ৩০ এপ্রিল এই ঘটনার ভিডিয়োটি আপলোড করা হয়েছিল। সেই ভিডিয়োতে লেখা হয়, বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী যখন প্রচার করতে খড়িডাঙা পৌঁছন, তখন তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন মহিলারা। এখানে লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, ঘটনাটি সন্দেশখালির হলে সেখানে সেটাই লেখা থাকত। কিন্তু এখানে জায়গার নাম লেখা খড়িডাঙা। এছাড়া আরও একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনেও প্রায় একই তথ্য প্রকাশ করা হয়।
এদিকে গুগল ম্যাপের সাহায্য নিয়ে আজতক জানতে পারে যে এই খড়িডাঙা গ্রামটি সন্দেশখালি থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। অর্থাৎ, এই ঘটনার সঙ্গে যে সন্দেশখালির বাসিন্দাদের সম্পর্ক থাকা সম্ভব নয় তা বলতে গেলে পরিষ্কার। এছাড়া এই ঘটনাটি ঘটে গত ৩০ এপ্রিল। আর সন্দেশখালিকাণ্ডে ভাইরাল স্টিং অপারেশনের বিষয়টি সাংবাদিক বৈঠক করে গত ৪ মে প্রকাশ্যে আনা হয়েছে তৃণমূলের পক্ষ থেকে।
ফলে এর থেকে এটা পরিষ্কার হয়ে যায় যে, উক্ত ঘটনাটি কোনওভাবেই সন্দেশখালির নয় এবং তার সঙ্গে স্টিং অপারেশনের কোনও সম্পর্ক নেই। আর বিভ্রান্তিকর সেই দাবিটিই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।
(This story was originally published by Aajtak and republished by Ei Samay Digital as part of the Shakti Collective)